উখিয়ায় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ

উখিয়া প্রতিনিধি:

উখিয়ায় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ব্যাপক অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। মাঠ পর্যায়ের কতিপয় লাইনম্যান ও অফিসের কর্মচারীরা মোটা অংকের উৎকোচ নিয়ে বিভিন্ন গ্রাহকদেরকে বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান করছে। এমনকি ভালুকিয়া মাতব্বর পাড়ায় ব্যক্তি মালিকানাধীন খুঁটি ও ট্রান্সফরমার থেকে জোরপূর্বক বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ নিয়ে ভুক্তভোগী গ্রাহকরা বিদ্যুৎ জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রীকে লিখিত অভিযোগ প্রেরণ করেছে বলে জানা গেছে।

খোঁজখবর নিয়ে জানা যায়, উখিয়ায় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কার্যালয়ে লাইনম্যান ও কর্তা ব্যক্তির নিকট এক প্রকার গ্রাহকরা দীর্ঘদিন ধরে জিম্মি রয়েছে। তাদের নানা দুর্ব্যবহার, কথায় কথায় জরিমানা আদায়, বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে উৎকোচ গ্রহণ ও মামলার ভয়ভীতি প্রদর্শন করে আসছে। এসব অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছে লাইনম্যান, মিটার রিডার থেকে শুরু করে পল্লী বিদ্যুতের উখিয়া অফিসের এজিএম এবং ডিজিএম পর্যন্ত।

জানা যায়, কোন গ্রাহক বাড়িতে কিংবা প্রতিষ্ঠানে নতুন বিদ্যুৎ সংযোগ নিতে হলে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে কতিপয় কর্মকর্তাদেরকে মোটা অংকের উৎকোচ হাতে ধরিয়ে দিতে হয়। অন্যতায় নানা তালবাহানা করে, বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে গড়িমসি করে এমনকি সুযোগ বুঝে ট্রান্সফরমার এবং খুঁটি দেওয়ার নাম করে গ্রাহকদের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা থেকে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নেয়। কেউ ট্রান্সফরমারের কেবি বৃদ্ধি করতে চাইলেও হাজার হাজার টাকা গ্রাহকদেরকে পরিশোধ করতে হয়।

অভিযোগে প্রকাশ, উপজেলার রত্মাপালং ইউনিয়নের ভালুকিয়া মাতব্বর পাড়া গ্রামের আবুল কাশেমের পুত্র, হামিদুল হক ও আমির হামজার পুত্র শামসুল আলম,  উখিয়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে ৫০ হাজার টাকার প্রদান করে ট্রান্সফরমার স্থাপন ও একটি খুঁটির মাধ্যমে বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ নেন।

ভুক্তভোগী হামিদুল হক অভিযোগ করে বলেন, অর্ধলক্ষ টাকার বিনিময়ে ট্রান্সফরমার স্থাপন ও খুঁটি নিয়ে বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়েছি। কিন্তু পল্লী বিদ্যুৎতের কর্তা ব্যক্তিরা মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে গ্রাহকের নিজস্ব খুঁটি থেকে মৃত তৈয়ম গোলালের পুত্র আব্দুর রশিদকে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান করে। পল্লী বিদ্যুৎ নিয়ম বহির্ভুত ভাবে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ায় তার অপূরনীয় ক্ষতিসাধন হয়েছে।

একই এলাকার আমির হামজার পুত্র শামসুল আলম জানান, পল্লী বিদ্যুৎ বশিভুত হয়ে অযৌক্তিক ভাবে আব্দুর রশিদকে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার কারণে নিজস্ব জায়গায় দালান ঘর নির্মাণ করা যাচ্ছে না। এ ব্যাপারে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডিজিএম সালাহ উদ্দিন জোয়ারদ্দার ও এজিএম এমদাদ উল্লাহকে একাধিকবার মৌখিক অভিযোগ দেওয়ার পরও তারা রহস্যজনক কারণে নিরব রয়েছে।

এদিকে মোটা অংকের টাকার বিনিময় ডিজিএম ও এজিএম আব্দুর রশিদসহ অনেক ব্যক্তিকে এ ধরনের অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে সাধারণ গ্রাহকরা ফুঁসে উঠেছে।

এ ব্যাপারে ভুক্তভোগীরা উখিয়া পল্লী বিদ্যুৎতের ডিজিএম ও এজিএমসহ কক্সবাজারস্থ জিএমের অনিয়ম, দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিকার চেয়ে  বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীসহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট লিখিত অভিযোগ প্রেরণ করেছেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন