খাগড়াছড়ির আলুটিলা এখন আতংকের জনপদ
নিজস্ব প্রতিবেদক, খাগড়াছড়ি:
খাগড়াছড়ির আলুটিলায় এখন সকলের জন্য আতংকের জনপদে পরিণত হয়েছে। দিনে-রাতে এখানে যাত্রীবাহী বাস, মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার ও পণ্যবাহী যানবাহন থামিয়ে ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। বাদ যাচ্ছে না পুলিশ ও সাংবাদিক বাহনকারী গাড়ীও। বিশেষ করে মধ্যরাতের পর আলুটিয়া শুরু হয় সন্ত্রাসীদের তান্ডব। গাড়ী দেখলে একদল পাহাড়ি সন্ত্রাসী ঝাপিয়ে পড়ে। গাড়ী ভাংচুর করে তার পর সব কিছু ছিনিয়ে নেওয়া হয়।
আলুটিলা এলাকাটি সাধারণ মানুষের নিরাপদ রাখার জন্য ইতিপূর্বে কয়েক দফা নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযান চললেও গত প্রায় এক বছর ধরে বন্ধ থাকায় বেড়েছে সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের তৎপরতা। ইদানিং দিনে দুপুরেও ছিনতাই ও ডাকাকির অভিযোগ রয়েছে।বিন্তু বাড়তি হয়রানী আশঙ্কায় ভুক্তভোগিরা কেউ আইনের আশ্রয় নিচ্ছে না।
গত বৃহস্পতিবার রাতে আলুটিলায় খোদ পুলিশ ও সাংবাদিক বহনকারী একটি মাইক্রোবাস সন্ত্রাসীদের কবলে পড়ে। খাগড়াছড়ি সদর থানার এসআই আব্দুল্লাহ আল মাসুদের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল জেলার রামগড়ে আসামী ধরতে গিয়ে ফিরছিলেন। রাত অনুমানিক ৩টার দিকে মাইক্রোবাসটি আলুটিলার উঠার সময় পুলিশ বক্সের একটু পরে পৌছলে ১০/১২ জনের একটি সন্ত্রাসী দল হাতে লাঠি, ইট, কিরিচসহ ধারালো অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে প্রথমে মাইক্রোবাসের লুকিং গ্লাসে আঘাত করে চালককে টেনে-হেচরে নামানোর চেষ্টা করে।
এ সময় মাইক্রোবাসের বসা এক পুলিশ সদস্য শট গান দিয়ে গুলি করার চেষ্টা করলে লগ হয়ে যায়। এ সময় মাইক্রোবাসের সামনের সিটে বসা এসআই মাসুদ ঐ লগ হওয়া শর্ট গানটি নিয়ে ধাওয়া করলে সন্ত্রাসীরা জঙ্গলে পালিয়ে যায়। এ সময় এ প্রতিবেদক নিজেও ঐ মাইক্রোবাসে ছিলেন।
তার পর ক্ষণে একই স্থানে একটি পত্রিকা বহনকারী মাইক্রোবাসসহ আরো ৪টি গাড়ীতে সন্ত্রাসীরা হানা দিয়ে ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। কালের কন্ঠ পত্রিকা বহনকারী মাইক্রোবাসের চালক মো. ইব্রাহিম জানান, ভোর সাড়ে ৪টা থেকে ৫টার মধ্যে তিনি আরো একটি মাইক্রোবাস ও মালবাহী ট্রাক থামিয়ে মোবাইল ফোন ও নগদ অর্থসহ প্রায় দেড় টাকা মালামাল লুট করে নেয় সন্ত্রাসীরা।
এদিকে পুলিশ ও সাংবাদিক বহনকারী মাইক্রোবাস সন্ত্রাসীদের কবলে পড়ার খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে আলোচনা ও সমালোচনার ঝড় উঠে। কতিপয় বিমল বাবু সন্ত্রাসীদের পক্ষ নিয়ে পোষ্ট দিলে প্রতিবাদের ঝড় উঠে। এক পর্যায়ে মি. বিমল তার পোষ্ট প্রত্যাহার করে নেয়।
মাটিরাঙা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাহাদত হোসেন টিটু জানান, আলুটিলা এলাকাটি সাধারণ মানুষের জন্য নিরাপদ করতে হলে সমন্বিত উগ্যোগের প্রয়োজন। তিনি বলেন, পুলিশের একার পক্ষে এটা রোধ করা সম্ভব নয়।
ভক্তভোগিরা আলুটিলাকে নিরাপদ করতে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সাড়াশি অভিযান চালানোর পাশাপাশি সন্ত্রাসীদের ধরতে সাদা পোষাকের পুলিশের টহল জোরদার করার দাবী জানিয়েছেন।