এক যুগে ৩ দফা আহ্বায়ক কমিটি

 

কুতুবদিয়া প্রতিনিধি:

দীর্ঘ এক যুগ ধরে জাতীয়তাবাদী যুবদল কুতুবদিয়া উপজেলা শাখা চলছে আহ্বায়ক কমিটি দিয়েই। আর এ ১২ বছরে ৩ দফা আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। ইউনিয়ন যুবদলের ৩ মাসের আহ্বায়ক কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে প্রায় দু‘বছর আগে। ওয়ার্ড কমিটিগুলোর সবগুলোতে পূর্ণাঙ্গ কমিটি এখনো গঠন করা সম্ভব হয়নি। তথ্য সংশ্লিষ্ট সূত্রের। ২০০৩ সালে সর্বশেষ উপজেলা যুবদলের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন ও কাউন্সিলে মাষ্টার মোর্শেদুল আলম সভাপতি নির্বাহিত হন। এর পর আর সম্মেলন হয়নি। ২০০৫, ২০০৯ ও ২০১৩ সালে আহ্বায়ক কমিটি গঠিত হয়।

সরকারি দলের সহযোগী সংগঠনগুলো মাঠে সক্রিয় থাকলেও বিএনপি ও তার অংগ সংগঠন গুলো নানা কারণে বিশেষ করে মামলা-হয়রানির ফাঁদে পড়ে আন্দোলন স্থবির পর্যায়ে। এ থেকে উঠে আসতে ইতিমধ্যে জেলা যুব দলের পক্ষ থেকে আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে উপজেলা যুবদলের সম্মেলন ও কাউন্সিল করার জোর তাগিদ দেয়া হয়েছে। এ তাগিদে উপজেলা যুবদল, ইউনিয়ন যুবদল ও অসমাপ্ত ওয়ার্ড কমিটিগুলো ঢেলে সাজাতে নড়ে-চড়ে বসছে তৃণমুল নেতা-কর্মীরা। এরই মধ্যে সদস্য ফরম সংগ্রহ কার্যক্রমও শুরু হয়েছে আনুষ্ঠানিক ভাবে। কমিটি গঠনে তৃণমুল পর্যায়ে চাঙ্গাভাব দেখা দিলেও আবার হোঁচট লেগেছে কর্মীদের মাঝে।

আগস্টে কুতুবদিয়ায় জাতীয়তাবাদী যুব দলের ৩ ইউনিয়ন শাখার সম্মেলন ও কাউন্সিল হবার কথা থাকলেও তা স্থগিত করা হয়েছে। গত ২০ আগস্ট ধক্ষিণ ধূরুং, ২৩ আগস্ট লেমশীখালী ও ২৪ আগস্ট আলী আকবর ডেইল ইউনিয়নে সম্মেলনের পূর্ব নির্ধারিত তারিখ ছিল।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি ও অংগ সংগঠনগুলোতে চাঙাভাব ফিরিয়ে আনতে জাতীয়তাবাদী যুবদলের ইউনিয়ন কমিটিগুলো সম্পন্ন করার উদ্যোগ নেয়া হলেও  তা স্থগিত করা হলো। নানা চাপের মধ্যে ও মামলা হয়রানির শিকার বিএনপি ও তার অংগ সংগঠন ঝিমিয়ে পড়ায় সম্মেলন বেশ গুরুত্বপূর্ণ ছিল বলে নেতা-কমীরা মনে করেছিল। তবে হঠাৎ যুবদলের ইউনিয়ন শাখাগুলোর নির্ধারিত সম্মেলন স্থগিত হওয়ায় তারা হতাশা প্রকাশ করেন অনেকেই।এ ছাড়া স্থগিত হওয়ার বিষয়ে একেক নেতার ভিন্ন ভিন্ন  বক্তব্য পাওয়া যায়।

দক্ষিণ ধূরুং ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের সভাপতি ছলিম উল্লাহ বলেন, ৩ বছর আগে হাউসের মাধ্যমে নির্বাচিত হয়ে  পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন হলেও অনুমোদন  মেলেনি আজ পর্যন্ত। আহ্বায়কের মন মতো না হওয়ায় অনুমোদন না দিয়ে পছন্দের লোকদের নেয়ার পায়তারা করছে বলে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন।দক্ষিণ ধুরুং ইউনিয়ন যুবদলের সম্ভাব্য সেক্রেটারি প্রার্থী নির্যাতিত কর্মী নাজেম উদ্দিন নাজু বলেন, হঠাৎ সম্মেলন স্থগিত করায় তৃণমুলের নেতা-কর্মীদের মাঝে নানা সন্দেহ দেখা দিয়েছে।

পরবর্তীতে ইউনিয়ন যুবদলের কমিটি গঠনে “পকেট কমিটি” করে সুবিধা ভোগীদের আবির্ভাব ঘটতে পারে বলে আশংকা করেন তিনি। ৩টি ইউনিয়নের সম্মেলন ও কাউন্সিল পিছিয়ে যাওয়ায় কর্মীদের মাঝে ভাটার প্রভাব পড়েছে বলে তিনি মনে করেন। একই ইউনয়নে যুবদলের আহ্বায়ক মোজাম্মেল হক বলেন, কয়েকটি ওয়ার্ডের সম্মেলন হয়নি। তা ছাড়া স্থানীয় চেয়ারম্যান  কিছু কিছু ওয়ার্ডের দায়িত্বশীলরা দলের অনুপযুক্ত কর্মীতে পরিণত হওয়ায় তাদের স্থলে উপযুক্ত কর্মীকে নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বলে তিনি জানান।

উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক হুমায়ুন কবির বলেন, জেলা যুবদলের নির্দেশ রয়েছে আগামী মাসের মধ্যে সম্মেলন শেষ করার । এর আগে ইউনিয়ন  কমিটিগুলো ঢেলে সাজাতে হচ্ছে। যুবদলের ইউনিয়ন শাখার সম্মেলন স্থগিতের ব্যাপারে তিনি বলেন, চলতি মাসে নানা প্রতিক’ল ও শীর্ষ নেতৃবৃন্দ সময় দিতে না পারায় সম্মেলন স্থগিত করা হয়েছে। ঈদের পরেই তা সমাপ্ত হবে বলে তিনি জানান।  উপজেলা যুব দলের স্থবিরতা ও অকার্যকর ভ’মিকা সম্পর্কে সদস্য সচিব কামরুল হাসান বলেন , উপজেলা যুবদলের আহ্বায়কের নিজের ওয়ার্ডে এখন পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করতে পারেননি। সেক্ষেত্রে কিভাবে ইউনিয়ন ও উপজেলা সম্মেলন করা সম্ভব হবে। উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক জসীম উদ্দীন সিকদার সম্মেলনের স্থগিতের ব্যাপারে সঠিক কারণ জানাতে পারেননি।

তবে উর্ধ্বতন নেতৃবৃন্দের পরামর্শে স্থগিত করেছেন বলে শেষে জানিয়েছেন। ইউনিয়ন যুবদলের সম্মেলনের তারিখ ছিলনা বলে জানান লেমশীখালী ইউনিয়ন বিএনপি‘র আহ্বায়ক ও চেয়ারম্যান আক্তার হোছাইন। উপজেলা বিএনপি‘র সহ-সভাপতি ও দক্ষিণ ধূরুং ইউপি চেয়ারম্যান ছৈয়দ আহমদ চৌধুরী বলেন, এখনো কিছু কিছু ওয়ার্ড যুবদলের কমিটি অসমাপ্ত রয়েছে। যে কারণে ইউনিয়ন যুবদলের সম্মেলন করা সম্ভব হচ্ছেনা। তৃণমুল থেকেই দলের নেতৃত্ব গুছিয়ে আনার প্রক্রিয়া চলছে বলে তিনি জানান।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন