কর্মস্থলে অনুপস্থিত নাইক্ষ্যংছড়ি পিআইও’র ক্ষমতার উৎস জানতে চান ইউএনও

Pio pic copy

নাইক্ষ্যংছড়ি , প্রতিনিধি:

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. আবিদ হাসান দীর্ঘ ১২দিন যাবত কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন। ১৭ দিনের ছুটি নিয়ে হজ্জ্বব্রত পালন শেষে দেশে ফিরে আসলেও সোমবার পর্যন্ত তিনি নিজ কর্মস্থলে যোগ দেননি। ফলে ওই দপ্তরের কার্যক্রম স্থবিরতায় সংশ্লিষ্টরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। এদিকে বিনা ছুটিতে দীর্ঘদিন পিআইও কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তার ক্ষমতার উৎস জানতে চেয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার।

দুপুর ১টায় উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার এসএম সরওয়ার কামাল পিআইও অফিস পরিদর্শনে গিয়ে হাজিরা খাতাসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্রাদি যাচাই করে উপস্থিত সাংবাদিকদের ক্ষোভের কথা জানান। এসময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, গুরুত্বপূর্ণ এমন একটি দপ্তরে কর্মকর্তা অনুপস্থিত দু:খজনক ব্যাপার। সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডকে বাধাগ্রস্ত করার লক্ষ্যে এমনটি করা হচ্ছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হবে বলেও জানান তিনি।

পিআইও অফিস সূত্রে জানা গেছে, হজ্জ্বে যাওয়ার কথা বলে ১৯ মার্চ থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি নেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো.আবিদ হাসান। তার স্থলে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয় বান্দরবান জেলা সদর পিআইও মো. আলমগীর হোসেনকে।

নাইক্ষ্যংছড়ি প্রকল্প বাস্তবায়ন দপ্তরের অফিস সহকারী সোহেল রানা পার্বত্যনিউজকে জানান হজ্জ্ব শেষে পিআইও দেশে ফিরেছেন। কিন্তু কেন অফিস করছেন না সে বিষয়ে তিনি অবগত নন। প্রতিদিন দূর দূরান্ত থেকে সেবা গ্রহণের জন্য আসা জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন জনগণ ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন বলেও তিনি স্বীকার করেন। অফিসে চলমান টিআর ও কাবিখা কাজে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে বলেও জানান তিনি।

সূত্র মতে, ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (কাবিকা) এবং গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) কর্মসূচির ১ম পর্যায়ের সকল ক্ষেত্রে প্রকল্প বাস্তবায়ন ও অর্থ উত্তোলনের শেষ সময় ৩০ এপ্রিল। কিন্তু পিআইও অনুপস্থিত থাকায় স্বল্প সময়ের মধ্যে এ কাজ সম্পাদন করা দুষ্কর হয়ে পড়বে বলে জানান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন। তিনি আরও জানান, যথাসময়ে কার্যক্রম শেষ করা না হলে টিআর (সাধারণ) বরাদ্ধের ৪৯ লক্ষ ৮৩ হাজার ও কাবিখা (সাধারণ) বরাদ্ধের ৫৮ লক্ষ ৯৪ হাজার টাকা ফেরত যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

উল্লেখ্য, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. আবিদ হাসান এ দপ্তরে যোগদানের পর থেকে নিজ ইচ্ছা মাফিক অফিস কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন। এতে করে পিআইও ব্রিজ, টিআর, কাবিখা খাতে ব্যাপক দুর্নীতি বিস্তার ঘটেছে বলেও জানান নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক জনপ্রতিনিধি।

এদিকে বিনা ছুটিতে থাকা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো: আবিদ হাসানের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন- ‘বরিশাল বিভাগে তার বদলির আদেশ হওয়ায় তিনি কর্মস্থলে যোগ দেননি’’।

অপরদিকে জানতে চাইলে বান্দরবান জেলা ত্রাণ ও পূর্ণবাসন কর্মকর্তা আলী আকবর জানান নাইক্ষ্যংছড়ি পিআইও’র নির্ধারিত ছুটির সময় ছিল ৫ এপ্রিল পর্যন্ত। কিন্তু তিনি এখনো কর্মস্থলে যোগ দেননি। তার মোবাইলেও সংযোগ পাওয়া যাচ্ছেনা বলেও জানান জেলার এ কর্মকর্তা।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন