উখিয়ায় অবৈধ হুন্ডি ব্যবসা অপ্রতিরোধ্য, প্রশাসনের ভূমিকা নিবর

 

উখিয়া প্রতিনিধি:

উখিয়ায় ফের অবৈধ হুন্ডি ব্যবসা অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর চোখকে ফাঁকি দিয়ে এ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। সরকারের নিষিদ্ধ ঘোষিত হুন্ডি ব্যবসার লক্ষ লক্ষ টাকা লেনদেন হচ্ছে প্রতিদিন। মরিচ্যা বাজারে একটি শক্তিশালী হুন্ডি  সিন্ডিকেট পুরো উখিয়া-টেকনাফ নিয়ন্ত্রণ করছে। আর এ অবৈধ ব্যবসার কারণে বিপুল অংকের বৈদেশিক আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।

খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায়, গত ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে শুরু করলে মধ্যপ্রাচ্য কেন্দ্রিক হুন্ডি ব্যবসা অনেকটা কমে যায়। বাংলাদেশে রোহিঙ্গারা আশ্রয় নেওয়ার পর থেকে সম্প্রতি আবারও  হুন্ডির লেনদেন বাড়তে শুরু করে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংক হুন্ডি ব্যবসা সম্পূর্ণ ভাবে নিষিদ্ধ করে।

এ ছাড়াও দক্ষিণ কক্সবাজার সীমান্তবর্তী  উখিয়া-টেকনাফের হাজার হাজার বাসিন্দা দুবাই, সৌদি আবর, কুয়েত, মালেশিয়া, ওমানসহ মধ্যপ্রাচ্যে বসবাস করছে। অনেকেই ব্যাংকিং লেনদেনের পরিবর্তে হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাঠায়। শুধু তাই নয় বিদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গারাও একই কায়দায় টাকা পাঠিয়ে আসছে।

অভিযোগে প্রকাশ দুবাই কেন্দ্রিক হুন্ডি ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করছে জাহাঙ্গীর আলম নামক এক প্রবাসী। দুবাইতে বসে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকা হুন্ডির মাধ্যমে চালান বাংলাদেশে পাঠাচ্ছে। খুনিয়া পালং ইউনিয়নের পশ্চিম ধেছুয়া পালং গ্রামের জাফর হাজীর ছেলে মাওলানা হাসান মরিচ্যায় হুন্ডির টাকা বিতরণ করে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনেক প্রবাসী জানান, এক সময়ে অবৈধ হুন্ডি ব্যবসায় কয়েকজন হুন্ডি সম্রাট জড়িত থাকলেও এখন তাদের খাতায় নতুন করে গডফাদারের নাম লিখিয়েছেন দুবাই প্রবাসী জাহাঙ্গীর। হুন্ডি ব্যবসা দেশে পরিচালনা করে তার ভাই মাওলানা হাসান।

এলাকাবাসীর অভিযোগ হুন্ডি ব্যবসা করে রাতা রাতি বড় লোক হওয়া  সিন্ডিকেট সদস্যরা প্রকাশ্যে এ অবৈধ ব্যবসা মরিচ্যা রড়- সিমেন্টের দোকানে বসে লেনদেন করলেও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা রহস্য জনক ভূমিকা পালন করছে। এমনও অভিযোগ উঠেছে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে তারা  হুন্ডির জগতে হাত বাড়ায়।  রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে প্রতিদিন অসংখ্য রোহিঙ্গা নাগরিক মরিচ্যা এসে হুন্ডির চালানীর টাকা নিয়ে যায় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।  উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আবুল খায়ের বলেন, সরকারের নিষেধ করা হুন্ডি ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে পুলিশ তৎপর রয়েছে। সঠিক তথ্য ও হুন্ডির চালানীর টাকা লেনদেন করছে এমন খবর পেলে অভিযান পরিচালনা করবে।

দেশে ফেরত আসা বেশ কয়েক জন প্রবাসী জানান, দুবাই কেন্দ্রিক হুন্ডির ডন হচ্ছে জাহাঙ্গীর। তার এ অবৈধ ব্যবসা সিঙ্গাপুর ভিত্তিক স্বর্ণ চোরা চালানী চক্রের সহযোগিতায় বাংলাদেশে টাকা পাঠিয়ে থাকে। মরিচ্যা বাজারের সচেতন নাগরিক জানান, শক্তিশালী হুন্ডি সিন্ডিকেটের চিহিৃত  সদস্য এ স্টেশনে ইসলামী শরিয়া ভিত্তিক একটি বেসরকারি ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিং শাখা চালু করছে। এ নিয়ে জনমনে নানা মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।

এ ব্যপারে জানতে চাইলে মরিচ্যা চেকপোস্ট সংলগ্ন রহামনিয়া মাদ্রাসার অফিস সহকারী মাওলানা হাসান অবৈধ হুন্ডি ব্যবসায় জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করে বলেন, আমার পরিবারে সকল সদস্য বিদেশে অবস্থান করছে।

সুশীল সমাজের মতে সরকারি গোয়েন্দা সংস্থা ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর নজরদারী করলে অবৈধ হুন্ডি ব্যবসা বন্ধসহ হুন্ডির লক্ষ লক্ষ চালানীর টাকা জব্দ করা সম্ভব হবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন