গুইমারায় ভ্রাম্যমান অভিযানে ২টি ড্রেজার ও বালু জব্দ

গুইমারা প্রতিনিধি:

খাগড়াছড়ির গুইমারা উপজেলার হাফছড়ির তৈকর্মায় সরকারি অনুমতি বা দরপত্র ছাড়া প্রভাব বিস্তার করে তৈকর্মা ছড়ায় অবৈধ ড্রেজার মেশিনের দ্বারা বালু উত্তোলনকালে ভ্রাম্যমান আদালত অভিযান চালিয়ে দুটি বালু উত্তোলনের ড্রেজার মেশিন এবং এক স্তুপ বালু জব্দ করেন গুইমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পঙ্কজ বড়ুয়া।

জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন আসছে অসাধু স্থানীয় প্রভাবশালী একটি চক্র।এতে ঐ এলাকার ফসলী জমি ও হাফছড়ি-সিন্দুকছড়ি সড়ক সংলগ্ন ছড়া থেকে বালি উত্তোলনের ফলে ওই স্থানের ফসলি জমি এবং চলাচলের রাস্তা সম্পূর্ণ বিলীন হয়ে গিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় চাষীরা সিন্দুকছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান রেদাক মারমাকে বেশ কয়েকবার মৌখিক অভিযোগও করেছেন মর্মে স্থানীয়রা জানান।

সাম্প্রতিক সময়ে গুইমারায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পঙ্কজ বড়ুয়ার উদ্যোগে গুইমারা, জালিয়াপাড়াসহ ইটভাটাগুলোতে ভ্রাম্যমান অভিযান করায় তৈকর্মার সাধারণ কৃষকরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পঙ্কজ বড়ুয়ার দ্বারস্থ হন।

বৃহস্পতিবার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গুইমারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জনাব পঙ্কজ বড়ুয়া সরজমিনে গিয়ে ঘটনার বাস্তবতা দেখতে পান। সরকারি অনুমতি ছাড়া বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে দুটি ড্রেজার মেশিন এবং একস্তুপ বালি জব্দ করেন। পরে জব্দকৃত ড্রেজার মেশিন দুটি হাফছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানে চাইথোয়াই চৌধুরীর, জিম্মায় পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত রাখার জন্য নির্দেশ দেন তিনি।

পরে তাৎক্ষণিক নিলাম ডেকে জব্দকৃত বালি এক লক্ষ টাকায় বিক্রি করা হয়, যা সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়ার জন্য পেশকারকে নির্দেশ দেন তিনি। এই অভিযান চলাকালে গুইমারা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা রাজকুমার শীল, হাফছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান চাইথোয়াই চৌধুরী, ইউপি সদস্য আরমানসহ ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসী উপস্থিত ছিলেন।

এবিষয়ে অভিযানের সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পঙ্কজ বড়ুয়া বলেন, ‘হাফছড়ি-সিন্দুকছড়ি সড়ক সংলগ্ন ছড়া থেকে বালি উত্তোলনের ফলে ওই স্থানের ফসলী জমি এবং চলাচলের রাস্তা সম্পূর্ণ বিলীন হয়ে যাচ্ছে’ স্থানীয় কৃষকদের এমন অভিযোগের ভিত্তিতে আমি স্বশরীরে ঘটনাস্থলে গিয়ে বাস্তবতা দেখে দুঃখ পেয়েছি। ঘটনাস্থল থেকে দুটি ড্রেজার মেশিন ও এক স্তুপ বালি জব্দ করেছি। এ ধরনের অভিযান গুইমারায় অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।

এবিষয়ে হাফছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান চাইথোয়াই চৌধুরী ও সিন্দুকছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান রেদাক মারমা বলেন, অবৈধ বালু উত্তোলের ফলে পাহাড় ধসে কৃষকদের জমি ভরাট হয়ে গেছে। এলাকার সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিলো। আমাদের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার এমন অভিযানে স্থানীয় কৃষকরা নিজেদের ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পেলো। এজন্য আমাদের তরফ থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি এবং সেই সাথে এ ধরনের অভিযান সবসময়ে অব্যাহত রাখার অনুরোধ জানাচ্ছি।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন