Notice: Trying to get property 'post_excerpt' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 53

Notice: Trying to get property 'guid' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 55

কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে বনানীর আগুন, নিহত ৭

 

নিজস্ব প্রতিনিধি:

বনানীর এফ আর টাওয়ারে আগুন কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে।

ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক (ডিডি) দেবাশিষ বর্ধন জানান, ভবনে প্রচুর দাহ্য পদার্থ রয়েছে, ফলে কাজ করতে আমাদের বেগ পেতে হচ্ছে। আগুন এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। তবে পুরো নিয়ন্ত্রণে আসতে আরও ঘণ্টাখানেক সময় লাগবে।

আমরা সর্বশক্তি দিয়ে কাজ করছি। আমাদের ২৫টি ইউনিট কাজ করছে। ফায়ার সার্ভিসের ডিজি, মেয়র উপস্থিত আছেন। হাইরাইজ ভবনে উদ্ধারকাজ চালানোর জন্য আমাদের সকল ইক্যুপমেন্ট নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি।

আমাদের উদ্ধার কাজে ব্যবহৃত গাড়িগুলো ডিজিটাল, ম্যানুয়াল নয়। এগুলো সেট করতে কিছুটা সময় লাগে তবে, খুব বেশি সময় নয়। আমরা শতাধিক লোকজনকে ভবন থেকে উদ্ধার করেছি। আহতদের উদ্ধার করতে পেরেছি। এখানে একটা ভবন থেকে আরেকটা ভবনের দূরত্ব খুব কম। আমরা দ্রুত তৎপরতা না শুরু করলে আগুনটা অন্য ভবনেও ছড়িয়ে যেতো। আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি, তবে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। পুরো নিয়ন্ত্রণে আসতে আরও ঘণ্টাখানেক সময় লাগবে। এ ভবনে প্রচুর দাহ্য পদার্থ রয়েছে। ভবনের ভেতরে ডেকোরেশনগুলো বেশিরভাগই ফোম ও সিনথেটিক ফাইবার উপাদানের, যে কারণে প্রচুর ধোঁয়া হয়েছে। এর ফলে কাজ করতে আমাদের বেগ পেতে হয়েছে।

এর আগে বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) পৌনে বেলা ১২টা ৪০ মিনিটের দিকে কামাল আতাতুর্ক এভিনিউয়ের ৩২ নম্বর হোল্ডিংয়ে ওই ভবনে আগুন লাগার পুরো এলাকা ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যায়।

উদ্ধারকাজে যোগ দিয়েছে নৌ, বিমান ও সেনাবাহিনীর সদস্যরাও। দুটি হেলিকপ্টার দিয়েও আগুন নেভানোর চেষ্টা চলছে। আটকা পড়াদের সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টার দিয়ে উদ্ধার করা হচ্ছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৭ জন মারা গেছেন বলে জানা গেছে। এর মধ্যে একজন বিদেশি। তিনি শ্রীলঙ্কার নাগরিক।

নিহত ব্যক্তিরা হলেন পারভেজ সাজ্জাদ (৪৭), আমেনা ইয়াসমিন (৪০), মামুন (৩৬), শ্রীলঙ্কার নাগরিক নিরস চন্দ্র, আবদুল্লাহ আল ফারুক (৩২), মাকসুদুর (৬৬) ও মনির (৫০)।

অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় স্থাপিত বনানী থানার কন্ট্রোল রুম থেকে জানানো হয়েছে, আমেনা মারা গেছেন অ্যাপোলো হাসপাতালে। পারভেজ সাজ্জাদ বনানী ক্লিনিকে, নিরস চন্দ্র কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে এবং মামুন, মাকসুদুর ও মনির ইউনাইটেড হাসপাতালে মারা গেছেন। এছাড়া ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছেন আবদুল্লাহ আল ফারুক।

ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা আগুন লাগার কারণ তাৎক্ষণিকভাবে জানাতে পারেননি। কেউ কেউ বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটের কথা বললেও সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ভবনের সামনে বিপুল সংখ্যক উৎসুক জনতার কারণেও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের কাজে বেগ পেতে হচ্ছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

এদিকে অগ্নিকাণ্ডে আহতদের জরুরি চিকিৎসাসেবা প্রদানের জন্য রাজধানীর সকল সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানিয়ে নির্দেশনা প্রদান করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।

১২ তলায় আটকে পড়া ভয়ার্ত একজন তার এক স্বজনকে মোবাইল ফোনে এমনভাবে তার জীবনহানির আশঙ্কার কথা জানিয়ে বলেন, ‘ধোঁয়ায় দম বন্ধ হয়ে আসছে। উপরে উঠতে পারছি না। আমরা ১৫ জন আটকা পড়েছি। বাঁচব কিনা জানি না, দোয়া করো।’

আবদুস সালাম নামের ওই ব্যক্তির স্বজন বিকেল পৌনে ৩টায় কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলছিলেন, ‘একটু আগে পর্যন্ত মোবাইল ফোনে কথা বলছিলাম। কিন্তু এখন আর নেটওয়ার্ক পাচ্ছি না। জানি না ওরা বাঁচবে কিনা।’

এমনিভাবে মৃত্যুর খুব কাছাকাছি অবস্থান করছেন ভবনে আটকে পড়া বহুসংখ্যক নারী, পুরুষ ও শিশু। কেউ কেউ ধোঁয়ায় দম বন্ধ হওয়ার আগে বাঁচার জন্য বহুতল ভবন থেকে লাফ দেন।

ভবন থেকে উদ্ধার হওয়া এক নারী জানিয়েছেন, ভেতরে ধোঁয়ায় অনেকের শ্বাসরুদ্ধ হয়ে আসছে।

আগুন লাগার পরপরই ফাহাদ ইবনে কবীর নামে এক যুবক ফোন দেন মা ফরিদা ইয়াসমিনের কাছে। ফোন করে মাকে জানান, ভেতরে আগুনের ধোঁয়ায় তার নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে। তিনি দম নিতে পারছেন না।

ছেলের সঙ্গে কথা বলার পরপরই মা ফরিদা ইয়াসমিন ছেলের সন্ধানে চলে আসেন এফ আর টাওয়ারের নিচে। সেখানে ছেলের সন্ধানে তিনি আর্তনাদ শুরু করেন। ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, ‘ছেলের সঙ্গে এক ঘণ্টা আগে আমার কথা হয়েছে। এখন মোবাইল নম্বর বন্ধ পাচ্ছি।’

তার ছেলে ১২ তলায় ডাট গ্রুপে কাজ করেন। তিনি সেখানকার আইটি ইঞ্জিনিয়ার।

ফাহাদের বাড়ি লক্ষ্মীপুরের ভবানীপুরে। দুই ভাইয়ের মধ্যে ফাহাদ ছোট।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন