খাগড়াছড়িতে নিরাপত্তা চেয়ে ৩৫ সাংবাদিকের জিডির একমাস : দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি নেই
নিজস্ব প্রতিবেদক:
খাগড়াছড়িতে নিরাপত্তা চেয়ে ৩৫ সাংবাদিকের দায়ের করা জিডির শুক্রবার ২০ জানুয়ারি একমাস পূর্ণ হলো। তবে আশার বাণী ছাড়া দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি নেই। সে সাথে চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এবং সন্ত্রাসীরা নিয়মিত ফেসবুকে বিভিন্ন পোস্ট দিয়ে সাংবাদিকদের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে।
প্রথম আলোর ফটো সাংবাদিক নীরব চৌধুরীকে মারধরের ঘটনার প্রতিবাদে গত বছরের ২০ ডিসেম্বর স্থানীয় সাংবাদিকরা খাগড়াছড়ি পৌর শাপলা চত্বরে আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচি চলাকালে মেয়র মো. রফিকুল আলমের অনুগত হিসেবে পরিচিত মো. দিদার ওরফে কসাই দিদারের নেতৃত্বে ৪০ থেকে ৪৫ জন সন্ত্রাসী ‘একটি-দুটি সাংবাদিক ধর, ধরে ধরে জবাই কর, সাংবাদিকদের আস্তানা-জ্বালিয়ে দাও পুড়িয়ে দাও’ ইত্যাদি শ্লোগান দিয়ে জঙ্গী মিছিল নিয়ে মানববন্ধনস্থলে হাজির হয়। একপর্যায়ে তারা মানববন্ধন কর্মসূচিতে ব্যবহারের জন্য সাংবাদিকদের আনা মাইক নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে সাংবাদিকদের অকথ্য ভাষায় গালাগাল ও মানববন্ধনে অংশ নেওয়া প্রত্যেক সাংবাদিককে জবাই করে হত্যা করার হুমকি দিয়ে বক্তব্য কসাই দিদার। এ সময় অধিকাংশ সন্ত্রাসীর হাতে ছিল কিরিচ ও লাঠিসোটা। এ সময় পুলিশ শুধু নির্বিকার ছিলেন না, উল্টো সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো সাংবাদিকদের কর্মসূচী সংক্ষিপ্ত করার পরামর্শ দেন।
ঘটনার আকস্মিকতায় সাংবাদিকেরা তাৎক্ষণিক খাগড়াছড়ির সাংসদ কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী, জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ ওয়াহিদুজ্জামান ও পুলিশ সুপার মো. মজিদ আলীর সঙ্গে দেখা করে তাঁদের বিষয়টি জানান এবং জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে খাগড়াছড়ি সদর থানায় ৩৫ সাংবাদিক এ জিডি করেন। জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে নীরব চৌধুরীও থানায় আলাদা জিডি করেন।
৩৫ সাংবাদিকদের জিডি নন জিআর মামলা হিসেবে গ্রহণ করে খাগড়াছড়ির সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবু সুফিয়ান মো. নোমানের আদালতে পাঠানো হলে আদালত তা অনুমোদন দিয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেন। কিন্তু গত এক মাসেও মামলাটি দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি পরিলক্ষিত হয়নি। তবে এ বিষয়ে খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তারেক মোহাম্মদ আব্দুল হান্নান পার্বত্যনিউজকে জানান, শীঘ্রই ফলাফল পাবেন।
প্রসঙ্গত, গত ১৮ ডিসেম্বর খাগড়াছড়ির আলোকচিত্র সাংবাদিক নীরব চৌধুরীকে ধরে নিয়ে পৌরসভার মেয়র রফিকুল আলম মারধর করে।