উখিয়ায় স্কেভেটর দিয়ে প্রকাশ্যে পাহাড় কর্তন: প্রশাসন নিরব

উখিয়া প্রতিনিধি:

উখিয়ায় স্কেভেটর দিয়ে প্রকাশ্যে পাহাড় কর্তন করে ডাম্পার যোগে মাটি সরবরাহ করা হচ্ছে। মরিচ্যার দক্ষিণ পার্শ্বে গুরামিয়া গ্যারেজ সংলগ্ন বায়ানুল কোরআন মাদ্রাসার সংনিকটে বিশাল পাহাড় কর্তনের ঘটনা নিয়ে মসজিদের মুসল্লি ও স্থানীয় গ্রামবাসীদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করলেও সংশ্লিষ্ট প্রশাসন নিরব রয়েছে এমন অভিযোগ সচেতন মহলের।

উখিয়া রেঞ্জের হলদিয়া বন বিট কর্মকর্তা মো. মহিউদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, কোন অবস্থাতেই পাহাড় কর্তন করতে দেওয়া হবে না। উপরস্থ কর্মকর্তার সাথে কথা বলে অভিযান পরিচালনা করা হবে।

শুক্রবার বিকেলে সরজমিন পরির্দশন করে দেখা যায়, গুরামিয়া গ্যারেজ বায়ানুল কোরআন মাদ্রাসা সংলগ্ন বিশাল পাহাড়ে স্কেভেটর দিয়ে মাটি কর্তন করা হচ্ছে। আবার ওই মাটি ডাম্পার যোগে পরিবহন করে নিয়ে যাওয়া হয়। সড়ক ও জনপদ বিভাগের নাম সাদা কাগজে লিখে ডাম্পারে সামনে লাগানো হয়।

হযরত ওমর ফারুক (রা:) মসজিদ পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সোলতান আহমদ ও কয়েকজন স্থানীয় মুসল্লি অভিযোগ করে বলেন, শুক্রবার সকাল থেকে ঠিকাদারের লোকজন এসে স্কেভেটর দিয়ে পাহাড়ের মাটি কর্তন শুরু করে। ডাম্পার দিয়ে মাটি ভর্তি করে ব্রিজের ডাইভেশন কাজে ভরাট করছে। পাহাড় কর্তন না করার জন্য প্রতিবাদ করলেও ঠিকাদারের লোকজন ক্ষমতার প্রভাব দেখিয়ে তা কর্ণপাত করছেনা।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে, কক্সবাজার সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী পিন্টু চাকমা বলেন, সড়ক সম্প্রসারণ করতে হলে এ রকম পাহাড় কাটা না করার কোন সুযোগ নেই। তার পরও পাহাড় কাটার বিষয়টি আমি খতিয়ে দেখব।

খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায়, টেকনাফ সড়ক সম্প্রসারণ কাজে নিয়োজিত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান টিসিসিএল এন্ড মের্সাস জামিল ইকবাল লি. এর দায়িত্বরত লোকজন প্রকাশ্যে বিশাল পাহাড় কেটে মাটি নিয়ে তাদের উন্নয়ন কাজে ব্যবহার করছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, গেল বৎসর ওই পাহাড়ে সামান্য মাটি কাটার ঘটনা নিয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর বাদী হয়ে হয়রত ওমর ফারুক (রা:) মসজিদ পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সোলতান আহমদ, মসজিদের পেশ ইমাম ও বায়ানুল কোরআন মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা মৌলানা রেজাউল করিম আফজল সহ ১২ জন নিরহ ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। যার মামলা নং- ১২/১৮। তারিখ: ১২/০৪/২০১৭ইং।

তারা আরও বলেন, ওই মামলায় ৬ জন লোক জেল খেটেছেন বাকী ৬জন এখনো পলাতক। মসজিদ পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সোলতান আহমদ ও ইমাম মৌ: রেজাউল করিম আফজল বলেন, মাটি কাটায় জড়িত না থাকার পরও তারা আজ মিথ্যা মামলায় আসামি হয়ে আমরা পালিয়ে বেড়াচ্ছি।

মুসল্লিদের দাবি একই পাহাড়ে স্কেভেটর দিয়ে প্রকাশ্যে ঠিকাদারের লোকজন পাহাড় কর্তন করে ডাম্পার যোগে মাটি নিয়ে যাওয়ার ঘটনা নিয়ে পূর্বের ন্যায় নিরহ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আবারও মিথ্যা মামলা হবে বলে আশাঙ্কা রয়েছে।

টিসিসিএল এন্ড মের্সাস জামিল ইকবাল লি: নামক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলী রবি নামক এক ব্যক্তির সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঢাকায় চলে আসার কথা জানিয়ে বলেন, পাহাড়ের মাটি কর্তন করা অবৈধ হলে ওখান থেকে মাটি নেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন