কাজী’র বিরুদ্ধে অর্থের  বিনিময়ে বাল্যবিয়েসহ নানা অপকর্মের অভিযোগ

অভিযোগ

চকরিয়া প্রতিনিধি:

চকরিয়া পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের নিকাহ ও তালাক রেজিস্ট্রার কাজী শহিদুল্লাহ’র বিরুদ্ধে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে বাল্য বিয়ে পড়ানোসহ নানা অনিয়মের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। এনিয়ে সচেতন মহলের পক্ষে পৌরসভার কাহারিয়াঘোনা গ্রামের নুরুল ইসলামের পুত্র সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে বুধবার সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী, সচিব, জেলা প্রশাসক, জেলা রেজিস্ট্রার ও ইউএনও সহ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

অভিযোগে জানা গেছে, চকরিয়া পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ড দক্ষিণ লক্ষ্যারচর এলাকার মৃত কাজী আমানুল হকের পুত্র কাজী মো: শহিদুল্লাহ পিতার পরিবর্তে নিকাহ ও তালাক রেজিস্টার হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে সরকারী কোন ধরণের বিধি বিধানের প্রতি তোয়াক্কা না করে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে একগুঁয়েমীভাবে অপ্রাপ্ত বয়স্ক স্কুল-মাদরাসা পড়ুয়া মেয়েদের বাল্য বিবাহ করাচ্ছে।

অভিযোগ উঠেছে, কাজী শহিদুল্লাহ’র অফিস সহকারী উপজেলার হারবাং ইউনিয়নের মৃত নুরুল হোছাইনের পুত্র মো: জমির উদ্দিনকে দিয়ে বিগত ১৫-১৬বছর ধরে এসব অপকর্ম পরিচালনা করেন। বিশেষ করে সাধারণ মানুষকে মিথ্যা প্রলোভন ও ধোকা দিয়ে এবং জন্ম তারিখ অদল-বদল-নকল করে অপ্রাপ্ত বয়স্ক মেয়েদের বিয়ে পড়াচ্ছে। এমনকি কোন বিবাহের কাবিননামার নকল তুলতে গিয়ে ওই সহকারীকে দিতে হয় ৫শ-১হাজার টাকা। প্রায় সময় কাজী শহিদুল্লাহ নিজ কর্মস্থলে অনুপস্থিত থেকে এবং প্রতিনিয়ত মোবাইল ফোন বন্ধ রেখে তার সহকারী জমিরকে দিয়ে সকল বিবাহ কাবিননামা সম্পন্ন করে আসছেন। এমনও নজির রয়েছে, বাল্য বিবাহের ক্ষেত্রে জন্ম নিবন্ধনে বয়স বাড়ানোর জন্য কনের পিতার কাছ থেকে কাবিননামার ফিসের বাহিরে অতিরিক্ত আরো ৫-১০হাজার টাকা অবৈধভাবে হাতিয়ে নিচ্ছে।

স্থানীয় সূত্রে জানায়, চলতি সনের গত ১৭ নভেম্বর চকরিয়া পৌরসভা ৬নং ওয়ার্ড কমিশনারপাড়া এলাকার আলহাজ্ব মৌলানা নাছির উদ্দিনের মেয়ে মাছাম্মৎ কওকবা জন্নাত (সাবরিন) এর সাথে বাল্য বিয়ে হয় উপজেলার চিরিংগা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড দক্ষিণ বুড়িপুকুর গ্রামের আলহাজ্ব বজল কবিরের পুত্র মো: শফিউল আজমের। অথচ কনে কওকবা জন্নাত (সাবরিন) এর নামে চকরিয়া পৌরসভা থেকে ইস্যুকৃত জন্ম সনদে জন্ম তারিখ ১৯৯৯সনের ২৭জুলাই (১৬বছর), কাজী অফিসের বই নং ৯ ও পৃষ্টা নং ৫ স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে।

আরও অভিযোগ উঠেছে, কাজী শহিদুল্লাহ অবৈধ উপায়ে কাজী ব্যবসা করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে চিরিংগা স্টেশনে বিশাল কাজী মার্কেট স্থাপন এবং চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও চকরিয়া সহ বিভিন্ন স্থানে বিপুল পরিমাণ জমি-জমা কিনেছেন।

এ প্রসঙ্গে প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দাখিলকারী সাইফুল ইসলাম জানান, প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও দুর্নীতি দমন কমিশন কাজী শহিদুল্লাহর এসব অনিয়ম তদন্ত করলে থলের বিড়াল বেরিয়ে আসবে।

এ বিষয়ে বক্তব্য নিতে কাজী শহিদুল্লাহ’র ব্যবহৃত নাম্বারে একাধিকবার চেষ্টা করেও সংযোগ না পাওয়ায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

চকরিয়া থানার ওসি (তদন্ত) কামরুল আজম জানিয়েছেন, বাল্য বিবাহের বিষয়টি প্রমাণিত হলে অভিযুক্ত কাজীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন