আলীকদম-থানচি সড়কে ব্যাপক ভাঙ্গন ও পাহাড় ধ্বসে যান চলাচল বন্ধ
আলীকদম প্রতিনিধি:
বান্দরবান জেলার ৩৩ কিলোমিটার দৈর্ঘের আলীকদম-থানচি সড়কটিকে দেশের সবচেয়ে উঁচু সড়ক হিসেবে গণ্য করা হয়। অন্তর্বিহীন মৌন নিস্তব্ধ পাহাড়ের সৌন্দর্যে নির্মিত এসড়ক দেখতে প্রতিনিয়ত দেশের নানা প্রান্ত থেকে পর্যটকদের আগমন ঘটে। সাম্প্রতিক ভারি বর্ষণে সড়কটির অন্তত: ২২টি পয়েন্টে কার্পেটিংসমেত ভাঙ্গন ও ১৯ স্থানে পাহাড় ধ্বসে রাস্তা ব্লক হয়ে গেছে। ফলে বন্ধ হয়ে গেছে যান চলাচল।
২০১৫ সালের এপ্রিল মাসে ১২০ কোটি টাকা ব্যয়ে সড়কটির নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়। ২০০৬ সালে এর নির্মাণ কাজ শুরু হয়ে শেষ হয় ২০১৫ সালের এপ্রিলে। সাঙ্গু নদ ও মাতামুহুরী নদী উপত্যকা বিভাজনকারী চিম্বুক পাহাড় শ্রেণির ডিম পাহাড় এলাকার ওপর দিয়ে সড়কটি নির্মাণ করেছিল সেনাবাহিনীর ১৬ ও ১৭ প্রকৌশল নির্মাণ ব্যাটালিয়ন (ইসিবি)।
১৪ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই উঁচু সড়কটি উদ্বোধন করেন। নির্মাণকাজ শেষ হলে সড়ক যোগাযোগ ও সেতু মন্ত্রী ওবাইদুল কাদের সড়কটি পর্যটন খাতে ব্যাপক অবদান রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সড়কটি উদ্বোধনের কিছুদিন পর সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যাটালিয়ন ১৬ ইসিবি সড়কটি বান্দরবান সওজ ও জনপদ বিভাগকে হস্তান্তর করে। এরপর থেকে সড়কটির দেখা ভাল সওজের। ২ হাজার ৫০০ ফুট উঁচুতে পাথুরে পাহাড়ের গায়ে আঁকা বাঁকা ধাপ কেটে ৩৩ কিলোমিটারের সড়কটি নির্মাণ করা হয়।
থানচি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্যহ্লাচিং মার্মা বলেন, সড়কটি পাহাড়ের বুকে নান্দনিক সৌন্দর্যে তৈরি। এসড়ক দেখতে সারাবছর শতশত পর্যটক আসেন। সাম্প্রতিক ভারী বর্ষণে যোগাযোগ ব্যবস্থা নষ্ট হওয়ায় পর্যটকরা আসতে পারবেনা। এছাড়াও দুই উপজেলার মধ্যে পণ্য পরিবহনে সমস্যা হবে।
থানচি’র সাংবাদিক অনুপম মার্মা জানান, সড়কটির ৩৩ কিলোমিটার আমি সরেজমিন পরিদর্শন করে অন্তত: ২২টি পয়েন্টে কার্পেটিংসমেত ভাঙ্গন ও ১৯ স্থানে পাহাড় ধ্বসে রাস্তা ব্লক হওয়ার চিত্র লক্ষ্য করেছি।
তিনি বলেন, সড়কটি নির্মাণের পর সড়ক রক্ষায় বিভিন্ন স্থানে রিটার্নিং দেয়াল দেয়া হলেও তা এখন ধ্বসে গেছে। নির্মাণের এত অল্প সময়ে সড়ক নষ্ট হয়ে পড়া বোধগম্য হচ্ছেনা।
এব্যাপারে আলীকদম উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, আলীকদম-থানচি সড়কটিতে বড় ধরণের ধ্বস হয়েছে। ধ্বসের কারণে ছোট-বড় সব যান চলাচল বন্ধ আছে।
সড়কটি কবে নাগাদ যান চলাচলের জন্য উপযোগী করা যাবে সে বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারছেননা তিনি।