চকরিয়ার মাতামুহুরী নদীর বাঘগুজারা রাবার ড্যাম সচল 

chakaria-pic-1-deam-31-12

চকরিয়া প্রতিনিধি:

অকার্যকর হয়ে পড়া দেশের বৃহত্তর কক্সবাজারের চকরিয়ার মাতামুহুরী নদীর বাঘগুজারা পয়েন্টের রাবার ড্যামটি (বাঁধ-ব্যারাজ) সচল করার কাজ শুরু করা হয়েছে। শুক্রবার জুমার নামাজের পর মোনাজাতের মাধ্যমে অকার্যকর হওয়া ড্যামটি সচল কাজের উদ্বোধন করা হয়। এ সময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চকরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান জাফর আলম মোনাজাতের মাধ্যমে এ কাজের উদ্বোধন করেন।

বালু উত্তোলনের কারণে ড্যামের রাবারের তলদেশ থেকে মাটি সরে যাওয়ায় ২৩৩ দশমিক ৫০ মিটার দীর্ঘ বৃহত্তম এ ড্যামের চার স্প্যানের এক পয়েন্টের ফুলানো রাবার দেবে গিয়ে ১৮ ডিসেম্বর ভোর থেকে আটকানো মিঠা পানি ভাটির দিকে নেমে যেতে শুরু করে। অপরদিকে ওই পয়েন্ট দিয়ে সামুদ্রিক জোয়ারের সময় নদীতে ঢুকে পড়ছিল সামুদ্রিক লবণাক্ত পানি। এ অবস্থায় চলতি শুষ্ক মৌসুমে চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলার প্রায় ৪০ হাজার একর জমির ইরি-বোরো চাষাবাদ নিয়ে আতঙ্কে ছিলেন কৃষকরা।

বাঘগুজারা রাবার ড্যামের কেয়ারটেকার আবদুর রহিম বলেন, ‘প্রায় দেড়মাস আগে ড্যামের চার স্প্যানের রাবার ফুলিয়ে মিঠাপানি আটকানো শুরু হয়। কিন্তু ১৮ ডিসেম্বর ভোর থেকে চার স্প্যানের মধ্যে এক পয়েন্টের ফুলানো রাবার দেবে গিয়ে ধরে রাখা মিঠা পানি নেমে যেতে শুরু করে। তাৎক্ষণিক বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ডের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জাফর আলম ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাহেদুল ইসলামকে অবহিত করি।’

প্রশ্নোত্তরে ড্যাম তদারক আবদুর রহিম বলেন, ‘ড্যামটির একেবারে কাছ থেকে শ্যালো মেশিন বসিয়ে পাইপের মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে বালু উত্তোলন করেছেন একটি প্রভাবশালী চক্র। এ কারণে ড্যামের রাবারের তলদেশ থেকে মাটি সরে গিয়ে ফুলানো রাবার দেবে যায়। এতে ড্যামটির এ সর্বনাশ ঘটে।’

পেকুয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শাফায়েত আজিজ চৌধুরী রাজু বলেন, ‘বাঘগুজারা রাবার ড্যামের ধরে রাখা মাতামুহুরী নদীর মিঠাপানি ব্যবহার করে পেকুয়ার সাতটি ইউনিয়নের কৃষকরা শুষ্ক মৌসুমে ইরি-বোরো চাষাবাদ করে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হয়। এ অবস্থায় ড্যামটি অকার্যকর হয়ে পড়ায় কৃষকের মাথায় হাত উঠেছিল। তবে ইতিমধ্যে ড্যামটি সচল করার কাজ শুরু হওয়ায় কৃষকেরা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন।’

পাউবো জানায়, প্রায় ৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে নদীর পালাকাটা-রামপুর ও বাঘগুজারা পয়েন্টে দুটি রাবার ড্যামের নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে। পারিশা অ্যান্ড কোম্পানি এবং ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং নামের দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ড্যাম দুটির নির্মাণ কাজ শেষ করলে ২০১২ সালে উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনের পর থেকে এ পর্যন্ত বালু উত্তোলনসহ নানা কারণে বেশ কয়েকবার অকার্যকর হয়।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন