উখিয়া ও টেকনাফে রিকেটস রোগীর সংখ্যা বাড়ছে

Ukhia Pic 30.04

উখিয়া প্রতিনিধি:

কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফে আশংকা জনক হারে রিকেটস রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ১ থেকে ১৫ বছর বয়সী শিশুরা এ রোগ আক্রান্ত হয়ে থাকে। মূলত ভিটামিন, ক্যালসিয়াম ও ফসফরাসের অভাবে শিশুরা রিকেটস রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে। প্রাথমিক পর্যায়ে এ রোগ ধরা পড়লে চিকিৎসার মাধ্যমে পুরোপুরি নির্মূল করা সম্ভব। তবে সরকারি ভাবে রিকেটস রোগ নির্মূল বা প্রতিরোধে তেমন কার্যক্রম ও পদক্ষেপ না থাকায় এ রোগ জ্যামিতিক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

জানা যায়, রিকেটস রোগ পরীক্ষা ও চিহ্নিতকরণ এবং আক্রান্ত শিশুদের সংখ্যা নিরূপনের জন্য ২০০৮ সালে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ইউনিসেফ ও এসএআরপিভি বাংলাদেশ যৌথ ভাবে জাতীয় পর্যায়ে এক জরীপ চালায়। উক্ত জরীপে দেখা যায়, কক্সবাজারের উখিয়া, টেকনাফ, চকরিয়া, মহেশখালী উপজেলায় রিকেটস রোগ প্রায় মহামারি আকার ধারণ করেছে। ২০০৪ সালে হেলেন কেয়ার ইন্টারন্যাশনাল পরিচালিত দেশব্যাপী এক জরীপে কক্সবাজার জেলার উখিয়া ও টেকনাফসহ বিভিন্ন উপজেলায় ১ থেকে ১৫ বছর বয়সী শিশুদের সব চেয়ে বেশি রিকেটস আক্রান্ত রোগী সনাক্ত করা হয়। বর্তমানে জেলার সীমান্তবর্তী উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলায় প্রায় দুই হাজারের অধিক শিশু রিকেটস রোগে আক্রান্ত হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে।

জরীপ কাজে অংশ নেওয়া এসএআরপিভি বাংলাদেশ সংস্থার কর্মকর্তারা জানান, সাধারণত ৬ থেকে ৪৮ মাস বয়সের শিশুদের মধ্যে রিকেটস রোগের লক্ষণ সমূহ নানা মাত্রায় স্পষ্ট হতে দেখা যায়। আবার অনেকে মায়ের গর্ভ থেকেই রিকেটস রোগে আক্রান্ত হতে পারে। গর্ভবতী মায়ের খাবারে ভিটামিন ও ক্যালসিয়ামের অভাব হলে শিশুর রিকেটস হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, রিকেটস হাড়ের একটি মারাত্মক রোগ। এ রোগ শিশুদের হাড় নরম ও দুর্বল করে। সাধারণত শিশুর পা এবং অনেক সময় হাত বা দেহের অন্যান্য হাড় নরম ও দুর্বল হয়ে বেঁকে যায়।

খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায়, এসএআরপিভি বাংলাদেশ নামক সংস্থাটি রিকেটস রোগ প্রতিরোধ ও প্রতিকারে উখিয়ায় ২০১৩ সালে ডিজিভ্যালিটি সেন্টার স্থাপন করেছে। দরিদ্র ও গরীব রিকেটস রোগীদেরকে বিনা মূল্যে চিকিৎসা ও অপারেশন করে এ রোগ নির্মূলে কাজ করে যাচ্ছে। উক্ত সংস্থার মতে প্রাথমিক অবস্থায় চিকিৎসা করা হলে এ রোগ থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। তবে অভিভাবকদের সচেতনতার অভাবে এ রোগ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন