Notice: Trying to get property 'post_excerpt' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 53

Notice: Trying to get property 'guid' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 55

কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবিরে আনসার কমান্ডার খুন, ১১অস্ত্র লুট ৬৭০ গোলাবারুদ লুট

rohingya_camp

টেকনাফ প্রতিনিধি:
কক্সবাজারের টেকনাফ নয়াপাড়া মোচনী নিবন্ধিত রোহিঙ্গা শরনার্থী শিবিরের আনসার ব্যারাকে চিহ্নিত সশস্ত্র ডাকাত দলের হামলায় আলী হোসেন (৫৫) নামের এক আনসার সদস্য নিহত হয়েছেন। এসময় ব্যারাকের ১১টি অস্ত্র ও ৬’শ ৭০ টি গুলাবারুদ লুট করে ডাকাতরা। নিহত আনসার সদস্য টাঙ্গাইল জেলার শফিপুর ইউনিয়নের মৃত শুক্কুর আহমদের ছেলে।

শুক্রবার ভোররাত সাড়ে ২টার দিকে মোচনী নিবন্ধিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পের শালবাগান আনসার ক্যাম্পে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, টেকনাফের নয়াপাড়া নিবন্ধিত শরণার্থী শিবিরের পাশ্ববর্তী পাহাড় হতে ‘সি’ ও ‘ডি’ ব্লক সংলগ্ন শাল বাগান আনসার ক্যাম্পের সামনে থেকে ৩ ব্যক্তি পায়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন। এসময় কর্তব্যরত আনসার সদস্য অজয় বড়ুয়া তাদেরকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় অপর মুখোশধারী ডাকাতরা তাকে পেছন থেকে চোখ বেঁধে রাখে।

এ সুযোগে ডাকাতরা ভিতরের ব্যারাকে ঢুকে ৮ জন আনসার সদস্যকে রশি দিয়ে বেঁধে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে অস্ত্রাগারে থাকা ১১টি অস্ত্র ও ৬’শ ৭০টি গোলাবরুদ লুটের সময় দায়িত্বরত আনসার কমান্ডার মো: আলী হোসেন বাধা দিলে তাকে সশস্ত্র হামলা চালায়। এহামলায় গুলিবিদ্ধ আনসার ক্যাম্পের কমান্ডার আলী হোসেনকে (৫৫) কে ক্যাম্প হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

তথ্যনুসন্ধানে আরো জানা গেছে, অস্ত্রাগার লুট ও আনসার সদস্যকে গুলি করে যাবার পথে ২.৪৫ মিনিটের দিকে স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল আমিন নামে এক ব্যক্তি তাদের দিকে চর্টের আলো দেখালে তাদেরকে চিনতে পারায় তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথায় ব্যাপক আঘাত করে পাশ্ববর্তী ড্রানে ফেলে পাহাড়ের দিকে পালিয়ে যায়। আহত আবদুল আমিন জাদিমুরা এলাকার আমির হামজার ছেলে। বর্তমানে সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে।

teknaf pic 13-5-16 (8)

শরনার্থী শিবিরের ৪টি আনসার ক্যাম্পের মধ্যে শালবাগান একটি। এ ক্যাম্পে ১৬ জন আনসার সদস্য থাকার কথা থাকলেও ছিলেন ৯ জন। এরা হচ্ছেম, নিহত কমান্ডার মো: আলী হোসেন, অজিত বড়ুয়া, শ্রী চয়ন কুমার শীল, মো: হোসাইন, আবদুর রাজ্জাক, মো: শহিদ, ইব্রাহীম খলিল, মো: আমজাদ ও নায়েক রফিক।

স্থানীয়রা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, চট্টগ্রামে অবস্থানকারী রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাজেশন (আরএসও) নেতা আবদুর রাজ্জাক ও ডি ব্লকের শীর্ষ ডাকাত রফিক, টেকনাফে অবস্থানকারী আবদুল হাকিম ডাকাত, রোহিঙ্গা শরনার্থী শিবিরের মোস্তাক, ডাকাত হারুন, নুর আলম, নেজাম, জকির আহমদ, রশিদ উল্লাহ, হাসান, মো: আয়াছ, হোসেন আহমদ, কেফায়েত উল্লাহ, মাষ্টার রশিদ, ডা: ইউনুছ, খোরশেদ ও মাহামুদুল হাসান ও কুতুপালং শরনার্থী শিবিরের খাইরুল আমিনসহ একটি সংঘবন্ধ ডাকাতদল মিয়ানমার, বিভিন্ন প্রধান সড়কে ডাকাতিসহ খুনের মত ঘটনার সাথে জড়িত।

স্থানীয়রা আরো ধারণা করছেন, এ সিন্ডিকেটের প্রধান (আরএসও) নেতা আবদুর রাজ্জাক কয়েকদিন আগে টেকনাফে এসেছেন এবং কয়েক ধরে পাহাড়ে আনাগোনা করতে দেখা গেছে । তারাই এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।

এ ঘটনার খবর পেয়ে বিজিবির সেক্টর কমান্ডার তানভীর আহমদ, জেলা প্রশাসক আলী হোসেন, ইউএনও শফিউল আলম, ২৯ আনসার ব্যাটালিয়নের কমান্ডিং অফিসার তানজিনা বিনতে এরশাদসহ র‌্যাব, বিজিবি, পুলিশ, আনসার, গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ আবদুল মজিদ জানান, রাত আড়াইটার দিকে একদল মুখোশধারী ক্যাম্পের অস্ত্রগারের প্রহরীকে বেধে রেখে অস্ত্র লুট করে। এসময় পাশে আরেক সদস্য আলী আহমদ(৫৫) ঘুম থেকে জেগে উঠলে তাকে সরাসরি গুলি করে মুখোশধারীরা ২টি এসএমজি, ৪টি শর্টগান, ৫ টি চায়না অস্ত্র ও ৬’শ ৭০ গোলাবারুদ নিয়ে পালিয়ে যায়।

তিনি আরো জানান, রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পশ্চিমে রয়েছে পাহাড়। আর ওই পাহাড়ে ডাকাত দলের আস্তানা রয়েছে বলে স্থানীয়দের কাছ থেকে জানতে পেরেছি। এর প্রেক্ষিতে ওই আস্তানা লক্ষ্য করে অভিযান চালানো হচ্ছে।

ক্যাম্প ইনচার্জ শাহীন উল ইসলাম ঘটনার সতত্যা নিশ্চত করে জানান, অস্ত্রগার লুট ও আলী হোসেন নামে এক আনসার কমান্ডারকে গুলি করে হত্যা করেছে ডাকাতরা।

ক্যাম্প পুলিশের পরির্দশক মো. কাসেম জানান, নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে এবং এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

শরনার্থীদের অভিযোগ, কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের আশ্রয়- প্রশ্রয়ে এরা লালিত-পালিত হয়। এব্যাপারে পুলিশ ক্যাম্প ইনচার্জ আবুল কাশেম জানান, এরা পাহাড়ে অবস্থান করায় তাদেরকে গ্রেফতার করা সম্ভব হচ্ছেনা।

বর্তমানে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত সংখ্যক পুলিশ, বিজিবি, আনসার মোতায়েন করা হয়েছে এবং আতংকের মধ্যে রয়েছে শরনার্থী শিবিরের লোকজন ও এলাকাবাসী।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন