কোরবানীর ঈদের দিনের পরিচ্ছন্নতা

কোরবানীর ঈদে পশু কোরবানি, মাংস কাটা, তুলে রাখা এসব কাজ তো আছেই। তবে তারপরের কাজ কিন্তু আরও বেশি জরুরী। কোরবানীর পরে ঘর ও এর আশপাশটা পরিষ্কার রাখাটা যেমন জরুরী, তেমনি ঝামেলারও। কিভাবে এই উৎসবের দিনে আনন্দের পাশাপাশি পরিস্কার পরিচ্ছন্নতাটাও বজায় রাখা যায়, এবিষয়ে থাকছে কিছু পরামর্শ।

লিখেছেন- মনিরা পারভীন সাথি


পার্বত্যনিউজ ডেস্ক:

মাংস আনার আগের প্রস্তুতি

আগে থেকেই ড্রয়িং, ডাইনিং, রান্নাঘর গরম পানি ও সোডা দিয়ে ধুয়েমুছে পরিষ্কার করে রাখতে হবে। যে পাত্রে করে মাংস আনা হবে, সেগুলোও আগে থেকেই ধুয়েমুছে পরিষ্কার করে রাখতে হবে।

মাংস আনার সময় নানা জায়গায়, বিশেষ করে সিঁড়িতে রক্ত জমাট বেঁধে ছোপ ছোপ দাগ পড়ে যায়। পরে তা পানির ধারায় ধুয়ে ঝাড়ু দিয়ে ভালোভাবে পরিষ্কার করে ফেলতে হবে।

যেখানে মাংস রাখা হবে, সেই স্থানটুকু জীবাণুনাশক তরল যেমন—স্যাভলন বা ডেটল মেশানো সাবান-পানি দিয়ে মুছে নিতে হবে। এরপর একবার পরিষ্কার পানি দিয়ে মুছে নিতে হবে।

মাংস আনার পরের পরিচ্ছন্নতা

মাংস ঘরে আনার পর রক্তের দাগ পড়লে অবশ্যই তা পরিষ্কার করে ফেলতে হবে। শুকনা কাপড় দিয়ে মাংস মুছে পরিষ্কার করে শুকনা প্যাকেটের ভেতর রাখতে হবে। মাংস আনার অন্তত আধা ঘণ্টা পর ফ্রিজে ভরতে হবে। গরু বা খাসির ভুঁড়ি সম্ভব হলে বাইরে থেকে পরিষ্কার করে আনাই ভালো।

মাংস আর ভুঁড়ি সিংকে রেখে পরিষ্কার করলে চর্বি জমে সিংক অথবা কলতলায় পানি বের হওয়ার জায়গা বন্ধ হয়ে যেতে পারে। তাই প্রচুর পরিমাণে পানি ও গরম পানি ঢালতে হবে, যাতে অতিরিক্ত তেল, চর্বি, ময়লা পরিষ্কার হয়ে যায়।

ঘরে মাংস আনার পর মাংস টুকরা করে কাটাকাটির পর সংরক্ষণ করে রেখে অবশ্যই ঘরটাকে গরম পানির সঙ্গে মিশিয়ে টাইলস ক্লিনার, স্যাভলন, ফিনাইল দিয়ে মেঝেটা মুছে ফেলতে হবে। ঘরে এয়ার ফ্রেশনার ব্যবহার করতে পারেন, ঘর থেকে যেন মাংসের কোনো দুর্গন্ধ না বের হয়। অনেক সময় রান্নাঘর ছোট থাকলে আর মাংস বেশি হলে তা খাবার ঘরে রাখা যেতে পারে।

ধাপে ধাপে ঘরদোর জীবাণুমুক্ত করা

পশু কোরবানি দেওয়া থেকে শুরু করে ঘরে এনে মাংস সংরক্ষণ করা পর্যন্ত প্রতিটি ধাপে থাকতে হবে পরিচ্ছন্নতা, যেন আশপাশ থাকে জীবাণুমুক্ত।

পশু জবাই দেওয়ার পরে যে রক্ত বের হয়, তা মাটিতে পুঁতে ফেলতে হবে।

মাংস কাটাকাটি করার পর হোগলাটা পুড়িয়ে ফেলতে হবে, তা না হলে অ্যানোফিলিশ মশার উপদ্রব বেড়ে ম্যালেরিয়া হওয়ার আশঙ্কা থাকে। হোগলা পোড়ানোর গন্ধ মশা তাড়ানোর কাজ করে।

বেকিং পাউডার বা কাপড় কাচার সোডা গরম পানিতে মিশিয়ে সিংকে ঢাললে চর্বি কমে যাবে এবং তেলতেলে ভাবটা চলে যাবে।

ঘরের মেঝেতে ব্লিচিং পাউডার ব্যবহার করা যাবে না। এটি মেঝের ক্ষতি করে। এর বদলে কাপড় কাচার সোডা ব্যবহার করাই ভালো। কাপড় কাচার সোডা ব্যবহারের পর ফিনাইল দিয়ে মুছলে ঘর জীবাণুমুক্ত হয়ে যাবে।

ভুঁড়ি বা মাংস পরিষ্কারের সময় হাতে গ্লাভস পরলে ভালো হয়। না হলে হাত কেটে যেতে পারে। কাটা স্থানে জীবাণুর সংক্রমণও হতে পারে।

কোরবানীর ঈদ আমাদের জন্য যতটা আনন্দের, উৎসবের আমেজের সাথে সাথে যদি ততটা সাবধানতা ও পরিচ্ছন্নতা মেনে চলা যায়, তাহলেই ঈদ পরবর্তী সময়টাও হয়ে থাকবে চিন্তামুক্ত ও আনন্দময়।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন