খাগড়াছড়ির ৪৯টি মণ্ডপে শারদীয় দূর্গা উৎসবকে ঘিরে সাজ সাজ রব

নিজস্ব প্রতিদেবক, খাগড়াছড়ি:

প্রতিবছরের মতো এবারও পাহাড়ি জনপদ খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলায় শারদীয় দূর্গাপূজার উৎসবকে ঘিরে চলছে সাজ সাজ রব। শহর ছাপিয়ে গ্রামেও ছড়িয়েছে আড়ম্বর আমেজ। এরিমধ্যে জেলার ৪৯টি পূজা মণ্ডপে মৃৎ শিল্পীদের হাতে নিঁপূণ ছোঁয়ায় দেবী দূর্গার বিমূর্ত অবয়ব ফুটে উঠছে। শান্তিপূর্ণভাবে দূর্গোৎসব সম্পন্ন করতে প্রশাসনও নিয়েছে ব্যাপক প্রস্তুতি। তবে নিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের উপর নির্যাতনের ঘটনায় হিন্দু সম্প্রদায়ের শারদীয় দূর্গোৎসবেও প্রভাব ফেলেছে। আয়োজকরা এবার উৎসবে কিছু কাটছাটের কথা ভাবছেন।

পূজার সময় যতোই ঘনিয়ে আসছে ততোই ব্যস্ততা বাড়ছে হিন্দু ধর্মাবলম্বী ও ত্রিপুরা জনগোষ্ঠির মাঝে। সবচেয়ে বড়ো উৎসব হবার কারণে দূর্গা মণ্ডপগুলোতে প্রতিবছর ভীড় করেন, অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরাও। তাই এবারও খাগড়াছড়ি দূর্গা পূজাকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উৎসব হিসেবেই দেখতে চান, পূজার আয়োজকরা।

খাগড়াছড়ি জেলায় এবার  ৪৮টি প্রতিমা পূজাও ১টি ঘট পূজা হবে। শারদীয় দূর্গোৎসবকে শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপনে জেলা পুলিশের পাশাপাশি আন্তঃ সম্প্রদায় সভাতেও মিলিত হচ্ছেন, পূজা উদযাপন পরিষদের নেতারা। খাগড়াছড়ি পুলিশ প্রশাসন পূজার সার্বিক আইনশৃঙ্খলা বিষয়ে জেলার পূজা উদযাপন কমিটি ও বিভিন্ন মসজিদের ইমামদের  সাথে বৈঠক করছেন।

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন কমিটির খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক তরুন কুমার ভট্টাচার্য্য জানান নিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের উপর নির্যাতনের ঘটনায় এবার শারদয় দূর্গোৎসব আয়োজনের  কিছুটা কাটছাট করা হবে। বলে জানিয়েছেন, পূজা উদযাপন কামিটির নেতা। তিনি জানান, জেলার পূজা মণ্ডপগুলোতে এখন চলছে পূজার শেষ প্রস্তুতি। স্থানীয় প্রশাসন এবার বেশ আগেভাগেই পূজা মণ্ডপগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পরিকল্পনা গ্রহণ করছে। বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ খাগড়াছড়ি জেলা শাখা আসন্ন শারদীয় দুর্গোৎসব যাতে সকল সম্প্রদায়ের মানুষের অংশ গ্রহণের মধ্য দিয়ে উৎসাহ উদ্দীপনায় আয়োজন হয় তার জন্য জেলার সকল পূজা মণ্ডপের পরিচালনা কমিটির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সার্বিক সমন্বয় যোগাযোগ শুরু করেছে। পূজা উৎসাহ ও উদ্দীপনাপূর্ণ আয়োজন যাতে নির্বিঘ্ন হয় তার জন্য নীতিমালা প্রনয়ন হচ্ছে।

খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার আলী আহমেদ খান জানান, শারদীয় দুর্গোৎসব যাতে সকল সম্প্রদায়ের মানুষের অংশ গ্রহনের মধ্য দিয়ে উৎসাহ উদ্দীপনায় উদযাপনে পুলিশ প্রশাসন সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে।খাগড়াছড়ি জেলার ৪৯টি পূজা মণ্ডপের মধ্যে ১৬টি পূজা মণ্ডবকে অধিক গুরুত্বপূর্ণ, ২২টিকে গুরুত্বপূর্ণ ও ১১টিকে  সাধারণ হিসেব চিহিৃত করে পুজা শান্তিপূর্ন পরিবেশে উদযাপনে তিন স্তরের নিরাপত্তা বলয় থাকবে। মোতায়েন থাকবে  ১০টি মোবাইল ও ২৪টি স্টাইকিং পর্যাপ্ত পুলিশ, আনসার ও ভিডিপি সদস্য।

তিনি আরো জানান, আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে প্রতিমা বিসর্জনের দিন পর্যন্ত এ নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে।

সারাদেশের ন্যায় খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলাতেও সনাতন ধর্মাবলম্বী হিন্দু ও ত্রিপুরা সম্প্রদায় সবচেয়ে বড়ো এই উৎসবে মহানন্দে শামিল হন।দূর্গা পূজার মাধ্যমে পুজারীরা আশা করছেন, দেশ-সমাজ থেকে মুছে যাবে অমঙ্গল। আর জাগবে সর্বজনীন মনুষ্যত্ব।

 

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন