গুইমারায় সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে উন্নয়নের পক্ষে ভোটাররা

03.03.2017_Guimara Upazila Election NEWS Pic

নিজস্ব প্রতিবেদক, মাটিরাঙ্গা :

গুইমারা উপজেলা পরিষদের প্রথম নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘনিয়ে আসার সাথে সাথেই পাল্টে যেতে শুরু করেছে ভোটের মাঠের চিত্র। শেষ মুহুর্তে এসে যোগ্য প্রার্থীকে নির্বাচিত করতে একাট্টা হতে শুরু করেছে গুইমারার সাধারণ ভোটাররা। নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণার শুরু থেকেই গুইমারার দুর্গম পাহাড়ী জনপদে একটি বিশেষ আঞ্চলিক সংগঠনের অব্যাহত সন্ত্রাসী কর্মকান্ড আর চাঁদাবাজির কারণেই সাধারণ ভোটাররা একাট্টা হতে বাধ্য হয়েছে বলে মনে করছেন সচেতন মহল। সম্প্রতি গুইমারার হাফছড়ি ও সিন্ধুকছড়ির দুর্গম জনপদ ঘুরে এ বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।

জানা গেছে, নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণার শুরু থেকেই পাহাড়ের আঞ্চলিক সংগঠন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট-ইউপিডিএফ ভোটারদের জিম্মি করে রেখেছিল। দুর্গম পাহাড়ী পল্লীতে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে প্রচার-প্রচারণায় বাধা প্রদানের অভিযোগ ছিল। জনগণকে বিশেষ দলটির সমর্থিত প্রার্থী উশেপ্রু মারমার (আনারস প্রতীক) পক্ষে টানতে অব্যাহতভাবে চেষ্টা করা হয়। সে চেষ্টার অংশ হিসেবে কোণঠাসা করে রাখা হয় স্থানীয় আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদেরও। পার্বত্যনিউজে ‘গুইমারা উপজেলা নির্বাচন : সিন্ধুকছড়িতে কোণঠাসা আওয়ামীলীগ’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর জেলা ও বিভিন্ন উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ সিন্ধুকছড়ির বিভিন্ন দুর্গম জনপদে নৌকার পক্ষে প্রচার-প্রচারণায় অংশ নেন।

সেখানেও আঞ্চলিক সংগঠন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট-ইউপিডিএফের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পাড়া কার্বারী সহ সাধারণ জনগণকে আওয়ামীলীগ প্রার্থীর পক্ষে আহুত সভায় যোগদানে বাধা প্রদান করা হয় বলে জানান প্রচারণায় অংশ নেয়া আওয়ামীলীগের এক শীর্ষ নেতা। তিনি বলেন, জনবিচ্ছিন্ন আর সন্ত্রাসী সংগঠন জনগণকে জিম্মি করে নিজেদের পকেট ভারী করার চেষ্টা করছে। পাহাড়ের শিক্ষা, চিকিৎসা আর উন্নয়ন সেক্টরে তাদের কি অবদান এমন প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, হাফছড়ি ও সিন্ধুকছড়ির জনগণ সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে উন্নয়নের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। তারা নৌকার পক্ষে ঘর থেকে বেরিয়ে এসেছে। ভয়ভীতি দেখিয়ে চাইলেই জনগণকে আটকে রাখা যায় না।

আওয়ামীলীগের ঐ শীর্ষ নেতা ইউপিডিএফের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের সমালোচনা করে বলেন, যারা জনগণের ভাগ্য উন্নয়নে কোন ধরনের ভুমিকা রাখে না জনগণ তাদের কথা কেন শুনবে। তিনি বলেন, সরকারী দল হিসেবে আমরা যখন অবাধ-সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোটের পক্ষে তখন সাধারণ ভোটারদের ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ তাদের এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করার অধিকার কোথা থেকে আসে।

এদিকে সিন্ধুকছড়ি ও হাফছড়ির একাধিক ভোটারের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ৬ মার্চের নির্বাচনে তারা সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আর উন্নয়নের পক্ষেই রায় দেবে। কোন বিশেষ মহলের চাপে যোগ্য প্রার্থী নির্বাচনে তারা ভুল করবে না। জনবিচ্ছিন্ন আর সন্ত্রাসীদের মদদপুষ্ট প্রার্থীর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন তারা। ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট-ইউপিডিএফ সমর্থিত প্রার্থী উশেপ্রু মারমার বিগত দিনের কর্মকান্ডের কথা তুলে ধরে তারা বলেন, তার মেয়াদকালে হাফছড়ি ইউনিয়নে কোন ধরনের উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। সাধারণ মানুষকে হয়রানি করাসহ বিভিন্ন ধরনের সরকারী বরাদ্দ আত্মসাতের কথা ভোটারদের মুখে মুখে।

গুইমারা উপজেলা নির্বাচনকে নিয়ে জনপ্রিয় অনলাইন পোর্টাল ‘পার্বত্যনিউজে প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলো গুইমারার সচেতন মহল থেকে শুরু করে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে ব্যাপকভাবে প্রভাব ফেলেছে। জনগণকে জিম্মি করে ভোট আদায়ের সব অপচেষ্টাকে রুখে দিয়েছে। বিশেষ করে ‘গুইমারা উপজেলা নির্বাচনে ঘুরে দাড়াতে চায় ইউপিডিএফ’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদটির মাধ্যমে পাল্টে যায় ভোটের মাঠের হিসাব-নিকাশ। সাহসী প্রতিবেদনের জন্য অনেকেই ধন্যবাদ জানিয়েছে পার্বত্যনিউজকে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন