কুতুবদিয়ায় লঞ্চ ডুবি: পন্য হারিয়ে পথে বসেছে ধুরুং বাজারের অর্ধশত ব্যবসায়ি
কুতুবদিয়া প্রতিনিধি:
কক্সবাজারের কুতুবদিয়া আকবরবলী ঘাটে মালামালসহ যাত্রীবাহি লঞ্চ ডুবির ঘটনায় প্রাণহানি না ঘটলেও মালামাল হারিয়েছে ধুরুংবাজারের অর্ধশত খুচরা ব্যবসায়ি। ফলে বাজারের ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়িরা পথে বসেছে চালান হারিয়ে।
ব্যবসায়িরা জানান, চট্টগ্রাম থেকে ব্যবসায়িদের মালামাল ক্রয়ে ঈদের পর প্রথম গত সোমবার ছিল বেশি পন্যের চালান । বাজারের সাড়ে সাত‘শ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ঐদিন মিজবাহ ষ্টোর, জসীম ষ্টোর, মুবিন ষ্টোর, মেসার্স আলম ষ্টোর , কিসোয়ান বিস্কুটের এজেন্ট মৌং কবির, মৌং সিরাজের মুদি দোকান, পটিয়া ষ্টোর, বিশ্বাস ট্রেডিং, হাজি মনিরুজ্জামান ষ্টোর, চাউল ব্যবসায়ি এন. কাদের (প্রকাশ পাকিস্তানি), ঈমা ফ্যাশন, চাউল ব্যবসায়ি এনাম, চৌধুরী ষ্টোর, চাউল ব্যবসায়ি সালামত উল্লাহ ,সাইফুল হক,রাজিব ষ্টোর, রড ব্যবাসায়ী সিরাজুল মোস্তফা সহ ছোট-বড় অর্ধশত দোকানীর চালান ছিল।
সবজি ব্যবসায়ি শাহনেওয়াজ বলেন, সোমবারের লঞ্চ সার্ভিসে সবজি মার্কেটের ১০ জন ব্যবসায়ি বিভিন্ন সবজির চালান পাঠিয়েছিল। সব সবজি তলিয়ে-হারিয়ে গেছে। তারা এখন প্রায় সম্বলহীন। মাংস ব্যবসায়ি মো. নাছির বলেন, তিনি ৫০০ টি কুরবানির পশুর চামড়া ক্রয় করেছেন। এতে লবন দেয়ার জন্য চালান পাঠিয়েছিলেন। ৩১ বস্তা লবন সব পানিতেই মিশে গেছে। লবন না পাওয়ায় চামড়াও বিনষ্টের পথে।
চাউল ব্যবসায়ি চালামত উল্লাহ বলেন, তার ৫০ হাজার টাকার চাউল ও ভুষিব বস্তা পানি থেকে উদ্ধার হলেও বেচার উপযুক্ত না থাকায় তা ঘাটেই পড়ে রয়েছে। লঞ্চ উদ্ধারের পর কিছু মালামাল উদ্ধার হলেও তা বেশির ভাগই ব্যবহার অনুপযোগী। অনেক মালামাল চুরিও হয়েছে।
ব্যবসায়ি মিজবাহ উদ্দিন, সুজিত বাবু, পরিমল ষ্টোরের ম্যানেজার বলেন, চালানের ১৫ টি তেলের ড্রাম উদ্ধার হলেও যারা সাগর থেকে ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার করে এনেছে তারা টাকা দাবি করেন। পরে পুলিশ মধ্যস্থতা করে দিলে প্রতি ড্রাম এক হাজার টাকা করে দিতে হয়েছে তাদের।
অপর দিকে লঞ্চ সার্ভিসটি দূর্ঘটনার মূল কারণ ছিল নিয়মের দ্বিগুন পন্য লোড করা হয়েছিল বলে ব্যবসায়িরা অভিযোগ করেন। তা ছাড়া বেশ কিছুদিন ধরে মূল চালকও নেই। সেদিন লঞ্চ মালিকের ছেলে ট্রলারটি চালনা করছিলেন বলে স্থানীয় লেমশীখালীর ইউপি সদস্য মো. ইছহাক জানিয়েছেন।
বাজারের ব্যবসায়ি ইউপি সদস্য আব্দুর রশিদ বলেন, ব্যবসায়ীদের যাবতীয় পন্য লঞ্চ দূর্ঘটনায় বিনষ্ট হয়ে গেছে,ব্যবসায়িদের ক্ষতিপূরণ আদায়ে কোন দাবী নেই-এমন একটি আবেদন লিখে থানার এস.আই শাহজাহান লিখিত স্বাক্ষর নিতে এসেছিলেন বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) । তবে ব্যবসায়িরা কেউ তাতে স্বাক্ষর না করায় তিনি ফিরে গেছেন বলে জানান।
এদিকে ব্যবসায়িরা লঞ্চ মালিকের কাছে ক্ষতিপূরণ দাবি করে এ ব্যাপারে উপজেলা প্রশাসন এর সহযোগীতাও চেয়েছেন তারা।