আড়াইযুগেও আলোর মুখ দেখেনি খাগড়াছড়ি বিসিক শিল্পনগরী
নিজস্ব প্রতিবেদক, খাগড়াছড়ি:
বিপুল সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও প্রায় তিন কোটি টাকা ব্যয়ে স্থাপিত খাগড়াছড়ি বিসিক শিল্পনগরী দীর্ঘ আড়াই যুগেও আলোর মুখ দেখেনি। চাঁদাবাজি আর বিদ্যুতের দুরাবস্থার কারণে শিল্প উদ্যোক্তারাও বিনিয়োগ করতে সাহস পাচ্ছেননা। যে ক’জন করেছেন, তারাও মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। ফলে রক্ষণা বেক্ষনের অভাবে পুরো শিল্পনগরীটি বনে-জঙ্গলে পরিপূর্ণ হয়ে এখন গো-চারণ ভূমিতে পরিণত হয়েছে।
১৯৮৭ সালে বিসিক শিল্পনগরী স্থাপনের অনুমোদন লাভ করার পর খাগড়াছড়ি জিরো মাইল এলাকায় ১০ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। এর পর প্রশাসনিক ভবন ও রাস্তা নির্মাণ, পানি সরবরাহের ব্যবস্থা এবং বিদ্যুৎ সংযোগ স্থাপনে লেগে যায় প্রায় দুইযুগ। ব্যয় হয় ২ কোটি ৯০ লাখ টাকা।
গেল প্রায় ৩০ বছরে খাগড়াছড়ি বিসিক শিল্পনগরীর ৭১টি প্লটের মধ্যে ১৯ শিল্প উদ্যোক্তা, ৩৮টি প্লট নিলেও মাত্র ৪জন বিনিয়োগ করেছেন। তার মধ্যে কয়েকজন নানা সংকটের মুখে প্রতিষ্ঠান বন্ধও ঘোষণা করেছেন। ফলে শ্রমিকরা বেকার হয়ে পড়েছেন।
খাগড়াছড়ি চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক সুদর্শন দত্ত বলেন, শিল্প উদ্যোক্তাদের মতে, খাগড়াছড়িতে সুযোগ ও সম্ভাবনা রয়েছে। এই বিসিক শিল্পনগরীটি পুরোদমে চালু করতে পারলে স্থানীয় বেকার সমস্যা নিরসনের পাশাপাশি খাগড়াছড়ি দেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখতে পারতো। কিন্তু কয়েকটি পাহাড়ি সংগঠনের চাঁদাবাজি, ভয়াবহ বিদ্যুৎ বিপর্যয় ও সড়ক যোগযোগ ব্যবস্থা খারাপ হওয়ায় শিল্প উদ্যোক্তারা বিনিয়োগ করার সাহস পাচ্ছেননা। ফলে রক্ষণাবেক্ষনের অভাবে পুরো শিল্পনগরীটি বনে-জঙ্গলে পরিপূর্ণ হয়ে এখন গো-চারণভূমিতে পরিণত হয়েছে।
খাগড়াছড়ি বিসিক শিল্পনগরীর ব্যবস্থাপক একে এম সাদেকুর রহমান বলেন, ভয়াবহ বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের কারণে অনেক শিল্প উদ্যোক্তা প্লট নিয়েও কাজ শুরু করতে পারেননি। বিদ্যুৎ সংকট নিরসন হলে শিল্প উদ্যোক্তারা শিল্প প্রতিষ্ঠান স্থাপনে এগিয়ে আসবেন বলেও তিনি মনে করেন।
খাগড়াছড়ি বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু জাফর জানান, ২০১৮ সালে খাগড়াছড়ি বিদ্যুতের গ্রিডসাব স্টেশনটি চালু হলে বিদ্যুতের সংকট থাকবেনা।
তবে শুধু আশারবাণী নয়, দ্রুত খাগড়াছড়ির বিদ্যুৎ নিরসনসহ প্লট বরাদ্দের মাধ্যমে বিসিক শিল্পনগরীটি চালু করা হবে এমনটাই প্রত্যাশা খাগড়াছড়ি জেলার শিল্প উদ্যোক্তাদের।
সূত্র: পাক্ষিক পার্বত্যনিউজ, বর্ষ ১, সংখ্যা ১