ইউপিডিএফের দাবি না মানায় রামগড়ে কসমিক কৃষি খামারের শতাধিক আম কাঁঠাল গাছ কর্তন

Ramgarh 10.11

রামগড় প্রতিনিধি : 

রামগড়ের তৈচাকমাপাড়ায় অবস্থিত কসমিক কৃষি খামার নামে ব্যক্তি মালিকানাধীন একটি বাগানে প্রতি রাতে আম, কাঁঠালসহ মূল্যবান গাছ কর্তন করছে দুর্বৃত্তরা। গত রবিবার গভীর রাতে প্রায় ৬০টি ফলের গাছ কেটে দেয়া হয়। এ নিয়ে গত তিন রাতে বাগানটির প্রায় দেড়শ’টি আম ও কাঁঠাল গাছ কাটা হয়।

বাগানের সাথে সংশ্লিস্টরা জানান, স্থানীয় একটি উপজাতীয় সংগঠনের সন্ত্রাসীরা সম্প্রতি বাগানের মালিকের কাছে নির্দিষ্ট হারে বাৎসরিক চাঁদা, ৪৫ একর ভূমি এবং পূর্বে থানায় দায়েরকৃত গাছ কাটার একটি মামলা প্রত্যাহারের দাবী জানায়। তাদের এ দাবী মালিক পক্ষ না মানায় ঐ সন্ত্রাসীরা বাগানে গাছগুলো কেটে দিচ্ছে।

বাগানের ম্যানেজার মোহাম্মদ আলী জানান, গত শুক্রবার রাতে সন্ত্রাসীরা করাত দিয়ে প্রায় ৬৫টি আম ও কাঁঠাল গাছ কেটে দেয়। এর পরের রাতে অর্থাৎ শনিবার রাতে তারা বাগানে এসে কয়েক রাউন্ড গুলিবর্ষণ করে আতংক সৃষ্টি করে। চলে যাওয়ার সময় ২০টির মত গাছ কেটে দিয়ে যায় তারা।

সর্বশেষ গত রবিবার রাতে একইভাবে কাটা হয় প্রায় ৬৫টি আম ও কাঁঠাল গাছ কেটে দেয়া হয়। গাছগুলো ১০-১৫ বছর বয়সী। এভাবে প্রতি রাতে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা দলবলে এসে গাছ কাটার ঘটনায় বাগানের শ্রমিক ও পাহারাদারদের মধ্যে চরম আতংক দেখা দিয়েছে। এর আগে গত সেপ্টেম্বর মাসের শেষার্ধে ঐ সন্ত্রাসীরা বাগানের শ্রমিক ঘরে অগ্নি সংযোগ করে এবং একই রাতে তিন শতাধিক ফলদ ও বনজ গাছ কর্তন করে।

বাগানের ম্যানেজার জানান, দফায় দফায় বাগানটির ক্ষতি সাধন করার প্রেক্ষিতে গত ২৫ অক্টোবর বাগানটির এমডি রোমান হায়দার ও ডাইরেক্টার শহিদুল ইসলাম বাগানে এসে ইউপিডিএফের একটি গ্রুপের সাথে বৈঠক করেন। বৈঠকে বাগানের মালিকদের সাফ জানিয়ে দেয়া হয়, ইউপিডিএফকে ফলের বাগানের জন্য একর প্রতি ৩০০০টাকা ও বনজ বাগানের জন্য একর প্রতি ২৫০০টাকা হারে বাৎসরিক চাঁদা ও ৪৫ একর জায়গা ছেড়ে দিতে হবে এবং থানায় দায়ের করা গাছ কাটার মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। এসব দাবী মানা না হলে বাগানের গাছ কাটা অব্যাহত থাকবে। ঐ বৈঠকে ইউপিডিএফের এরিয়া কমান্ডার অপু ত্রিপুরা প্রকাশ সুবীর বাবুসহ তিনজন উপস্থিত ছিল।

বাগানের ম্যানেজার আরও জানান, মালিকপক্ষ তাদের এসব দাবীর কোনটিই মানতে রাজি হননি। তাই সংগঠনটির সন্ত্রাসীরা ক্ষুদ্ধ হয়ে তাদের দাবী পুরণে মালিককে বাধ্য করতে বাগানটির এভাবে ক্ষতি সাধন করছে।

এ ব্যাপারে রামগড় থানার অফিসার ইনচার্জ জোবায়েরুল হক জানান, মাঝে মধ্যে বাগানের গাছ কাটার কথা শোনা গেলেও কেউ এ বিষয়ে থানায় কোন অভিযোগ বা মামলা দেয়নি।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন