গুইমারায় সেচ্ছাসেবক লীগ নেতার রহস্যজনক মৃত্যু

গুইমারা প্রতিনিধি:

খাগড়াছড়ির গুইমারা উপজেলার ডাক্তারটিলা এলাকায় বিষপানে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। সে উপজেলা সেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সম্পাদক বলে জানা গেছে। তবে এটি হত্যা না আত্মহত্যা এ  নিয়ে চলছে না গুঞ্জণ। এ ঘটনায় এলাকা জুড়ে ধুম্রজাল তৈরী হয়েছে।

শনিবার(১৩ অক্টোবর) রাত ১০টায়  এ ঘটনা ঘটে। যুবকের নাম  উচাইরী মারমা (৩৫)। তার পিতার নাম মংপুইসে মারমা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সম্প্রতি একই এলাকার প্রবাসী ইঞ্জিনিয়ার মো. জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রীর সাথে অবৈধ সম্পর্ককে কেন্দ্র করে একই এলাকার শ্যামপ্রসাদ বনিকের সাথে মৃত উচাইরি মার্মা সহ সুভাষ ও মাঝহারুলের বাকবিতণ্ডা হয়। এ বিষয়ে তিনজনই বাদী হয়ে গুইমারা সদর ইউনিয়ন পরিষদে শ্যাম প্রসাদের নামে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ সূত্রে জানা যায় দীর্ঘদিন ধরে শ্যামপ্রসাদ ও প্রবাসী জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রীর মধ্যে পরকিয়া চলছিল।

মুসলিম মেয়ে হিন্দু ছেলের অপকর্ম নিয়ে সমাজে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হলে উচাইরি মার্মা সুভাসসহ স্থানীয় লোকেরা তাদেরকে প্রাথমিক ভাবে সতর্ক করেন।

বৃহস্পতিবার(১১ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে শ্যামপ্রসাদ বনিক জাহাঙ্গীরের স্ত্রীর ঘরে ডুকলে স্থানীয়রা বিষয়টি টের পেয়ে উচাইরিকে খবর দেয়। তাৎক্ষনিক উচাইরি, মাঝহারুল সুভাসসহ শ্যামপ্রসাদকে মহিলার ঘরে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে সময় সে দৌড়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত তিন দিন ধরে শ্যাম প্রসাদ উচাইরিকে নানান হুমকি ধমকি দিয়ে আসছিলো বলে অভিযোগ সূত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার(১৩ অক্টোবর) দিবাগত রাত ১০ টার দিকে উচাইরীসহ অজ্ঞাত আরো তিনজন মিলে পাহাড়ের চোলায় মদ পান করে, এরপর বাকী দুইজন চলে যায়। এর ঘন্টা খানেক পরে সে বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে বমি করে। এ সময় স্থানীয় লোকজন তাকে মাটিরাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে চট্রগ্রাম নিয়ে যাওয়ার সময়ে নাজিরহাট এলাকায় তার মৃত্যু হয়।

এদিকে যাকে নিয়ে ঘটনার সূত্রপাত, প্রবাসী জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রীর নিকট বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি উল্টো মৃত উচাইরি মার্মা ও সুভাষ সহ মাঝহারুলকে দোষারোপ করে বলেন, এ ধরনের কোনো ঘটনা সেদিন ঘটেনি। বরং সুভাষ, মাঝহারুল ও উচাইরি তাকে রাতের বেলায় বিরক্ত করতো বলে অভিযোগ করেন।

অন্যদিকে ঘটনার পর থেকে শ্যামপ্রসাদ বনিক গা ডাকা দিয়েছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছে। মোবাইল ফোনে শত চেষ্টা করেও তার সাথে কোনো প্রকার যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে গুইমারা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. গিয়াস উদ্দিন জানান, নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য খাগড়াছড়ি আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। তবে এটি কি হত্যা না আত্মহত্যা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান তদন্ত চলছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন