কুতুবদিয়ায় লবণ জমির দাম এক লাফে দ্বিগুণ

Pic Lobon copy

কুতুবদিয়া প্রতিনিধি:

কুতুবদিয়ায় লবণের দামের সাথে পাল্লা দিয়ে লবণ জমির দাম বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। কোন কোন লবণ মাঠে এ মূল্য প্রায় ৩ গুণ ছুঁয়েছে। এতে চাষির চেয়ে লবণ ব্যবসায়ীরা লাভবান আরো বেশি হচ্ছে। উপজেলার ৬ ইউনিয়নে সদ্য সমাপ্ত লবণ উৎপাদন মওসুমে প্রায় ৭ হাজার একর জমিতে লবণ চাষ হয়েছিল। উৎপাদনের শুরুতে চাষিরা হোঁচট খেলেও পরবর্তীতে লবণের দাম বাড়তে থাকে। এমনকি এক সময় প্রতিমণ লবণ চাষিরা ৪২০ টাকায় বিক্রি করেছে। দ্বীপাঞ্চলের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থকরী ফসল লবণ হয়ে ওঠে ‘সাদা স্বর্ণে’। রেকর্ড পরিমাণ দাম বৃদ্ধির ফলে আগামী মৌসুমের জন্য জমির দাম অগ্রিম বেড়ে দ্বিগুণ উঠেছে। কোন কোন মাঠে গত বছরের তুলনায় প্রায় তিনগুণ দাঁড়িয়েছে।

উত্তর ধুরুং ইউনিয়নের চাঁদের ঘোনা লবণ মাঠের চাষি জাফর আলম বলেন, এবার মাঠে লবণ কিছুটা উৎপাদন কম হলেও দাম পেয়েছি ভাল। লবণের দাম এখনো মাঠে প্রতিমণ ৩৬০ টাকা। যে কারণে আগামী অর্থ বছরের জন্য জমির একসনা লাগিয়ত মূল্য প্রতি কাণি (৪০ শতক) ৩০ থেকে ৩৪ হাজার টাকা। লবন ব্যবসায়ীরা এ দামেই লাগিয়ত নিচ্ছে ও চাষিদের কাছে অগ্রিম লাগিয়ত দিচ্ছে।

ওই ইউনিয়নের লবন ব্যবসায়ী (দালাল) মৌং মোহাম্মদ হোছাইন বলেন,লবনের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় লবণ মাঠের দাম বেড়েছে। গত বছর এক কাণি (৪০ শতক) ছিল ১৭ থেকে ১৮ হাজার টাকা। আগামী বছরের জন্য অগ্রিম লাগিয়ত ৩০ হাজার টাকা চলছে বলে তিনি জানান।

লেমশীখালীর লবন ব্যবায়ি সিরাজুল, মোস্তফা বলেন, অনেক লবন মাঠে পড়ে আছে পানির মাঝে। বিক্রি করা যাচ্ছে না। এ ছাড়া অনেকে আরো বেশি দামে বিক্রির আশায় মাঠে মজুদ রেখেছেন। কিন্তু দাম আবার পড়ে যেতে পারে। এবার রেকর্ড পরিমাণ মূল্য বৃদ্ধির ফলে জমির দামও বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। তবে লবন আমদানির সিদ্ধান্তে যে কোন সময় লবন সস্তা হয়ে যাবার সম্ভাবনা রয়েছে।

কৈয়ারবিল নজর আলী মাতবর পাড়ার বিশিষ্ট লবণ চাষি ও ব্যবসায়ী রাইসুল ইসলাম রুবেল বলেন, সদ্য সমাপ্ত উৎপাদিত লবণ মাঠের জমির দাম ছিল ১৭ থেকে ১৮ হাজার টাকা প্রতি কাণি (৪০ শতক)। আকাশচুম্বি লবনের দাম বৃদ্ধির ফলে দাম বেড়ে এখন প্রতি কাণি ৩০ থেকে ৩২ হাজার টাকা। জমির দাম বৃদ্ধির কারণে লবণ উৎপাদনে খরচের পাল্লাও বেড়ে যাবে অনেকটা। এরমধ্যে শ্রমিক মজুরীও কমপক্ষে ১০ হাজার টাকা বৃদ্ধি হতে পারে বলে তিনি জানান। অভিজ্ঞ লবণ চাষিরা আগাম ভাবছেন যে, বেশি দামে জমি লাগিয়ত নেয়ায় অধিকাংশ লবণ চাষি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন বলে তারা জানান।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন