কক্সবাজারের ৪টি আসনেই বিপুল ভোটে জয়ী আওয়ামী লীগ
বিশেষ প্রতিনিধি, কক্সবাজার:
কক্সবাজারে ৪টি সংসদীয় আসনে ২৮ জন প্রার্থী প্রচার প্রচারণা চালালেও প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ছিলো তিনটি আসনে নৌকা ধানের শীষ ও মহেশখালী-কুতুবদিয়ায় নৌকা-ধানের শীষ ও আপেল ত্রিমূখী।
জেলার ৪টি সংসদীয় আসনে ৪টি পৌরসভা ও ৭১টি ইউনিয়নে ভোটার সংখ্যা ১৩ লাখ ৬৫ হাজার ২০৪ জন। এরমধ্যে নারী ভোটার ৬ লাখ ৫৭ হাজার ৩৭৩ জন এবং পুরুষ ভোটার ৭ লাখ ৭ হাজার ৮৩১ জন।
তবে প্রাপ্ত বেসরকারি ফলাফলে জানাগেছে, ১১ লাখ ৪৭ হাজার ৩৩৩ ভোট কাস্ট হয়েছে।
কক্সবাজারের ৪ টি আসনে বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছেন মহাজোট প্রার্থী তথা আওয়ামী লীগের সব প্রার্থীরা।
কক্সবাজার-১ চকরিয়া-পেকুয়া আসনে জাফর আলম (নৌকা) ২ লাখ ৭৪ হাজার ৮৬৩ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। এখানে ধানের শীষের অ্যাড. হাসিনা আহমদ পেয়েছেন ৫৫ হাজার ২৬০ ভোট।
কক্সবাজার-২ মহেশখালী- কুতুবদিয়া আসনে আশেকুল্লাহ রফিক (নৌকা) ২ লাখ ১৩ হাজার ০৯২ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। এখানে জামায়াতের হামিদুর রহমান আযাদ (আপেল) পেয়েছেন ১৮ হাজার ৫৮৭ ভোট পেয়ে হয়েছেন ২য়। আর ধানের শীষের প্রার্থী আলমগীর ফরিদ হয়েছেন ৩য়।
কক্সবাজার-৩ সদর-রামু আসনে সাইমুম সরওয়ার কমল (নৌকা) ২ লাখ ৫৩ হাজার ৮২৫ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। এখানে ধানের শীষের লুৎফুর রহমান কাজল পেয়েছেন ৮৭ হাজার ৭১৮ ভোট।
কক্সবাজার-৪ উখিয়া-টেকনাফ আসনে শাহীন আক্তার (নৌকা) ১ লাখ ৯৬ হাজার ৯৭৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। এখানে (ধানের শীষের) শাহজাহান চৌধুরী পেয়েছেন ৩৭ হাজার ০১৮ ভোট।
গত সংসদেও আশেকুল্লাহ রফিক এবং সাইমুম সরওয়ার কমল এমপি ছিলেন। তাঁরা আবারো এমপি নির্বাচিত হলেন। আর নতুন এমপি নির্বাচিত হলেন জাফর আলম ও শাহীন আক্তার।
এদিকে নির্বাচনে বিভিন্ন অনিয়ম, সন্ত্রাস ও কেন্দ্র দখলের অভিযোগ এনেছেন ধানের শীষের প্রার্থী জেলা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান চৌধুরী, হাসিনা আহমদ, লুৎফুর রহমান কাজল ও আপেল প্রতীকের প্রার্থী হামিদুর রহমান আযাদ। দুপুরে হামিদ আযাদের প্রধান এজেন্ট জাকের হোসাইন একই অভিযোগে নির্বাচন বর্জনেরও ঘোষণা দেন।
ভোটের দিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরে জানাগেছে, কিছু কিছু অনিয়ম, গোলযোগ ও সংঘাত-সংঘর্ষের কথা।
জানাগেছে, টেকনাফের লেদা কেন্দ্রে, উখিয়ার আন্জুমান পাড়া কেন্দ্রে, রামুর গর্জনিয়া ফয়জুল উলুম মাদরাসা কেন্দ্রে, শহরের হাশেমিয়া মাদরাসা কেন্দ্রে, সদরের তেতৈয়া মাদরাসা কেন্দ্রে, পেকুয়ার রাজাখালী মাতবর পাড়া কেন্দ্রে ও মহেশখালীর কয়েকটি কেন্দ্রে সংঘাত সংঘর্ষ ও গোলযোগের খবর।
এসব কেন্দ্রে গোলযোগের কারণে আহত হয় দেড় শতাধিক ভোটার। শহরের হাশেমিয়া মাদরাসা কেন্দ্রে আহত হন লুৎফুর রহমান কাজলের প্রধান এজেন্ট রফিকুল হুদা চৌধুরী ও উখিয়ার আন্জুমান পাড়া কেন্দ্রে আহত হন এক মহিলা মেম্বার।
পেকুয়ার রাজাখালী মাতবর পাড়া কেন্দ্রে প্রতিপক্ষের হাতে নিহত হয় আব্দুল্লাহ ফারুক নামের এক যুবক। এখানে আহত হয় আরো ৯জন।
তবে জেলা প্রশাসক মোঃ কামাল হোসেন এ প্রসঙ্গে বলেন, তেমন কোনো ঝামেলা ছাড়াই ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে।
উল্লেখ্য, ৩০ ডিসেম্বর ভোটের দিনে কক্সবাজার জেলায় নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন, ৮৬ জন ম্যাজিস্ট্রেট, ৩০ প্লাটুন সেনাবাহিনী, ৬ প্লাটুন নৌবাহিনী, ২ কোম্পানি র্যাব, ৪৮ প্লাটুন বিজিবি ও পুলিশের ১০টি স্ট্রাইকিং ফোর্স ।