গুইমারা সেজেছে নববধূর সাজে
গুইমারা প্রতিনিধি:
গুইমারা সেজেছে নববধূর সাজে। ঐতিহ্যবাহী উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রথম বারের মত পুনর্মিলনী উৎসবকে ঘিরে গুইমারা উপজেলায় এখন উৎসবের আমেজে সাজ সাজ রব বিরাজ করছে। তাই গুইমারাকে পোস্টার, ব্যানার, আর অতিথির আগমনের উপলক্ষ করে মেইন মেইন সড়কের বেশ কয়েক স্থানে গেইট তৈরি করে সাজানো হয়েছে। সাজের এই আয়োজন যেন নব বধূর সাজ ।
বিদ্যালয়ের বেশ কিছু সাবেক শিক্ষার্থী জানান, কালই তাদের প্রিয় বিদ্যালয়ে দেখা হবে সেই ছাত্র জীবনের হাসি মাখা বন্ধুদের সাথে । এ যেন অধির আগ্রহের অপেক্ষা। দেশের বাইরে অবস্থান করা বিদ্যালয়ের কিছু ছাত্র যারা আগে চলে এসেছেন তারা আয়োজক কমিটির সাথে মিলে মিশে প্রস্তুতির কাজে অংশ গ্রহণ করছেন। পাহাড়ের প্রাচীন এই বিদ্যালয়ের ১ম পূর্ণমিলনী উৎসবকে সম্প্রীতির উৎসবে পরিনত হতে যাচ্ছে কাল।
আগামীকাল শুক্রবার(২৬ জানুয়ারি) প্রথম বারের মত বিশাল আয়োজনকে ঘিরে নানা রঙে সাজানো হয়েছে ঐতিহ্যবাহী এই বিদ্যাপীঠকে।
বেশ জাঁকজমক আয়োজনের মধ্য দিয়ে পুনর্মিলনী উৎসবের আয়োজন প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রী পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান/১৮ উদযাপন কমিটি।
গুইমারা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং।
আর এসময়ে বিশেষ অতিথি হিসেবে থাকবেন, ভারত প্রত্যাগত শরনার্থী বিষয়ক টাস্কফোর্স চেয়ারম্যান ও খাগড়াছড়ির সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, গুইমারা রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ কামরুজ্জামান এনডিসি পিএস সি জি, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ নানা শ্রেণি পেশার মানুষ এ আয়োজনে অংশ নেবেন বলে জানা গেছে।
বর্ণিল আয়োজনের মধ্যে রয়েছে বর্ণাঢ্য আনন্দ র্যালিসহ নানা আয়োজন। শুক্রবার সকাল ৭টা ৩০ মিনিটে স্মারক গ্রহণ দিয়ে শুরু হবে দিনের প্রথম আয়োজন। দেশবরেণ্য শিল্পীদের মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে রাত ১১টায় অনুষ্ঠানের সমাপ্তির কথা রয়েছে।
এ আয়োজনে নানা সম্প্রদায়ের নানা বয়সের মানুষ রঙ বিরঙের সাজে অংশ গ্রহণ করবে বলে জানান আয়োজক কমিটি। এছাড়াও নানা ব্যাচের শিক্ষার্থীরা আলাদা আলাদা ব্যানারে অংশ গ্রহণ করবে।
পুনর্মিলনী উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক গুইমারা ইউপি চেয়ারম্যান মেমং মারমা জানান, ১৯৬৩ সালে প্রতিষ্ঠিত গুইমারার এই ঐতিহ্যবাহী বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের পুনর্মিলনী উদযাপনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। এ পুনর্মিলনীতে দল, মত নির্বিশেষে সকল সম্প্রদায়ের মানুষ অংশ গ্রহণের মাধ্যমে এই উৎসবকে সফল করবে বলে তিনি আশা করেন। তাই সকলে মিলেমিশে পুনর্মিলনীকে সফল ও সার্থক করতে তিনি সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
দিনব্যাপী আয়োজন মালায় রয়েছে-সাড়ে ৮টায় গণ জমায়েত, জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও শুভ উদ্বোধন, সাড়ে ৯টায় বর্ণাঢ্য আনন্দ র্যালি, সাড়ে ১০টায় আমন্ত্রিত অতিথিদের আসন গ্রহণ, বরণ ও স্মারক প্রদান, ১০টা ৪৫ মিনিটে প্রয়াতদের স্মরণে নিরবতা, থিত সং ও সম্প্রীতি নৃত্য পরিবেশনা, ১১টায় ১৫ মিনিটে স্মরনিকার মোড়ক উম্মোচন, ১১টা ২৫ মিনিটে প্রধান অতিথির উদ্দেশ্যে মানপত্র পাঠ, ১১টা ৪০ মিনিটে আলোচনা সভা ও সম্মাননা প্রদান, দুপুর সাড়ে ১২টায় নামায ও মধ্যাহ্ন ভোজের বিরতি ও দুপুর আড়াইটায় স্মৃতি চারণ, বিকেল ৪টায় র্যাফেল ড্র, পুরস্কার বিতরণ ও আলোচনা সভা, বিকেল সাড়ে ৫টায় ফানুস উত্তেলন ও আতশবাজী প্রজ্জ্বলন ও সন্ধ্যা ৬টা থেকে স্থানীয় ও দেশবরেণ্য শিল্পীদের মনোজ্ঞ মঞ্চ কাপানো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।