Notice: Trying to get property 'post_excerpt' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 53

Notice: Trying to get property 'guid' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 55

কক্সবাজার জেলায় পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যুর হার বাড়ছে

20170405_154850 copy

কক্সবাজার প্রতিনিধি:

কক্সবাজারের সদরসহ ৮ উপজেলার মধ্যে কুতুবদিয়া, মহেশখালী, টেকনাফসহ বেশিরভাগই হচ্ছে উপকূলবর্তী এলাকা। এসব এলাকায় পুকুরে ডুবে, নদীর স্রোতে অথবা বন্যার পানিতে ভেসে মারা যাচ্ছে শিশু। এ ঘটনা বেশি ঘটে বর্ষা মৌসুমে। এসব শিশুর বেশিরভাগ’ই সাঁতার জানেনা। শিশুদের এ অপমৃত্যুকে অশুভ ইঙ্গিত হিসেবে দেখছেন সচেতন মহল।

তারা বলছেন, অভিভাবকের অবহেলা ও সাঁতার না জানার কারণেই এ মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। তাদের প্রত্যাশা শহর-গ্রাম সবখানে ছোট পরিসরে হলেও স্কুল শিক্ষার্থী ও শিশুদের সাঁতার প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। এতে পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুর ঝুঁকি কমবে।

কক্সবাজার সিভিল সার্জেনের পরিসংখ্যানবিদ মোহাম্মদ রাসেল মোস্তাফার দেওয়া তথ্যে জানা যায়, ২০১৫ সালে পানিতে ডুবে মারা যায় ৮ শিশু, ২০১৬ সালে ৬জন আর ২০১৭ সালের গতকাল পর্যন্ত ৩জন শিশু পানিতে ডুবে মারা যায়।

দিন দিন পানিতে ডুবে শিশুদের মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ায় অভিভাবকরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে। বুধবারে দুপুরে শহরের টেকপাড়া বড় পুকুরে গোসল করতে নেমে পানিতে ডুবে লাবিব ও গিয়াস উদ্দিন নামে ২ শিশু মারা যায়। তারা কেউ সাঁতার জানত না।

এদিকে অনেক সচেতন অভিভাবক সন্তানদের সাঁতার শিখানোর চেষ্টা করলেও তেমন কোন সহজ মাধ্যম না থাকায় হতাশ। এছাড়া সুইমিংপুলগুলোতেও তেমন একটা শিখানোর সুযোগ থাকেনা। কারণ ওখানে দাম, নেই কোন প্রশিক্ষক। এছাড়া তেমন পরিবেশও নেই।

আর এমনই অবস্থায় ‘জীবনের জন্য সাঁতার’ স্লোগান নিয়ে বিনামূল্যে শিশুদের সাঁতার শিখাতে এগিয়ে এসেছে সিআইপিআরবি নামে একটি এনজিও। যারা মূলত বিভিন্ন সহযোগিতামূলক কর্মকাণ্ড করে থাকে। শহরের পশ্চিম বাহারছড়ার কবিতা সরণীস্থ বাহারছড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে বিশেষভাবে তৈরি বিশাল সুইমিং পুলে এ সাঁতার প্রশিক্ষন দেওয়া হচ্ছে। যেখানে সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত ৪ বছর বয়স থেকে ১২ বছর বয়সের শিশুরা সাঁতার শিখছে।

বিশেষ নিরাপত্তা ছাড়াও ২জন নারী আর ২জন পুরুষ প্রশিক্ষক শিশুদের সাঁতার শিখাচ্ছে। শিশুদের ২১টি পদে সাঁতার শেখানো হচ্ছে। এসব শিশুদের সাঁতার শেখানো ছাড়াও ডুবে যাওয়া লোকজনকে উদ্ধারের প্রশিক্ষনও দেওয়া হচ্ছে। সোমবার ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিনই এ সাঁতার প্রশিক্ষন চলছে বলে জানান, সি-সেইভ লাইফ গার্ডের প্রোগ্রাম ম্যানেজার ইমতিয়াজ আহম্মদ।

সিআইপিআরবি’র সহকারী পরিচালক ডাক্তার মো. জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, গত বছরের (২০১৬) অক্টোবর থেকে সিআইপিআরবি’র উদ্যোগে বিনামূলে সাঁতার প্রশিক্ষন শুরু হয়েছে। পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুর হার কমাতে এবং সাঁতারের প্রয়োজনীয়তার প্রতি গুরুত্ব দিয়ে এ প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

দক্ষ প্রশিক্ষক ও স্বাস্থ্যসম্মত পানিতে শিশুদের সাঁতার শেখানো হচ্ছে। ইতোমধ্যে ৬০০ শিশু সাঁতার প্রশিক্ষন নিয়েছে। এর মধ্যে সাড়ে ৩’শ এরও বেশি শিশু সাঁতার শিখেছে। কক্সবাজার ছাড়া বাংলাদেশের ৫টি জেলায় সিআইপিআরবি’র উদ্যোগে শিশুদের সাঁতার প্রশিক্ষন চলছে।

সাঁতার শিখতে পেরে সন্তুষ্ট শিশুরা। তারা বলছে, তারা আগে ডুব দিতেই ভয় পেত। আর এখন তারা নানাভাবে সাঁতার কাটতে পারে। শুধু তাই নয়। তারা ডুবে যাওয়া লোকজনকে উদ্ধার করার প্রশিক্ষনও পেয়েছে।

অভিভাবকরা বলছে, এ ধরনের প্রশিক্ষনের ব্যবস্থাকে সাধুবাদ জানানো উচিত। কারণ কক্সবাজার উপকূলবর্তী এলাকা হওয়ায় সাঁতার না জানা শিশুদের পানিতে ডুবে মারা যাওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। আর এ সাঁতার প্রশিক্ষনের মাধ্যমে অন্ততপক্ষে অপমৃত্যু থেকে রক্ষা পাবে শিশুরা।

কক্সবাজার সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার মহিউদ্দিন মোহাম্মদ আলমঙ্গীর জানান, পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু খুবই দুঃখ্যজনক ব্যাপার। এর ফলে শিশু মৃত্যুর হার বাড়ছে। আর এ মৃত্যুর সংখ্যা কমাতে অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে। সন্তানদের সাঁতার শেখানোর ব্যাপারে গুরুত্ব দিতে হবে। ছোট পরিসরে হলেও সাঁতার প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা রাখা প্রয়োজন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন