কক্সবাজারে বর্বর নির্যাতনের শিকার আয়াত উল্লাহর খোঁজ নিলেন সদর ইউএনও
কক্সবাজার প্রতিনিধি:
কক্সবাজার সদরের খরুলিয়ায় শিক্ষকের হাতে করুণ নির্যাতনের শিকার আয়াত উল্লাহর পরিবারের পাশে গিয়ে দাঁড়ালেন কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নোমান হোসেন।
সোমবার (৮ জানুয়ারি) দুপুরে তিনি খরুলিয়া ঘাটপাড়াস্থ বাড়িতে যান। ইউএনও নিজেই আহত আয়াত উল্লাহর চিকিৎসার খোঁজ নেন। একই সঙ্গে ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ প্রদান করেন।
এরপর খরুলিয়া উচ্চবিদ্যালয়ে গিয়ে কথা বলেন প্রধান অভিযুক্ত শিক্ষক মাস্টার জহিরুল হক ও মাস্টার বোরহান উদ্দিনের সাথে। এ সময় জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাজনীন সরওয়ার কাবেরী, ইউপি চেয়ারম্যান টিপু সোলতান, ইউপি সদস্য শরীফ উদ্দিনসহ স্থানীয় গন্যমাণ্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
রবিবার (৭ জানুয়ারি) সকাল ১০টার দিকে স্কুল মাঠে বিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাওয়ায় আয়াত উল্লাহ নামে এক অভিভাবককে হাত-পা বেঁধে নির্যাতন চালানোর অভিযোগ ওঠে স্কুলের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনার পর থেকে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদের ঝড় উঠে পুরো এলাকায়। তোলপাড় হয় বিভিন্ন গণমাধ্যম। নির্যাতনের ছবি ও ভিডিও ভাইরাল হয় বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। ঘটনার শিকার আয়াত উল্লাহ খরুলিয়া ঘাটপাড়া এলাকার মাওলানা কবির আহমদের ছেলে।
তিনি পেশায় চিত্রশিল্পী। কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি রনজিত কুমার বড়ুয়া জানান, ঘটনার পরপরই অভিযান চালানো হয়েছে। সবাই পালিয়ে গেছে। কাউকে পাওয়া যায়নি। ন্যাক্কারজনক ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, আয়াত উল্লাহর ছেলে শাহরিয়ার নাফিস আবির খরুলিয়া কেজি এন্ড প্রি-ক্যাডেট স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র। প্রথম শ্রেণিতে ছেলে কেন এ প্লাস পায়নি? তা জানতে রবিবার সকালে স্কুলে যায় আয়াত উল্লাহ। পূর্বঘোষণা ছাড়াই ভর্তি ও মাসিক কেন বাড়িয়েছে? তাও জিজ্ঞেস করে ওই অভিভাবক। এ নিয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক মাস্টার বোরহান উদ্দিনের সাথে কথা কাটাকাটি হয়। এ সময়ে পার্শ্ববর্তী খরুলিয়া উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জহিরুল হককে ডাক দেয় বোরহান। স্কুল আঙ্গিনায় শুরু হয় ত্রি-মুখি তর্ক বিতর্ক। ঘটনাটি হাতাহাতির পর্যায়ে চলে যায়।
এ সময় আয়াত উল্লাহ ছিল সম্পূর্ণ একা। মাস্টার জহিরুল হক আয়াত উল্লাহকে প্রশ্ন করে, কেন এসব জানতে চাচ্ছ? এতসব জানার তোমার কি দরকার? প্রশ্ন করে ধাক্কা দেয়। বোরহান উদ্দিনও মারে আরেক ধাক্কা। মাটিতে পড়ে যায় অসহায় অভিভাবক আয়াত উল্লাহ। এরপর রশি দিয়ে তার হাত ও পা বেঁধে ফেলা হয়। মারধর করতে থাকে দুই শিক্ষকসহ তাদের লেলিয়ে দেয়া বাহিনী। আয়াত উল্লাহকে লাথি ও থুথু মারে শিক্ষক জহিরুল হক ও বোরহান উদ্দিন। ঘটনায় কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পায়নি।
নির্যাতিত আয়াত উল্লাহ বাদী হয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় ৭জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে।
এমন শিক্ষকদের কাছ থেকে ছাত্রদের জন্য ভালো কিছু আশা করা যাই না।