খাগড়াছড়িতে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আ’লীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত- ৫
স্টাফ রিপোর্টার:
আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে খাগড়াছড়ির শালবাগান এলাকায় আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলায় এক নারীসহ ৫ জন আহত হয়েছেন। রবিবার দুপুর দেড়টা থেকে দফায়-দফায় সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘটে।
হামলায় আহতরা হলেন, মো. হানিফ (৫৫), আরিফ হোসেন (২৮), জামাল হোসেন (৩২), মো. নাঈম (২৯) ও হামিদা বেগম (৪৫)। আহতরা সকলেই শালবন এলাকার বাসিন্দা। এদের মধ্যে নাঈমের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সামসুউদ্দিন ভুঁইয়া জানান, রবিবার সকালে ল্যাপটপ চুরির মামলাসহ একাধিক মামলার তালিকাভুক্ত আসামি শাহজাদাকে আটক করে পুলিশ। এ ঘটনার পর খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি ও সাধারণ সম্পাদক মো. জাহেদুল আলমের অনুসারীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। দুপুর দেড়টা থেকে প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে শালবাগান, হরিনাথপাড়া, আদর্শপাড়া এলাকায় দফায় দফায় সংঘর্ষে উভয় গ্রুপের চারজন আহত হন।
অন্যদিকে সংঘর্ষের প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, স্থানীয় এক শিক্ষকের বাসা থেকে ল্যাপটপ চুরির মামলায় আসামি শাহজাদাকে পুলিশ গ্রেফতার করার পর তাকে ধরিয়ে দেয়া হয়েছে বলে কথা ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়দের দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে।
খাগড়াছড়ির সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. রইস উদ্দিন জানান, দুষ্কৃতকারীদের হামলায় ৫ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে আশঙ্কাজনক একজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। তবে বর্তমানে সেখানকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। জড়িতদের আটকের চেষ্টা চলছে।
খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক মেডিকেল অফিসার নয়ন ময় ত্রিপুরা জানান, আহত ৫ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে নাঈমের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
সংঘর্ষের পরপরই খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. জাহেদুল আলমের নেতৃত্বে এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। তিনি এ ঘটনায় খাগড়াছড়ির চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের দায়ী করেন।
জাহেদুল আলম জানান, যারা চাঁদাবাজি করে, যারা সন্ত্রাসী, তারাই এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত। দ্রুত জড়িতদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি।
জাহেদুল আলমের ছোট ভাই খাগড়াছড়ি পৌর মেয়র রফিকুল আলমের অভিযোগ, পুলিশ চুরির মামলায় কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা গ্রুপের এক আসামিকে আটক করে। এ ঘটনায় কুজেন্দ্রের লোকজন শান্তিপ্রিয় এলাকাবাসীর উপর হামলা চালায়। মূলত এলাকায় অশান্তি সৃষ্টির পায়তারা করছেন তারা।
উল্লেখ্য, গত পৌরসভা নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন নিয়ে খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগ দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়ে। ওই সময় থেকে প্রায়ই দুই গ্রুপেরর মধ্যে হামলা-পাল্টা হামলা এবং দলীয় অফিসে তালা দেওয়ার ঘটনা ঘটে।