কাউখালীতে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে এলজি ও গুলি উদ্ধার: ইউপিডিএফ-জেএসএস’র পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

যঙপডযপ

কাউখালী প্রতিনিধি॥
আগামী ৪ জুনের ইউপি নির্বাচনকে সামনে রেখে অব্যাহত নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে রাঙ্গামাটির কাউখালীর ঘাগড়ায় চার রাউন্ড তাজা গুলিসহ একটি এলজি (দেশীয় বন্দুক) উদ্ধার করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে ঘাগড়া ইউনিয়নের জুনুমাছড়ায় অভিযানটি পরিচালিত হয় বলে জানায় নিরাপত্তা বাহিনী সূত্র, পুলিশ ও স্থানীয়রা। পরে ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করে ইউপিডিএফ ও জেএসএস।

সূত্র জানায়, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে পাওয়া খবরে ওই এলাকায় ঘাগড়া ইউপি নির্বাচনে ইউপিডিএফ সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী জগদীশ চাকমার বাড়ি ও তার আশেপাশের বাড়িঘরে তল্লাশি চালায় রাঙ্গামাটির নিরাপত্তা বাহিনীর নিয়মিত একটি টহল দল। ওই সময় জগদীশ চাকমার বাড়িতে অবস্থানরত চাইনুচিং মারমা (২২) ও চাথোয়াইচিং মারমা (২১) নামে দুই যুবককে আটক করে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।

এছাড়া জগদীশ চাকমার বাড়ির আশেপাশে তল্লাশি চালিয়ে মাটির নিচে পূতে রাখা চার রাউন্ড গুলিসহ একটি দেশীয় বন্দুক এলজি উদ্ধার করে। পরে আটক দুই যুবককে জিজ্ঞাসাবাদ করে ছেড়ে দেয়া হয় বলে জানা যায়।

কাউখালী থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল করিম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেছেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল গেছেন তিনি। সেনাবাহিনী একটি এলজি উদ্ধার করেছে বলে শুনেছেন। কিন্তু আটক কাউকে বা উদ্ধার করা কোন অস্ত্র এখনও থানায় হন্তান্তর করা হয়নি।

এদিকে ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে পরস্পরের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছে ইউপিডিএফ ও জেএসএস।

ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে সংবাদ সন্মেলন করে আঞ্চলিক সংগঠন ইউপিডিএফ সমর্থিত ঘাগড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী জগদীশ চাকমা বলেছেন, এ ধরনের অভিযান সম্পূর্ণ সাজানো, পরিকল্পিত ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ঘটনা। তার জয় নিশ্চিত জেনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী জেএসএস সমর্থিত শান্তিমণি চাকমা ও তার লোকজন ষড়যন্ত্র করে মিথ্যা ও সাজানো তথ্য দিয়ে নিরাপত্তা বাহিনীকে দিয়ে হয়রানিমূলক অভিযান করিয়েছে।

এদিকে বিকালে নিজ এলাকা ঘাগড়ার জুনুমাছড়ায় নির্বাচনী অফিসে জগদিস চাকমা সংবাদ সন্মেলনে দাবি করে বলেন, প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থীর যোগসাজশে তার বাড়িতে বহিরাগত অবস্থান ও মাটিতে অস্ত্র পূতে রাখার অভিযোগ সম্পূর্ণ সাজানো ও বানোয়াট। এ ধরনের মিথ্যা অভিযোগে পরিচালিত অভিযানে আমার বাড়িতে বেড়াতে আসা লোকজনদের বহিরাগত বলে মারধর করলেও কোনো প্রমাণ না পেয়ে পরে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় এবং অস্ত্র রাখার অভিযোগের কোনো ভিত্তি না পাওয়ায় চুপ করে অবস্থান ত্যাগ করে চলে যায় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। জেএসএসের সমর্থিত প্রার্থী শান্তিমণি চাকমা ও তার সমর্থকদের বিরুদ্ধে জনসাধারণের মাঝে ভয়ভীতি প্রদর্শন ও হুমকি ধামকির অভিযোগ করে সুষ্ঠু, অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন দাবি করেন তিনি।

ওই সময় জগদীশ চাকমার সঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যর মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ইউপিডিএফ নেতা চরন সিং তংচংগ্যা, রাহেল তংচংগ্যা, গনতান্ত্রিক যুক ফোরামে কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক থুইক্য চিং মারমা, স্থানীয় ধন্যমনি চাকমা, তনয় চাকমা ও বিনয় চাকমা প্রমূখ।

অন্যদিকে জগদীশ চাকমার অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট দাবি করে জেএসএসের কাউখালী উপজেলার সভাপতি সুবাশ চাকমা পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, জগদীশ চাকমার পক্ষে ইউপিডিএফ ভোটারদের মাঝে ভয়ভীতি ছড়াচ্ছে। তারা শান্তিমণি চাকমাকে ভোট দিলে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে বলে হুমকি দিচ্ছে। জগদীশ চাকমার বাড়িতে তল্লাশি নিরাপত্তা বাহিনীর নিয়মিত অভিযান। সে ব্যাপারে কারও কোনো হাত থাকার অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।

জগদীশ চাকমা এর আগে গত ২৯ মে কাউখালীতে অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনের প্রার্থীদের নিয়ে আয়োজিত সভায় জগদিস চাকমা জেলা প্রশাসকের সম্মুখে ব্যক্তিগত নিরাপত্তার স্বার্থে তার বাড়ীতে বহিরাগত অবস্থান করছে মর্মে বক্তব্য প্রদান করেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন