কটেজ জোন অপরাধের স্বর্গরাজ্য

কক্সবাজার প্রতিনিধি:

পর্যটন জেলা কক্সবাজার শহরের অন্যতম পর্যটন এলাকা হোটেল মোটেল জোন সংলগ্ন সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সামনে গড়ে উঠা বেশ কয়েকটি কটেজে চলছে রমরমা দেহব্যবসা। সংশ্লিষ্ট কটেজের মালিক, ম্যানেজার, পতিতা, খদ্দরের দালাল ও বয় ছেলেদের মদদেই চলছে এই জঘণ্যতম দেহব্যবসা।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, উঠতি বয়সের ছেলেরাই বেশিরভাগ খদ্দর। যার প্রেক্ষিতে যুবসমাজ দিন দিন ধাবিত হচ্ছে অন্ধকারের দিকে। বাড়ছে নারী ধর্ষণ, আর ইভটিজিং এর ন্যায় বড় ধরণের অপরাধ কর্মকাণ্ডে।

অনুসন্ধানে আরো দেখা যায়, একশ্রেণির দিনমজুর থেকে আরম্ভ করে মধ্য বয়সের কর্মবিমুখ মানুষের পদভারে মুখরিত থাকে এই কটেজ গুলো। শুধু তাই নয় অনেক ক্ষেত্রে কলেজের নাম দিয়ে বান্ধবিকে নিয়ে উঠে কোন না কোন কটেজে। যার ফলে বৃদ্ধি পায় অপরাধ প্রবনতা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সামনে অবস্থিত কটেজ জোনের ৩য় গলি ও ৪র্থ গলির দেহ ব্যবসা যেন প্রতিযোগিতা মূলক ব্যবসায় রুপান্তর হয়েছে। এছাড়া দেহ ব্যবসায় সাফল্যের সহিত নাম কুড়িয়েছে সৈকতের ১ম ও ২য় গলি।

বিভিন্ন কটেজ গুলোতে দিন দুপুরে অহরহ চলছে অসামাজিক কার্যকলাপ। আর এই অপরাধী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের মাসিক মাসোহারা, কতিপয় রাজনৈতিক ব্যক্তি ও নাম সর্বস্ব সংবাদকর্মীদের টাকা দিয়ে ম্যানেজ করে এসব ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। মাঝে মধ্যে পর্যটন এলাকার সুনাম রক্ষার্থে এসব কটেজ গুলোতে চলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান। কিন্তু অভিযান শেষ হওয়ার পর থেকে আবার শুরু হয় প্রতিযোগিতামূলক এই ব্যবসা। বর্তমানে কোনভাবেই থামানো যাচ্ছেনা কটেজের এই পতিতা ব্যবসা।

শহরের স্থানীয় সচেতনমহল জানিয়েছেন, এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে পুরো নষ্ট হয়ে যাবে পর্যটন নগরী কক্সবাজারের সামাজিক পরিবেশ। আর পাশাপাশি বদনাম হবে পর্যটন এলাকার যার ফলে দিন দিন পর্যটক বিমুখ হবে কক্সবাজার থেকে।

সুত্রে আরো জানা যায়, হোটেল মোটেল জোন এলাকার দালাল এর নেতৃত্বে বেশ ক’জন পতিতা মহিলা শহরে আগত পুরুষদের নানান ছলে-কৌশলে যৌন চাহিদায় উত্তেজিত করে নিয়ে যায় তাদের পুর্ব নির্ধারিত কটেজে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক বাসিন্দা জানায়, কটেজ জোন এলাকায় একাধিক কটেজ যেন মিনি পতিতালয় পরিনত হয়েছে। অনেক সময় দেখা যায়, স্কুল, কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীরাও তাদের গার্লফ্রেন্ড নিয়ে এসব কটেজ গুলোতে সময় অতিবাহিত করে। কটেজ গুলোতে এভাবে অবাধ যৌনাচারে এলাকার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে।

এছাড়া হোটেল মোটেল জোন, কলাতলী, সুগন্ধা পয়েন্ট, লাবনী পয়েন্ট, সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সামনে সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে ভাসমান পতিতাদের উৎপাত বৃদ্ধি পেয়েছে। এসব পতিতাদের নানা মুখি তৎপরতায় রক্ষণশীল পরিবারের লোকজন অনেক সময় বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ে যায়।

এসব বেআইনী কাজ বন্ধ করতে প্রশাসনিক কোন পদক্ষেপ নেই বললে চলে। যে কারণে বৃদ্ধ থেকে বালক পর্যন্ত সব বয়সের মানুষ ধাবিত হচ্ছে পাপের পথে। বিশেষত ধ্বংসে অতল পথে পা বাড়িয়ে চলেছে দেশের অন্যতম প্রধান শক্তি যুব সমাজ। কথিত আছে এলাকায় রাত ঘনিয়ে এলে সামান্য টাকার বিনিময়ে যৌনকাজ সম্পাদনের জন্য বিভিন্ন দালাল চক্রও কাজ করে। এসব দালালদের হোটেল মোটেল জোনের বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান করতে দেখা যায়।

এ ব্যাপারে একটি ফাইভ স্টার মানের হোটেলের ম্যানেজার জানান, কটেজ জোনের একমাত্র ভরসা পতিতা। তাদের বোর্ডারের কোন আয় নেই।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন