উখিয়ায় কে.জি স্কুলের শিক্ষার্থীর মাথা বিক্রি করে লক্ষ লক্ষ টাকা আদায়: অভিভাবক মহলে অসন্তোষ

 

উখিয়া প্রতিনিধি:

উখিয়া কিন্ডার গার্ডেন ও কে.জি স্কুলের কচি-কাঁচা শিক্ষার্থীদের মাথা বিক্রি করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। কতিপয় স্কুল শিক্ষক ও লাইব্রেরি মালিক সিন্ডিকেট করে অভিভাবক এবং শিক্ষার্থীদেরকে জিম্মি করে উচ্চ মূল্যে অখ্যাত প্রকাশনির নিম্নমানের বই ক্রয় করতে বাধ্য করা হচ্ছে এমন অভিযোগ সচেতন মহলের। আর এসব সিন্ডিকেটের হোতা হচ্ছে উখিয়ার ফ্রেন্ডস লাইব্রেরি।

খোঁজখবর নিয়ে জানা যায়, উখিয়ার উপজেলা সদর সহ প্রত্যন্ত অঞ্চলে ৩০টির অধিক কিন্ডার গার্ডেন ও কে.জি স্কুল রয়েছে। এসব স্কুলে প্রায় ৪ হাজার অধিক কচি-কাঁচা শিক্ষার্থী অধ্যায়নরত। উখিয়া কিন্ডার গার্ডেন এসোসিয়েশন ও উখিয়া উপজেলার কেজি স্কুল এসোসিয়েশন নামক দু’টি আলাদা ব্যানারে কে.জি স্কুল গুলো পরিচালনা হয়ে আসছে।

দায়িত্বশীল সূত্রে জানা যায়, বছরের শুরুতেই এসব কে.জি স্কুলের শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের মাথা বিক্রির প্রতিযোগিতায় নেমে পড়ে। ঢাকা ও চট্টগ্রামের অখ্যাত প্রকাশনীর সাথে গোপন আতাঁত করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয় এবং ওই প্রকাশনীর বই ক্রয় করতে শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদেরকে বাধ্য করা হয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন শিক্ষক জানান, প্রতিজন শিক্ষার্থীদের মাথা পিচু ১শ থেকে ১শ ৩০ টাকা পর্যন্ত আদায় করেছে। এভাবে ৪ হাজার শিক্ষার্থীদের মাথা বিক্রি করে অন্তত ৪ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে শিক্ষকরা। এসব অপকর্মে জড়িত বেশ কয়েকটি লাইব্রেরি।

জানা যায়, ঢাকার সাবারিন প্রকাশনী ও ক্রিসেন্ট প্রকাশনী নামক অখ্যাত বই কোম্পানীর সাথে গোপন আঁতাত করে তাদের প্রতিষ্ঠানের বই ক্রয়ে বাধ্যকরার ঘটনাকে কেন্দ্র করে সচেতন অভিভাবক মহলে ক্ষোভের সঞ্চার ও মিশ্রপ্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অভিযোগে প্রকাশ উখিয়া মসজিদ মার্কেটের ফ্রেন্ডস লাইব্রেরির মধ্যস্থতায় শিক্ষার্থীদের মাথা বিক্রির টাকা বন্টন করা হয়। এর ফলে সমস্ত বই শিক্ষার্র্থীদেরকে ওই ফ্রেন্ডস লাইব্রেরি থেকে ক্রয় করতে বাধ্য করানো হয়েছে। উখিয়ার অন্যান্য লাইব্রেরিতে ধর্না দিয়েও অভিভাবকরা এসব বই খুঁজে পাচ্ছে না।

ফ্রেন্ডস লাইব্রেরির মালিক আবু মুছা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমরা অনেক মূলধন ও পুঁজি বিনিয়োগ করেছি। তাই কে.জি স্কুলের বই আমার লাইব্রেরি ছাড়া অন্য কেউ বিক্রি করতে পারবে না।

ভালুকিয়া কে.জি স্কুল, পাতাবাড়ী কে.জি স্কুল, থাইংখালী কে.জি স্কুল ও রাজাপালং কে.জি স্কুলের অভিভাবকদের প্রশ্ন সরবরাহকৃত বইয়ের স্লিপ নিয়ে লাইব্রেরিতে গেলে বই পাওয়া যাচ্ছে না। শুধু মাত্র এসব বই ফ্রেন্ডস লাইব্রেরি পাওয়া যায় বলে শিক্ষকরা জানান দেয়। বলতে গেলে জিম্মি হয়ে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা উচ্চ মূল্য দিয়ে নিম্নমানের বই ফ্রেন্ডস লাইব্রেরি থেকে ক্রয় করছে।

অনেক লাইব্রেরির মালিক শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে ফ্রেন্ডস লাইব্রেরিতে পাইকারী বই ক্রয় করতে গেলেও মালিক আবু মুছা সাফ জানিয়ে জবাব দেন তিনি ছাড়া এই বই কেউ বিক্রি করতে পারবে না। কোটবাজারে পালং লাইব্রেরিকে ওই বই বিক্রির জন্য মনোনয়ন করা হয়েছে। সচেতন শিক্ষানূরাগীদের অভিমত কচি-কাঁচা শিক্ষার্থীদের মাথা বিক্রি করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিলে শিক্ষকদের কাছ থেকে  দেশ ও জাতি কি আশা করতে পারে। সিন্ডিকেট তৈরির প্রধান হোতা ফ্রেন্ডস লাইব্রেরি বই ব্যবসার নামে এসব কি শুরু করেছে তা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সহ অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) নিকট জোর দাবি জানিয়েছেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন