খেলার মাঠে কুয়া!

ramu-pic-kua-23-10

নিজস্ব প্রতিবেদক:

কক্সবাজারের রামু উপজেলার রাজারকুল ইউনিয়নের একমাত্র খেলাধুলার স্থান ফরেষ্ট অফিস মাঠ। শুধু খেলাধুলাই নয়, যে কোন জনসভা, ওয়াজ মাহফিল, জানাযাসহ গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক ও প্রশাসনিক অনুষ্ঠানাদি হয়ে থাকে এ মাঠেই। অতি জনগুরুত্বপূর্ণ হলেও এ মাঠ নিয়ে সমস্যার অন্ত নেই।

মাঠটি আকারে ছোট আর টিলা শ্রেণির হওয়ায় একপাশে অনেক উঁচু আর একপাশে নিচু। মাঠের দক্ষিণ-পশ্চিম পাশে রয়েছে একটি পরিত্যক্ত কুয়া (পানির কুপ)। স্থানীয় ভাষায় এটিকে বলায় হয় পাতকুয়া। এ কুয়ার কারনে খেলাধুলা বা অন্যান্য অনুষ্ঠানাদি চলাকালে অনাকাঙ্খিত সমস্যারও সৃষ্টি হয়। বন বিভাগের আওতাধীন হওয়ায় মাঠটি সংস্কারের জন্যও কেউ এগিয়ে আসেনা। স্থানীয়দের দাবি রাজারকুল ইউনিয়নে বন বিভাগের অনেক সম্পদ বিভিন্ন সরকারি প্রয়োজনে ব্যবহার হচ্ছে। কিন্তু ইউনিয়নবাসীর কল্যাণে একমাত্র মাঠটি যেন বন বিভাগ ও প্রশাসন সংস্কার করে দেয়। এতে উপকৃত হবে এ জনপদের ক্রীড়া পাগল ছাত্র, তরুন, যুব সমাজও।

সম্প্রতি রামু-কক্সবাজার আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব সাইমুম সরওয়ার কমল বলেছেন, নৈতিক অধঃপতন ও অপরাধ কর্মকাণ্ড রোধ করে সুস্থ আগামী প্রজন্মের জন্য ক্রীড়া চর্চা সবচেয়ে বেশী প্রয়োজন। এ জন্য বর্তমান সরকার ক্রীড়া ক্ষেত্রে অতীতের চেয়ে বেশী ভূমিকা রাখছে। রামু উপজেলা একটি ক্রীড়া সমৃদ্ধ উপজেলা। এ জনপদের খেলোয়াড়রা জাতীয় ফুটবল দল সহ দেশের স্বনামধন্য দলগুলোতে সুনামের সাথে খেলছে। তাই এ মাঠটি সংস্কার করাও জরুরী। এ জন্য তিনি শীঘ্রই তিন লাখ টাকা অনুদান দেবেন বলেও জানা যায়।

কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগরে সহকারি বন সংরক্ষক মো. সোহেল রানা জানিয়েছেন, মাঠটি সংস্কারের ব্যাপারে তিনি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে পরামর্শ করে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেবেন।

রাজারকুল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুফিজুর রহমান মুফিজ জানিয়েছেন, খেলাধুলা, মাহফিল, জানাযা সহ গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানাদি আয়োজনে এ মাঠটিই ইউনিয়নবাসীর একমাত্র ভরসা। এমনকি আশপাশের ইউনিয়নের খেলোয়াড়রাও এ মাঠে নিয়মিত খেলতে আসেন। যুবসমাজ খেলার সুযোগ না পেলে বনের গাছ চুরিসহ নানা অসামাজিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হতে পারে। তাই বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনায় নিয়ে অবিলম্বে মাঠটি সংস্কারের জন্য তিনিও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

স্থানীয় ক্রীড়া সংগঠন দক্ষিণদ্বীপ ও শিকলঘাট একতা সংঘের সভাপতি জানে-আলম, সাধারণ সম্পাদক মহি উদ্দিন, অর্থ সম্পাদক নুরুল আলম সওদাগর, প্রচার সম্পাদক খোরশেদ আলম জানালেন, এ মাঠের কারনে এলাকায় অনেক কৃতি খেলোয়াড় সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু মাঠে পানির কুয়া, আংশিক টিলা শ্রেণির হওয়ায় খেলাধুলা করতে গিয়ে নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।

এলাকাবাসী দীর্ঘদিন এ মাঠটি সংস্কারের জন্য জনপ্রতিনিধি, বন বিভাগ ও প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে বার বার দাবি জানিয়ে আসছে। সাম্প্রতিক সময়ে রাজারকুলে সেনানিবাস, বিজিবি ক্যাম্প, ক্যান্টনমেন্ট স্কুল, বোটানিক্যাল গার্ডেন সহ অনেক সরকারি স্থাপনা নির্মিত হয়েছে। তাই এলাকার বৃহত্তর স্বার্থ বিবেচনায় এ মাঠটি সংস্কারও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে পড়েছে। অচিরেই যেন মাঠ সংস্কারের দাবি বাস্তবে রূপ নেয় এমনটাই আশা এলাকাবাসীর।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন