কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে রেকর্ড গড়লেন তরুণ উদ্যোক্তা হাবিব

Habib Mango 01

আবদুল্লাহ নয়ন, কক্সবাজার:
টেকনাফের বাহারছড়া উপকূলীয় ইউনিয়নের শামলাপুর বাজার থেকে দেড় কিলোমিটার পূর্বে পাহাড়ের গহীনে বয়েছে চোখ জুড়ানো আম বাগান। প্রায় ৬শ’ বিগা জমির উপর গড়ে ওঠা এ বাগানে আমের পাশাপাশি রয়েছে কাঁঠাল, পেয়ারা, লেবু, আমলকি ও জলপাই গাছ। ২০০৭ সালে ২২ হাজার চারা রোপণ করে বিশাল বাগান তৈরির এ মহৎ কাজটি করেছেন হাবিব উল্লাহ হাবিব। দেশের সর্ব দক্ষিণ সীমান্ত উপজেলা টেকনাফের অজপাড়া গা বাহারছড়া ইউনিয়নের এক তরুণ উদ্যোক্তা তিনি।

হাবিব উল্লাহ হাবিব জানান, উপকূলীয় অঞ্চল হিসেবে টেকনাফের বাহারছড়া শামলাপুরে অসংখ্য বেকার যুবক রয়েছে। যারা কাজ না পেয়ে বিভিন্ন অপকর্মে লিপ্ত হয়। দিন দিন যখন বনভূমি অবৈধ দখলে চলে যাচ্ছে। আর পাহাড় হয়ে পড়ছে বৃক্ষ শূণ্য। ফলে নষ্ট হচ্ছে পরিবেশের ভারসাম্য। এসব বিষয় মাথায় রেখে সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত অর্থায়নে বাগান সৃজনে নেমে পড়ি।

তিনি বলেন, এতে একদিকে যেমন পাহাড় তার যৌবন-জীবন ধরে রাখতে পারবে। তেমনি সবুজ শ্যামল বাংলার ঐতিহ্যও বজায় থাকবে। অপরদিকে বেকার যুবকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।

‘এখন এ বিশাল বাগান পরিচর্যায় কাজ করছে ৩০ জন শ্রমিক। যারা মাসিক ভিত্তিতে পারিশ্রমিক নেন। আর এ টাকা দিয়েই তাদের সংসার চালায়।’ যোগ করেন তিনি হাবিব।

তরুণ উদ্যোক্তা হাবিব আরো জানান, গাছ কেটে পাহাড় যখন ন্যাড়া হয়ে যায়। তখন আর পাহাড়ের সৌন্দর্য্ ও জীব-জন্তু থাকে না। এ বাগান সৃষ্টির পর এখানে হরিণ, বানর, হাতি, শেয়াল সহ নানা ধরণের প্রাণীর অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে।

বাগান সৃজনের পর আর্থিক লাভবানের ব্যাপারে তিনি জানান, গত ৪ বছর ধরে তিনি বছরে ৪ থেকে সাড়ে ৪লাখ টাকার আম, কাঁঠাল, পেয়ারা, আমলকি ও জলপাই বিক্রি করেন। এতে খরচ বাদ দিয়ে তার দেড় থেকে দুই লাখ টাকা পর্যন্ত লাভ হয়েছে। এছাড়া গড়ে উঠা অভয়ারণ্যে বিচরণকারী প্রাণীরা এখানের ফলমূল খেয়ে জীবন ধারণ করেন।

দুঃখ প্রকাশ করে তিনি জানান, পরিত্যক্ত অনাবাদী পাহাড়ী জমিকে আবাদী করে বাগান সৃজন করেছি। নিজস্ব অর্থায়নে বাগান করেছি। ৩০ টি পরিবার চলছে এ বাগানের আয় দিয়ে। অথচ কোন মহলই আমাকে সহযোগিতার হাত বাড়ান নি।

তিনি আরো বলেন, দেশের নানা প্রান্তে ক্ষমতা আর অর্থের দাপট দেখিয়ে অনেকে বহু বনভূমি দখল করে নিয়েছে। আর আমি বাগান সৃজন করে বনভূমি রক্ষার পাশাপাশি বেকার যুবকের কর্মংস্থান সৃষ্টির চেষ্টা করেছি।

হাবিব উল্লাহ হাবিব মনে করেন, এলাকায় বেকারত্ব দূর করতে তরুণদেরকেই এগিয়ে আসতে হবে। সেই সাথে তরুণকে সাহায্য-সহযোগিতা করতে হবে সকলকে।

হাবিব জানান, এ বাগানকে আরো প্রসার করার পাশাপাশি বেকারের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে নতুন নতুন কর্মসূচী গ্রহণ করেছি। এ ক্ষেত্রে সরকারী-বেসরকারী কোন ব্যাংক যদি আমাকে কৃষি ঋণ দিয়ে সহযোগিতা করেন। তাহলে আমার পরিকল্পনা বাস্তবে রূপ নিবে এবং আরো বহু বেকার যুবকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন