কুতুবদিয়ায় দেড় হাজার হেক্টর জমিতে আউশ চাষ হবে না

কুতুবদিয়া প্রতিনিধি:

কক্সবাজারের কুতুবদিয়ায় ঘুর্ণিঝড় রোয়ানু‘র প্রভাবে চলতি আউশ মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেক জমিতেও চাষ সম্ভব হবে না। সাগরের লবণাক্ত পানি ঢুকে কম পক্ষে ৩ হাজার হেক্টর আউশ চাষের জমি তলীয়ে যাওয়ায় চাষিরা এ ক্ষতির সম্মুখীন।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, উপজেলার ৬ ইউনিয়নে ৩ হাজার হেক্টর আউশ জমি রয়েছে। এর মধ্যে উত্তর ধুরুং ইউনিয়নেই রয়েছে সাড়ে ৮ ‘শ হেক্টর আউশ ধান চাষের জমি। আর সম্প্রতি ঘুর্ণিঝড় রোয়ানু‘র আঘাতে সর্বশান্ত ইউনিয়ন হচ্ছে এটি।

এর পরেই রয়েছে আলী আকবর ডেইল ইউনিয়নের প্রায় অর্ধেকটা আউশ চাষের জমি এখন লবণ পানিতে ভরা। দক্ষিণ ধুরুং, কৈয়ারবিল, বড়ঘোপ ছাড়াও লেমশীখালীতে অনেক জমি লবণাক্ত। উত্তর ধুরুং ইউনিয়নের চাষি আবুল ফয়েজ, জমির উদ্দিন, ছৈয়দ আলম জানান, ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে পূর্ণিমা ও অমাবশ্যার অতিরিক্ত জোয়ারের পানি বৃদ্ধির দরুণ গত ৪ বছর ধরে ইউনিয়নের বেশির ভাগ ধানী জমি লবনাক্ত হয়ে বিনষ্ট হয়ে যাওয়ায় ওই জমিতে ধান চাষ করতে পারিছি না। এ অবস্থাতে আবার ঘুর্ণিঝড় রোয়ানুতে ব্যাপক ক্ষতিসাধন হয় জমির। বেড়িবাঁধ খোলা থাকায় সারা বছরই পানিতে হাবুডুবু খাচ্ছে ধানের জমি। অপর দিক গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণ ও জোয়ারের পানি ভিতরে প্রবেশ করে তলীয়ে গেছে শত শত হেক্টর ধানের জমি।

উত্তর ধুরুং ইউনিয়নে দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মো. নুরে আলম মনির জানান, চলতি আউশ মওসুমে ঐ ইউনিয়নের ২০ ভাগ জমিতে আউশ চাষ সম্ভব হবে না। ভারি বর্ষণ হলে লবণাক্ত পানি ধুয়ে গেলে ওই সব জমিতে ধান চাষ করা যেতে পারে। রোয়ানু‘র প্রভাবে ক্ষয় ক্ষতিতে কৃষি বিভাগের বিশেষ কোন বরাদ্ধ পায়নি চাষিরা। তবে চলতি আউশ মওসুমে যতটুকু সম্ভব চাষে সরকারি সহায়তা দিচ্ছে বলে জানা গেছে। এর মধ্যে উপজেলার দেড় হাজার চাষিকে বিনামূল্যে জন প্রতি ৫ কেজি ধান বীজ, ২০ কেজি ইউরিয়া সার, ডিএপি ১০ কেজি, এমওপি ১০ কেজিসহ সেচ সহায়তা বাবদ ৪০০ টাকা দেয়া হচ্ছে বলে কৃষি অফিস জানিয়েছে।

উপজেলা কৃষি সংরক্ষণ কর্মকর্তা মো. গিয়াস উদ্দিন জানান, চলতি আউশ উৎপাদন মওসুমে উপজেলায় ৩ হাজার হেক্টর জমিতে আউম চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে সম্প্রতি রোয়ানু‘র প্রভাবে উপজেলায় ব্যাপক লোনা পানি প্রবেশ করায় জমি লবণাক্ত হয়ে পড়ে। যে কারণে লক্ষ্যমাত্রার প্রায় অর্ধেক জমিতে আউশ চাষ সম্ভব হবে না বলে তিনি জানান।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন