কুতুবদিয়ায় যত্র-তত্র অবৈধ গ্যাস-জ্বালানী তেলের ব্যবসা

Gas pic copy

কুতুবদিয়া প্রতিনিধি:

কুতুবদিয়ায় সর্বত্র অবাধে চলছে গ্যাস ও জ্বালানী তেলের অবৈধ ব্যবসা। যে কারণে উপজেলার দু’টি প্রধান বাজারসহ প্রত্যন্ত অঞ্চলে রয়েছে অগ্নিকাণ্ডের মারাত্বক ঝুঁকি। জ্বালানী তেল মজুদ ও বিক্রি, গ্যাস বিক্রয়ে নির্দিষ্ট নিয়মনীতির মাধ্যমে বিস্ফোরক অধিদপ্তর থেকে লাইসেন্স নিতে হয়। উপজেলা সদর বড়ঘোপ বাজার ও ধূরুংবাজারসহ পুরো উপজলায় জ্বালানী তেলের অন্তত ১০টি এবং গ্যাস সিলিন্ডার মজুদ ও বিক্রির ৫/৬টি প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স রয়েছে। অনেকেই ভেজাল ডিজেল বিক্রির ফলে সেচযন্ত্র ও ট্রলার ইঞ্জিন বিকল হচ্ছে প্রতিনিয়ত।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ধুরুং বাজারে সিরাজ স্টোর, পটিয়া স্টোর, চিত্ত স্টোর, কুতুব আউলিয়া মেশিনারী, মিজবাহ স্টোরে জ্বালানী তেল বিক্রি করছেন। এদের দু,এক জনের লাইসেন্স থাকলেও তাদের বিরুদ্ধে ভেজাল ডিজেল-কেরোসিন বিক্রির অভিযোগ করেছেন অনেকেই।

বড় দু’টি বাজার ছাড়াও উপজেলা গেইট, চুল্লার পাড়া, পেয়ারাকাটা, আকবর শাহ রোড, লেমশীখালী চৌমুহনী, দরবার রাস্তা, আকবরবলী ঘাট, শান্তিবাজার, তাবালের চর, ঘাটঘর, হাসপাতাল গেইট, স্টীমারঘাটের আশে-পাশেসহ অন্তত অর্ধশত খুচরা জ্বালানী তেল ও জ্বালানী গ্যাস বিক্রির দোকান গড়ে উঠেছে। অবৈধ গড়ে ওঠা দোকানের গ্যাস সিলিন্ডার ও জ্বালানী তেলের ড্রাম যত্র-তত্র মজুদ ও ফেলে রাখা হচ্ছে।

এমনকি অনুমোদন ছাড়া গ্যাস সিলিন্ডার মুদি দোকান, ফার্মেসী, প্লাস্টিক দোকান, ইজিলোডের দোকান, পোল্ট্রি দোকানেও মজুদ করে বিক্রি করা হচ্ছে। বিষ্ফোরক অ্যাক্ট ১৮৮৪ ও তদধীন প্রণীত তরলীকৃত পেট্টোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) বিধিমালা ২০০৪’র বিধান মতে নির্দিষ্ট স্থানে নির্দিষ্ট সংখ্যায় গ্যাস সিলিন্ডার রাখার নিয়ম থাকলেও অসাধু বিক্রেতারা তা মানছেন না।

অভিযোগ উঠেছে ধুরুং বাজারে গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম প্রাথমিক লাইসেন্স সংগ্রহ করে উপজেলার বিভিন্ন স্পটে অনিয়ম করে অন্তত ১০/১২ ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে দোকানে গ্যাস সিলিন্ডার মজুদ ও বিক্রি করছেন। এ ব্যাপারে তিনি লাইসেন্স সংগ্রহ করেছেন বলেও জানান। নিজস্ব দোকান ছাড়াও বেশ কয়েকটি স্থানে গ্রাহকদের সুবিধার্থে কিছু গ্যাস সিলিন্ডার সরবরাহের কথা তিনি স্বীকার করেন।

একই বাজারের গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রেতা মোজাহিদুল ইসলাম বলেন, লাইসেন্সকৃত দোকান ছাড়া অন্য কোন স্থানে গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রির সুযোগ নেই। তবে অবাধে অনিয়ম করে অনেকেই বিপদজনক গ্যাস বিক্রি করছেন। যে কোন সময়ে বিষ্ফোরণ ঘটে প্রানহানীসহ সম্পদের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কার কথাও জানান তিনি।

যমুনা অয়েল কোম্পানীর ডিলার এসএম মন্জুর বলেন, উপজেলার দু’টি বড় বাজারসহ প্রত্যন্ত অঞ্চলে যত্র-তত্র প্রায় ৩০টি দোকানে অবাধে বিক্রি হচ্ছে জ্বালানী তেল। একই সাথে লাইসেন্স বিহীন গড়ে উঠেছে দাহ্য পদার্থ গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রির দোকান।

এসব অবৈধ ব্যবসায়ীদের কারণে লাইসেন্সধারী ডিলারগণ ক্ষতিগ্রস্তের শিকার হচ্ছে প্রতিনিয়ত। প্রশাসনিক দূর্বলতার সুযোগে অবাধে অবৈধ জ্বালানী তেল ও গ্যাস সিলিন্ডার ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে বিক্রির সুযোগ পাচ্ছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। যে কোন সময়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এমনিতেই কুতুবদিয়ায় এখনো ফায়ার সার্ভিস স্টেশন স্থাপিত হয়নি।

এ ব্যাপারে তিনি সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তর, প্রশাসনসহ ফায়ার সার্ভিস বিভাগের জরুরী পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানান। দায়িত্ব প্রাপ্ত পেকুয়া ফায়ার সার্ভিস স্টেশন’র মোবাইলে যোগাযোগ করলে সংযোগ না পাওয়ায় পরিদর্শকের বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন