উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প ভিত্তিক বাজারে অর্ধশতাধিক জুয়েলার্সের দোকান

উখিয়া প্রতিনিধি:

উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্প বাজারে ব্যাঙের ছাতার মত গড়ে উঠেছে অর্ধশতাধিক জুয়েলার্সের দোকান। হঠাৎ অসংখ্য দোকান দেখে রীতিমত থমকে গেছে স্থানীয় জনগণ। সরকারি বিনা অনুমতিতে কোন প্রকার প্রয়োজনীয় লাইসেন্স ছাড়াই এসব জুয়েলার্সের দোকান খোলা হয়েছে। আর প্রতিদিন ওই দোকানে স্বর্ণ ক্রয় করতে এসে প্রতারিত হচ্ছে অনেকেই। এমনও অভিযোগ রয়েছে নিম্নমানের ও নকল স্বর্ণ বিক্রি করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে জুয়েলার্সের দোকানীরা।

গত ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের নির্যাতনের শিকার হয়ে লক্ষ লক্ষ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী উখিয়ার কুতুপালং সহ ১২টি ক্যাম্পে আশ্রয় নেয়। ওই ক্যাম্প গুলো অভ্যন্তরে শতাধিক ছোট বড় বাজার ও গড়ে উঠেছে।

সরজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, কুতুপালং, বালুখালী, থাইংখালী, পালংখালী, মধুরছড়া, লম্বাশিয়া, জামতলী ও ময়নার ঘোনা সহ ক্যাম্প ভিত্তিক বাজারে অর্ধশতাধিক জুয়েলার্সের দোকান খোলা হয়েছে। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে পুঁজি করে জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে সংঘবদ্ধ স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা রাতারাতি জুয়েলার্সের দোকান খুলে বসে।

বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি কক্সবাজার শাখার সাধারণ সম্পাদক হাজী ওসমান গণি গ্রাহকরা স্বর্ণ ক্রয় করতে গিয়ে হয়রানি ও প্রতারনা শিকার হচ্ছে এমন সত্যতা শিকার করে বলেন, হঠাৎ করে উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প ভিত্তিক বাজারে অসংখ্য স্বর্ণের দোকান দেখে আমরাও রীতিমত অবাক হয়েছি। যেখানে ৩টি দোকানে স্বর্ণ ক্রয় বিক্রয় কঠিন সাধ্য ছিল তৎমধ্যে অর্ধশতাধিকের উপরে জুয়েলার্সের দোকান কিভাবে স্বর্ণের ব্যবসা করছে আমরাও ভেবে উঠতে পারছি না। সংগঠন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বৈঠক আহ্বান করেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা জানায়, যে কোন জুয়েলার্সের দোকান খোলার পূর্বে সরকারি প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ, ইনকাম ট্যাক্স, ট্রেড লাইসেন্স এমনকি পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড় পত্র নিতে হয়। কোন প্রকার সরকারি এসব ডুকুমেন্টের তোয়াক্কা না করে রাতারাতি স্বর্ণের দোকান খুলে বসে কতিপয় স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা।

অভিযোগে প্রকাশ, রামু, মিঠাছড়ি, ওমখালীসহ জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে অদক্ষ স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে একই মাসে অর্ধশতাধিক দোকান চালু করে। এসব দোকানে নিম্নমানের ও নকল স্বর্ণ বিক্রি করে রোহিঙ্গা ক্রেতাদের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। শুধু তাই নয়, এসব স্বর্ণ দোকানের আড়ালে চোরা চালান ব্যবসায়ও জড়িত হয়েছে তারা। ইয়াবা, বিভিন্ন অবৈধ মাদকসহ স্বর্ণ পাচারেরও গুরুতর অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। এছাড়াও স্বর্ণের মূল্যের তালিকা টাঙিয়ে দেওয়ার নিয়ম থাকলেও কোন দোকানেই এ ধরনের তালিকা নেই। ইচ্ছামত স্বর্ণের দাম হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি উখিয়া উপজেলা শাখার সভাপতি মিন্টু ধর ও সাধারণ সম্পাদক আশিষ ধর জানান, কুতুপালং, থাইংখালী, বালুখালীসহ রোহিঙ্গা ক্যাম্প ভিত্তিক যেসব জুয়েলার্সের দোকান রয়েছে এগুলো সমিতির অন্তভূক্ত নই। কোথায় থেকে এসে রাতারাতি স্বর্ণ দোকানের ব্যবসার নামে অসংখ্য গ্রাহকের সাথে প্রতারনা করছে এমন অভিযোগ আমরা প্রতিদিন শুনতে পারছি। অপর এক প্রশ্নের জবাবে নেতৃবৃন্দরা বলেন, এ বিষয়টি আমরা জেলা জুয়েলার্স সমিতিকে অবহিত করেছি।

সচেতন মহলের দাবি রাতারাতি অর্ধশতাধিক জুয়েলার্সের দোকানে আসলে স্বর্ণের ব্যবসার নামে কি চলছে উপজেলা প্রশাসনের পাশা-পাশি রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা নজরদারী করলে আসল রহস্যের থলের বিড়াল বেরিয়ে আসবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন