কে নেবে বিলকিছের দুই মেয়ের দায়িত্ব!
নিউজ ডেস্ক:
জান্নাতুল নুর এ বছরই এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। বিলকিছ আক্তারের স্বপ্ন ছিল মেয়েকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করবে। দুর্বৃত্তের বুলেট বিলকিছের সেই স্বপ্ন পূরণ করতে দিল না। বাঘাইছড়ি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দায়িত্ব পালনে গিয়ে সন্ত্রাসীর বুলেটে মা আনসার-ভিডিপি সদস্য বিলকিছ আক্তার প্রাণ হারান।
আরও ৫ বছর আগে নুর বাবাকে হারিয়েছে। সাড়ে চার বছরের বোন ছাড়া আপন বলে তার আর কেউ নেই। আপাতত দুই বোন নানাবাড়িতে থাকলেও ছোট্ট বোনকে নিয়ে কী করবে সেই অনিশ্চয়তা রয়েছে কিশোরী নুর।
বাঘাইছড়ি হত্যাকাণ্ডে ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্যরা নিহত ও আহতদের স্বজনের সঙ্গে ২১ মার্চ কথা বলেন। সেদিন উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ে গিয়েছিল নুর। সিঁড়ির পাশে ছোট বোনকে কোলে নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা কিশোরীর চোখের কোণে অশ্রু টলমল। তার চোখেমুখে ভয়, অনিশ্চিয়তা ও স্বজন হারানোর শোক।
নুর বলে, ‘এ বছর এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছি। মায়ের স্বপ্ন ছিল আমাকে আরও পড়ালেখা করাবে। ৫ বছর আগে বাবাকে হারিয়েছি। মা’ই আমাদের সব ছিল। এখন মা-ও আমাদের রেখে না চলে গেলো। কে আমাদের দায়িত্ব নেবে?’
মায়ের হত্যাকারীদের বিচার চায় কিনা-জানতে চাওয়া হলে সে বলে, ‘হত্যাকারীদের বিচার কখন হবে সেটি জানি না। কিন্তু আমার ছোট বোনটাকে যেন আমি মানুষ করতে পারি সেজন্য যেন রাষ্ট্র আমাদের পাশে দাঁড়ায়। এটি আমার একমাত্র চাওয়া।’
মা মারা যাওয়ার পর বাঘাইছড়ির লাল্যাঘোনা এলাকায় নানার বাড়িতে থাকছে বিলকিছের দুই মেয়ে জান্নাতুল নুর ও জান্নাতুল মাওয়া।
তদন্ত কমিটির প্রধান দীপক চক্রবর্তী জানান, তদন্ত কমিটি ঘটনার সুষ্ঠু প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের সদস্যদের যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে সুপারিশ করবে।
প্রসঙ্গত, গত ১৮ মার্চ রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে সন্ত্রাসীদের ব্রাশফায়ারে নিহত হয় আনসার ও ভিডিপি সদস্য বিলকিছ আক্তারসহ ৮ জন। সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন।