উখিয়ার হলদিয়াপালং ইউপি নির্বাচনে ফলাফল জটিলতা নিস্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট

ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন

ফারুক আহমদ:
উখিয়া উপজেলার ৩ নং হলদিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে সৃষ্ট জটিলতা ৫ কার্য দিবসের মধ্যে প্রধান নির্বাচনন কমিশনকে নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

বুধবার বিচারপতি আশরাফুল ইসলাম ও বিচারপতি জাফর আহমদের গঠিত দ্বৈত বেঞ্চে দীর্ঘ শুনানী শেষে এ আদেশ প্রদান করা হয়। উক্ত আদেশে উভয়পক্ষকে ডেকে সঠিক সমঝোতা করে ‘নিষ্পত্তি’র মাধ্যমে প্রতিবেদন আদালতে পাঠাতে বলা হয়েছে। বাদীর পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন, প্রবীণ আইনজ্ঞ ব্যারিস্টার রফিকুল হক ও ব্যারিস্টার জ্যৈতিময় বড়ুয়া।

হলদিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ভোট কারচুপি ও জালিয়তির মাধ্যমে রাতের আধারে ফলাফল পাল্টানোর অভিযোগ এনে বিএনপির মনোনীত ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী এসএম শামসুল হক বাবুল বাদী হয়ে গত ১২ জুন হাইকোর্টে এ পিটিশনটি দায়ের করেন। যার নং-৭৬৬০।

উক্ত রিটপিটিশনে উল্লেখ করা হয় গত ৪ জুন হলদিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদের অনুষ্ঠিত নির্বাচনে এসএম শামসুল হক বাবুল ৬২৯ ভোট বেশী পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেও ফলাফল জালিয়াতি করে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শাহ আলমকে বিজয়ী ঘোষণার করা হয়েছে।

এই অভিযোগের সূত্র ধরে আদালতের আশ্রয় নেয় চেয়ারম্যান প্রার্থী এসএম শামসুল হক বাবুল। দায়েরকৃত রিটপিটিশন সূত্রে জানা গেছে, ৪ জুন ভোট গণনা শেষে প্রিজাইডিং অফিসারের সরবরাহ করা ফলাফল বিবরণী অনুযায়ী মোট ৯ ভোট কেন্দ্রে বিএনপির মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী এসএম শামসুল হক বাবুল ৭ হাজার ৮৪৯ ভোট এবং আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী শাহ আলম ৭ হাজার ২১৯ ভোট পান। ৬২৯ ভোট বেশী পেয়ে বিএনপির প্রার্থী এসএম শামসুল হক বাবুল বিজয়ী হওয়ার কথা।

কিন্তু জনরায়কে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব শফিউল আলমের নির্দেশে তার ছোট ভাই আওয়ামী লীগের প্রার্থী শাহ আলমকে বিজয়ী ঘোষণা করে প্রশাসন।

ভোটের ফলাফল তালিকা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, সবকটি কেন্দ্রের ফলাফল ঠিক থাকলেও হলদিয়া পালং পাতাবাড়ী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে নৌকার প্রাপ্ত ভোট ৩৬১ এর স্থলে ১০৬৩ দেখানো হয়। ভোটে নৌকার প্রার্থীকে বেশি দেখিয়ে চূড়ান্ত বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।

বাদী এস.এম শামসুল হক বাবুল আরও অভিযোগ করে বলেন, শুধু তাই নয় রুমখাঁ পালং ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসা কেন্দ্রে ভোটের আগের রাতেই প্রশাসনের সহযোগিতায় নৌকা প্রতীকে ২৮৬৭টি ভোট সীল মেরে ব্যালেট বক্সে ডুকিয়ে দেওয়া হয়। সকালে ভোটারগণ লাইনের দাঁড়ালো ব্যালেট পেপার না পাওয়ায় ভোট না দিয়ে চলে আসে। উক্ত কেন্দ্রে মোট ভোটার ছিল ২৯১৮জন। শুধু মাত্র ধানের শীষ প্রতীকে ৬টি এবং আওয়ামীলীগ বিদ্রোহী প্রার্থী আনারস প্রতীকে ৩টি ভোট দেওয়া হয়। এতে বুঝা যায় মৃত ব্যক্তি থেকে শুরু করে বিদেশে অবস্থানরত সকলের ভোট ডাকাতির মাধ্যমে ব্যালেট বক্সে জোরপূর্বক ডুকিয়ে দেওয়া হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন