কক্সবাজার কারাগারের বেহাল দশা

কক্সবাজার প্রতিনিধি:

কক্সবাজার জেলা কারাগারে গিজ গিজ করছে ধারণ ক্ষমতার চেয়েও ৭ গুণ বেশি বন্দি। ৫৩০জন ধারণ ক্ষমতার কারাগারে রয়েছে এখন সাড়ে ৩ হাজার বন্দি।

গেল কয়েকদিন ধরে কক্সবাজারে জেলা জজ না থাকায় এক দিকে সৃষ্টি হয়েছে জামিন জট। অন্যদিকে প্রতিদিন আসছে নতুন বন্দি। এতে করে বন্দির চাপে হাঁপিয়ে উঠছেন কারা কর্তৃপক্ষ। অবশ্য জেলা জজ গতকাল কক্সবাজার আদালতে যোগদান করেছেন।

সূত্রে জানা গেছে, ধারণ ক্ষমতার চেয়েও ৭ গুণ বেশি বন্দি ও অভ্যন্তরীণ অসংখ্য সমস্যা নিয়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে কক্সবাজার জেলা কারাগার। ৫৩০ জন বন্দীর ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন এই কারাগারে বন্দি রয়েছে ৩৫০০জন। আটক হাজতীদের সাথে সাক্ষাতেও স্বজনদের পোহাতে হচ্ছে অন্তহীন দূর্ভোগ। টাকা দিলে মিলে দেখা আর না হয় ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করেও মিলেনা দেখা। নিরাশ হয়ে ফিরে যেতে হয় বাড়িতে। জনবল সংকটসহ কক্সবাজার জেলা কারাগারে তৈরি হয়েছে নানামূখী সমস্যা। চিকিৎসক সংকটে বেহাল অবস্থায় চলছে কারাগারে বন্দিদের চিকিৎসা সেবা। আবার কারাগারের মেডিকেল এখন ইয়াবা ব্যবসায়ীদের দখলে রয়েছে বলে জানা গেছে।

জেল সুপার মোহাম্মদ বজলুর রহমান আখন্দ জানান, সরকারের নানামুখী পদক্ষেপের কারণে এ কারাগারে বন্দিদের সকলে যেমন ভাল রয়েছেন, অনুরূপভাবে তাদের অসুবিধাও প্রকট।

কর্তৃপক্ষের আন্তরিক প্রচেষ্টা থাকা স্বত্বেও ধারণ ক্ষমতার ৭গুন বেশি বন্দি থাকা এই সব হাজতী কয়েদিদের উপযুক্ত সেবা দিতে তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। কারাগারে কোন হাজতী অসুস্থ হলে সময়মত চিকিৎসা না পাওয়ারও অহরহ অভিযোগ রয়েছে।

সম্প্রতি জামিনে মুক্ত হয়ে কারাগার থেকে বেরিয়ে আসা কয়েজন কক্সবাজার আদালতে জানান, বর্তমান জেল সুপার মোহাম্মদ বজলুর রহমান আখন্দ এই কারাগারে যোগদানের পর থেকে সেখানকার দৃশ্যপট পাল্টে গেছে। তবে, কর্তৃপক্ষের আন্তরিকতায় বন্দি সকলেই খাবার ও থাকা নিয়ে ভাল থাকলেও, কষ্ট পোহাচ্ছেন বাথরুম ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পানি নিয়ে। ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত বন্দির কারণেই এই অবস্থা ক্রমশ প্রকট আকার নিচ্ছে বলে তাদের অভিমত। আবার খাবারের বিষয়েও রয়েছে নান অভিযোগ। সরকারের দেয়া বরাদ্ধকৃত খাবার পাচ্ছেনা কেউ।

এদিকে সোমবার কক্সবাজার কারাগার সরেজমিন পরিদর্শনে বন্দিদের সাক্ষাৎ কক্ষে গিয়ে দেখা গেছে সেখানে বিরাজ করছে ভয়াবহ চিত্র। সাক্ষাত প্রার্থীদের সাথে কারা অভ্যন্তরে বন্দি বেশি থাকায় স্বজনরা পোহাচ্ছেন অন্তহীন দূর্ভোগ। বাহির থেকে কোন স্বজন ভেতরে থাকা তার কোন আত্মীয়কে ডাক দিলে জবাব দিচ্ছেন অন্যজন। স্বল্প পরিসরের একটি সাক্ষাত কক্ষে গাদাগাদি করে এতগুলো লোক স্বজনদের সাথে কথা বলায় দৃশ্যটা দেখে মনে হবে, এই যেন মাছের বাজার। এই অবস্থায় কক্সবাজার কারাগারের সব সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে জরুরী ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া এখন ভুক্তভোগী সকলের দাবি।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন