চকরিয়ার নলবিলা বনবিটে শতবর্ষী মাদারট্রি কেটে লুটের মহোৎসব 

চকরিয়া প্রতিনিধি:

কক্সবাজারের চকরিয়ায় শতবর্ষী মাদার গর্জন গাছ কেটে লুটের মহোৎসব চলছে। ঘটনাটি ঘটেছে ২৯জুলা্ই দিবাগত রাত ১২টার দিকে চকরিয়ার নলবিলা বনবিটের ইসলামনগর এলাকায়।

স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের ফাসিয়াখালী রেঞ্জের চকরিয়া উপজেলার নলবিলা বনবিটের আওতাধীন ইসলামনগর এলাকায় গত ১মাসে শতবর্ষী প্রায় ৬/৭টি মাদারট্রি গর্জন কেটে লুটের অভিযোগ উঠেছে। এমনকি মাদারট্রি লুটকারীদের সহযোগীতা দিয়ে যাচ্ছে খোদ বিটকর্মকর্তাসহ বনপ্রহরীরা।

যার কারণে বনের সৌন্দর্য্য এসব মাদারট্রি প্রায় বিলুপ্তির পথে। বনের মাদারট্রি লুটে নেতৃত্ব দিচ্ছেন লক্ষ্যারচর ছিকলঘাট এলাকার জনৈক ওসমান আলী ওরফে দাদা ওসমান নামে এক ব্যক্তি।

জানাগেছে, ২৯জুলাই দিবাগত রাতে নলবিলা বিটের ইসলামনগর গ্রামের আকবর আহমদের পুত্র মো. ইমরান ড্রাইভারের বাড়ির ওঠান থেকে বনবিটের প্রহরী নুরুল আলম ও প্রহরী তপনের সহযোগিতায় বনখেকোরা ৫০ ফুট লম্বা ও ৮ ফুট বেড় সাইজের একটি শতবর্ষী মাদারট্রি গর্জন কেটে পাচার করেছে।

একইভাবে গত সপ্তাহে নলবিলা বিটের বারআউলিয়ানগর এলাকা থেকে লক্ষ্যারচরের চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা কাইছারের বাগান থেকে ২ টি মাদারট্রি কেটে লুটের সময় বিট কর্মকর্তা আকরাম আলীর নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে ১টি মাদারটি জব্দ করে।

এর আগের সপ্তাহে নলবিলা বিটের আওতাভূক্ত বদিউল আলমের বাড়ির ওঠান থেকে ৮/১০ফুট বেড় এর একটি মাদারট্রি কেটে লুটের চেষ্টা করে ব্যর্থ হওয়ায় বর্তমানে ওই মাদারট্রি পতিত অবস্থায় রয়েছে।বনকর্মকর্তা আকরাম আলী ওই মাদারট্রি গোপনে বিক্রি করতে পাচারকারীদের সাথে আলোচনাও করেছেন।

এভাবে গত ১মাসে অন্তত ৬/৭টি মাদারটি কর্তন করা হয়েছে। নলবিলা বনবিট কর্মকর্তাসহ বনপ্রহরীদের যোগসাজসে বেশ কয়েকটি গাছের গোঁড়া উপড়ে ফেলা হয়েছে।

কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের ফুলছড়ি ও সদরের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) বেলায়েত হোসেন বলেন, বিষয়টি অবগত হওয়ার পর ফাসিয়াখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা আবদুল মতিনকে ২৯জুলাই রাত ৯টার দিকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের নবাগত বিভাগীয় কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. মাহবুব মোর্শেদ জানান, যতটুকু শুনেছি নলবিলা বনবিটের ইসলামনগর এলাকা থেকে কর্তনকৃত মাদারট্রি জব্দ করা হয়েছে। কর্তনকৃত অবশিষ্ট মাদারট্রি সমূহের বিষয়ে খোজখবর নিয়ে সংশ্লিষ্টদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে। যত বড় ক্ষমতাধরই হোকনা কেন, অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এপ্রসঙ্গে বনবিভাগের চট্টগ্রাম বিভাগীয় বনকর্মকর্তা (সিএফ) জগলুল হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি মুঠোফোনে বলেন, বনাঞ্চল রক্ষায় আমরা প্রজাতন্ত্রের কর্তা হিসেবে কাজ করছি। তাই শতবর্ষী মাদারট্রি কর্তনে যারাই হাত দেবে, তাদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবেনা। চকরিয়ার নলবিলা ইসলাম নগর বনঞ্চলের বিষয়টি অধিক গুরুত্বসহকারে দেখে প্রয়োজনীয় আইনী ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কক্সবাজারের বিভাগীয় বনকর্মকর্তা (ডিএফও) কে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন