কোন্দলে আওয়ামীলীগ মামলার জালে বিএনপি ও সুযোগ সন্ধানে ইউপিডিএফ


এইচ এম প্রফুল্ল, খাগড়াছড়ি:

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সাংগঠনিকভাবে দল গোছানোর কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে আওয়ামীলীগ ও বিএনপির পাশাপাশি আঞ্চলিক রাজনৈতিক সংগঠন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট(ইউপিডিএফ)। তবে মামলার জালে বিএনপি আর আওয়ামীলীগ আছে দলীয় কোন্দলে-জঞ্জালে। অপর দিকে সুযোগ সন্ধানে আছে ইউপিডিএফ।

এছাড়া জাতীয় পাটি(এ) ও জেএসএস(এমএন) নীরবে ভোটের মাঠ গোছাচ্ছে।জামাতসহ অন্য ইসলামী দলগুলোর কোন তৎপরতা নেই খাগড়াছড়িতে।তবে ইউপিডিএফ’র কৌশলী তৎপরতার কারণে খাগড়াছড়ি আসনে নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়া জাতীয় রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠতে পারে।

আওয়ামী লীগ

দলীয় কোন্দলে ঘুর পাক খাচ্ছে খাগড়াছড়িতে আওয়ামী লীগের রাজনীতি। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রধান বিরোধী দলের বর্জনে মুখে আওয়ামীলীগ প্রার্থী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা ৯৯ হাজার ৫৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তবে এবার আওয়ামীলীগের যে কোন প্রার্থীর জন্য যতটা সহজ হবে না বলে মনে করেন সচেতন মহল। গত উপজেলা নির্বাচনে ৯টি উপজেলার মধ্যে ৮টিতে হেরেছে দলীয় প্রার্থীরা। তিন পৌরসভায় দুটি হাত ছাড়া হয়েছে।

খাগড়াছড়ি আসনে আওয়ামীলীগের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসাবে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন, বর্তমান সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, সাবেক সংসদ সদস্য ও প্রতিমন্ত্রী মর্যাদায় পার্বত্য চট্টগ্রাম টাস্কফোর্স চেয়ারম্যান যতীন্দ্র লাল ত্রিপুরা, জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মুক্তিযোদ্ধা রণ বিক্রম ত্রিপুরা, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী ও পানছড়ি কলেজের অধ্যক্ষ সমীর দত্ত চাকমা।

তবে প্রচারপ-প্রচারণায় এগিয়ে আছেন, কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি। তিনি প্রায় প্রতিদিন কোন না কোন উপজেলা চষে বেড়াচ্ছেন। নৌকায় ভোট চাইছে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যাকে মনোনয়ন দিবেন,তার পক্ষে কাজ করার অঙ্গীকার করছেন। অপর দিকে পিছিয়ে নেই জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরীও। তিনিও নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছে বলে গুঞ্জন রয়েছে।

খাগড়াছড়ি শহর ও বেশ কয়েকটি উপজেলায় খাগড়াছড়ি সর্বস্তরের জনসাধারণের ব্যানারে ২৯৮ নং সংসদীয় আসনের বাসিন্দাদের ঈদুল আযহার শুভেচ্ছা জানিয়ে পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি কংজরী চৌধুরীর পক্ষে ফেস্টুন সাঁটানো হয়েছে।

ঐসব ফেস্টুনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর ঊসেশিং এমপি’র সংবলিত ছবির সাথে কংজরী চৌধুরী ছবি রয়েছে। তবে কংজরী চৌধুরীর এসবের কিছু জানেন না জানিয়ে বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমি নিজেই বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছি। দলের মূল স্রোতের সাথে আমার বিরোধ সৃষ্টি করার জন্য তৃতীয় কোন পক্ষ এ কাজ দাবী করে বলেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য প্রার্থী হওয়ার আমার কোন ইচ্ছে নেই।

খাগড়াছড়ি আওয়ামীলীগে দু’ধারা চলছে। গত পৌরসভা নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর বিরোধীতা করার অভিযোগে জেলা আওয়ামলীগের সাধারন সম্পাদক সম্পাদক জাহেদুল আলমেকে বহিস্কারের প্রস্তাব করে কেন্দ্রে চিঠি পাঠায় জেলা আওয়ামী লীগ। সে থেকে প্রতিটি কর্মসূচী পালিত হচ্ছে, পৃথকভাবে।

এক পক্ষে নেতৃত্বে আছেন বর্তমান সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এবং অপর পক্ষে জেলা আওয়ামীলীগের সাময়িক বহি:স্কৃত সাধারণ সম্পাদক জাহেদুল আলমের অনুসারিরা। জাহেদুল আলম গত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে বহি:স্কৃত হয়েছিলেন।সে সময় তিনি বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে দোয়াত-কলম প্রতীক নিয়ে ১৬ হাজার ৫৬১ ভোট পান।পরবর্তীতে দল তাকে আবার ফিরিয়ে নিয়ে দলের জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক দায়িত্ব দেয়।

কোন্দলের জেরে গত প্রায় দুই বছর ধরে খাগড়াছড়িতে আওয়ামীলীগের দুইপক্ষের মধ্যে হামলা-মামলা চলছে। দুই পক্ষই একে অপরকে মূল স্রোতধারা বলে দাবী করছে।

এ বিষয়ে জাহেদুল আলমের ছোট ভাই খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামীলীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক দিদারুল আলম নিজেদের দলের মূলস্রোত দাবী করে বলেন, জেলা আওয়ামলীগের কার্যালয় আমাদের দখলে আছে। কাজে আমরাই মূল আওয়ামীলীগ। পক্ষান্তরে জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মুক্তিযোদ্ধা রণ বিক্রম ত্রিপুরা বলেন, ওরা দখলদার। অফিসটি আমরা চিঠি দিয়ে মালিককে বুঝিয়ে দিয়েছি। কিন্তু জাহেদ-রফিক তা জোরপূর্বক দখল করে রেখেছে।

রণ বিক্রম ত্রিপুরা নিজেদের মূলস্রোত ধারার দাবী করে বলেন, যারা নির্বাচন আসলে দলের প্রার্থীর বিরোধীতা করে, বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীকে লাল কার্ড দেখায় আাবার নির্বাচন গেলে নৌকায় উঠতে চাই তারা কখনো আওয়ামীলীগ হতে পারে না।

খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নির্মলেন্দ্র চৌধুরী বলেন, সার্বক্ষণিক জেলার মানুষের সেবা ও উন্নয়নে পাশে থাকায় কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা ছাড়া এ আসনে বিকল্প কাউকে ভাবছে না নেতাকর্মীরা।

তবে সব মিলে খাগড়াছড়িতে আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক অবস্থা অনেকটা নড়েবড়ে বলে মনে করেন পর্যবেক্ষক মহল।

বিএনপি

খাগড়াছড়ি বিএনপি আটকে আছে মামলার জালে। নেতাকর্মীদের মাসের অধিকাংশ সময় ব্যয় হচ্ছে, আদালতের বারান্দায়। তারপর খাগড়াছড়িতে বিএনপির সাংগঠনিক অবস্থা বেশ শক্তিশালী। গত উপজেলা নির্বাচনে দুটি উপজেলায় বিএনপির প্রার্থীরা নির্বাচিত হয়েছে। তিনটি উপজেলায় হেরেছেন সামান্য ভোটের ব্যবধানে।
আগামী নির্বাচনে খাগড়াছড়ি আসনে দলের শক্তিশালী প্রার্থী জেলা বিএনপির সভাপতি ওয়াদুদ ভূঁইয়া। তিনি দুইবারের সংসদ সদস্য এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান।

নানা বাধা ও প্রতিবন্ধকতা সত্বেও তৃণমূল নেতাকর্মীদের সঙ্গে সার্বক্ষনিক যোগাযোগ ও কমিটিগুলো পুনর্গঠনের কারণে দলে ওয়াদুদ ভূইয়ার অবস্থান সু-দৃঢ় বলে দাবী নেতাকর্মীদের। প্রশাসনের বাধা থাকলেও কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় সব কর্মসূচীই পালিত হচ্ছে। তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নেতৃত্বে দ্বন্দ্ব ও সমন্বয়হীতার কারণে জেলার বেশ কয়েকটি উপজেলায় সমর্থন থাকলেও সাংগঠনিক অবস্থা দুর্বল।

খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির সভাপতি ওয়াদুদ ভূঁইয়া বলেন, ‘সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখেই নয়, গতানুগতিকভাবে দলকে গোছানোর কাজ চলছে। সে সঙ্গে নির্বাচনের জন্যে সামগ্রিক প্রস্তুতি রয়েছে। তিনি জানান, জরুরী সরকারের নিষেধাজ্ঞার কারণে ২০০৮ সালের নির্বাচনে অংশ নিতে না পারলেও আগামীতে দলের মনোনয়ন নিয়ে তিনি প্রার্থী হতে তিনি প্রস্তুত।

কিছুদিন আগেও সমীরন দেওয়ানের নেতৃত্বে পৃথকভাবে বিএনপির ব্যানারে কর্মসূচী পালন করতে দেখা গেলেও এখন তা চোখে পড়ছে না। সমীরণ দেওয়ানসহ তার গ্রুপের সকলেই এখন নিস্ক্রিয়। সম্প্রতি জেলা বিএনপির আংশিক কমিটি ঘোষনার পর সমীরন দেওয়ানের অন্যতম সহযোগি মাটিরাঙা উপজেলা পরিষদের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও পৌরসভার মেয়র নাসির আহমেদ চৌধুরী তার অনুসারীদের নিয়ে ওয়াদুদ ভূইয়ার হাতে ফুলের তোড়া দিয়ে মূলস্রোতে ফিরেছেন। ফলে খাগড়াছড়ি বিএনপির পূর্ন নেতৃত্ব এখন জেলা বিএনপির সভাপতি ওয়াদুদ ভূঁইয়ার নিয়ন্ত্রণে।

জানা গেছে, চলতি বছরের মার্চে কেন্দ্র ঘোষিত জেলা বিএনপির ১৫১ সদস্যের মধ্যে সভাপতি, সহসভাপতি, সম্পাদকসহ ৩১ সদস্যের নামের তালিকায় নেই সমীরণ দেওয়ান ও তার পক্ষের কারোরই নাম না থাকায় গ্রুপের নেতাকর্মীরা অনেকটা হতাশ। এ কারণে অনেকে নিস্ক্রিয় হয়ে পড়েছেন। তবে আগামী নির্বাচনে আবারও সমীরন দেওয়ান দলীয় মনোনয়ন চাইতে পারেন বলে জানিয়েছেন তার অনুসারিরা। তবে সমীরন দেওয়ানের অনুগত বলে পরিচিত জেলা যুবদলের সভাপতি আব্দুল সালাম বলেন, কেন্দ্রীয় বিএনপি যাকে মনোনয়ন দিবেন তার পক্ষে কাজ করার চেষ্টা করবো। সুযোগ না পেলে ভোটটা দিয়ে আসবো।

জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অনিমেষ চাকমা রিংকু বলেন, ‘সহসাই পূর্ণাঙ্গ কমিটির ঘোষণা আসতে পারে। মোস্তাফিজুর রহমান মিল্লাতের অকাল মৃত্যুর শোক কাটিয়ে ওঠার পরই বৈঠকের সর্বসম্মত মতামত ও কেন্দ্রীয় পরামর্শে সাধারণ সম্পাদক পদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন আমাদের নেতা ওয়াদুদ ভূঁইয়া।

অপর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আব্দুল মালেক মিন্টু বলেন, আওয়ামীলীগের গত প্রায় সাড়ে আট বছরের শাসনামলে জেলাাব্যাপী দলের নেতাকর্মীদের নামে অন্তত সোয়া দুই শতাধিক মামলা হয়েছে। আসামী করা হয়েছে প্রায় ২০ হাজার নেতাকর্মীকে। কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় কোন কর্মসূচী স্বছন্দে করতে পারছে না। সব কর্মসূচী দলীয় কার্যালয়ের ভিতরে করতে হয়। অনেক উপজেলায় তাও করতে দিচ্ছে না পুলিশ।

কোন কোন উপজেলায় কর্মসূচীতে বাধা দিচ্ছে আওয়ামীলীগ। সম্প্রতি দলের সদস্য সংগ্রহ ও নাবায়ন কর্মসূচী এবং সর্বশেষ ঈদ-উল আযহার পোষ্টার লাগানোর কাজেও বাধা দেওয়া হচ্ছে। তা সত্বেও খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপি দেশের যে কোন জেলার চেয়েও সু-সংগঠিত। তিনি বেশ কয়েকটি উপজেলায় সাংগঠনিক দুর্বলতার কথা স্বীকার করে বলেন, শীঘ্রই সব মিটে যাবে।

তবে আগামী নির্বাচনে বিএনপির ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে দল কতোটা পাহাড়ী ভোট টানতে পারবে অনেকখানি তার উপর বলে পর্যবেক্ষকদের মতামত।

জাতীয় পার্টি

খাগড়াছড়িতে জাতীয় পাটির সাংগঠনিক অবস্থা লেজেগোবরে। তাদের কোন তৎপরতা নেই বললে চলে। মূলত জাতীয় সংসদ নির্বাচন এলে দলের কতিপয় নেতাকর্মী তৎপরতা শুরু হয়। চট্টগ্রাম থেকে ছুটে আসেন জাতীয় পাটির কেন্দ্রীয় কমিটির প্রেসিডিয়াম সদস্য সোলায়মান আলম শেঠ। তিনি সম্প্রতি খাগড়াছড়িতে এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি এককভাবে অংশগ্রহন করবে।

এজন্য দলীয় নেতাকর্মীদের প্রস্তুতি নেওয়ারও আহ্বান জানান তিনি। আওয়ামী লীগ জোটগত নির্বাচনে গেলে খাগড়াছড়ি আসন থেকে তিনি জাতীয় পাটির হয়ে মনোনয়ন চাইবেন বলে জানান। তিনি গত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খাগড়াছড়ি আসনে জাতীয় পাটির প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দিতা করে মাত্র ৮ হাজার ১৮০ ভোট পেয়ে জামানত হারান।

জেলা জাতীয় পাটির সভাপতি মো: ইছহাক ও সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ আহমেদ জানান, দল থেকে সোলায়মান আলম শেঠ প্রার্থী হবেন অনেকটাই নিশ্চিত। একই কথা বললেন, কেন্দ্রীয় সদস্য ইঞ্জিনিয়ার খোরশেদ আলম।

তবে জেলা জাতীয় পাটির সমন্বয়কারী হিসেবে পরিচয় দেওয়া পূর্ণজ্যোতি চাকমা বলেন, ‘জেলার বাইরের লোক হিসেবে সোলায়মান আলম শেঠকে খাগড়াছড়িতে প্রার্থী হিসেবে এরশাদ স্যার এলাউ নাও করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে কেশব লাল চক্রবর্তী প্রার্থী হবেন। কেশব লাল চক্রবর্তী সড়ক বিভাগে চাকরির সূত্রে এসে মানিকছড়ি উপজেলার বাসিন্দা বলে জানা গেছে।

ইউপিডিএফ

১৯৯৭ সালে জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) সঙ্গে সরকারের চুক্তি স্বাক্ষরের বিরোধিতা করে জন্ম নেয় আঞ্চলিক রাজনৈতিক সংগঠন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) সাংগঠনিকভাবে খাগড়াছড়িতে বেশ শক্তিশালী।

সংগঠনটি ২০০১ সালের নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী দিয়ে তাদের সাংগঠনিক অবস্থা জানান দিয়ে আসছে। পরপর তিনটি জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিয়ে নানা প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে বিপুল ভোট পেয়েছেন ইউপিডিএফ প্রার্থীরা।

সর্বশেষ ২০১৪ সালে সংগঠনের প্রধান প্রসিত বিকাশ খীসা প্রার্থী হয়ে ৬৭ হাজার ৮০০ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় হন। এছাড়া জেলার ৯টি উপজেলার মধ্যে ৫টি উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে তাদের প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন।

স্থানীয় জাতীয় রাজনৈতিক দলগুলোর মত,  নির্বাচনে খাগড়াছড়ির প্রত্যন্ত অঞ্চলে ভোটারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায় না। যার ফলে প্রত্যন্ত অঞ্চলের নিরীহ পাহাড়ীরা জান মালের নিরাপত্তার ভয়ে কখনই নিজের পছন্দের প্রার্থিদের ভোট দিতে পারে না। এই সুযোগ পেয়ে থাকে ইউপিডিএফ।

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও ইউপিডিএফ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে এটা অনেকটাই নিশ্চিত। তবে প্রার্থী কে হচ্ছেন তা এখনো পরিস্কার নয়।

সাবেক প্রার্থি উজ্জল স্মৃতি চাকমা বিপুল অস্ত্রসহ গ্রেফতার হয়েছিলেন একবার। জেলা সংগঠক প্রদীপন খীসার বাড়ি থেকে ৮০ লাখ টাকা উদ্ধারের ঘটনায় জেলায় ব্যাপক আলোচিত হয়েছিল।

তবে আগামী নির্বাচনে এই দলটির জন্য গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর হতে পারে ইউপিডিএফ-জেএসএস(মূল) সমঝোতা। সত্যি যদি এই সমঝোতা নির্বাচনী জোটে রূপান্তিরিত হয় তবে ইউপিডিএফ প্রার্থি আগামী নির্বাচনে যে কোনো দলের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

জেএসএস

খাগড়াছড়িতে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি( সন্তু) গ্রুপের তৎপরতা না থাকলেও (এমএন লারমা) অংশের সাংগঠনিক অবস্থা রয়েছে।গত সংসদ নির্বাচনে মৃণাল কান্তি ত্রিপুরা প্রার্থী হয়ে ১০ হাজার ৬২৬ ভোট পান। তিনি এবারও প্রার্থী হতে পারেন।

জামাত

এক সময় জামাত-শিবিরের তৎপরতা থাকলেও এখন নেই। বিশেষ করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু হবার পর দমন-পীড়নের গত কয়েক বছর ধরে মাঠ ছাড়া জামাত-শিবিরের নেতাকর্মী। এছড়া ইসলামী ঐক্যজোট ও বাসদ-জাসদের তেমন কোন অস্তিত্ব নেই খাগড়াছড়িতে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন