আলীকদমে নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু দুর্ঘটনা নয় পরিকল্পিত: অভিযোগ নিহতের স্ত্রীর

আলীকদম প্রতিনিধি:

নিহত শ্রমিক শাহেদুল ইসলাম এর স্ত্রী নিশাত আক্তার (২০) বৃহস্পতিবার রাতে অভিযোগ করেন, তার স্বামীকে পরিকল্পিত হত্যা করা হয়েছে। থানায় এ ব্যাপারে তিনজনকে আসামি করে মামলা করতে চাইলেও পুলিশ মামলা নিয়েছে একজনের নামে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, আলীকদম উপজেলার কলার ঝিরি সড়কে বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) গাড়ি চাপায় ঘটনাস্থলে মারা যান সড়ক নির্মাণ কাজে নিয়োজিত শাহেদ মিয়া (২৮)। তিনি লামা উপজেলার বানিয়াছড়া বুড়ি চিকন ঘোনার বাসিন্দা লেদু মিয়ার পুত্র।

নিহতের স্ত্রী নিশাত আক্তারের অভিযোগ তার স্বামীকে পরিকল্পিতভাবে গাড়ি চাপা দিয়ে মারা হয়েছে। তার মৃত্যুর জন্য দায়ী উপজেলার উত্তর পালং পাড়ার বাসিন্দা কবির আহমদের ছেলে মোহাম্মদ নূর ও মোহাম্মদ নবী এবং তাদের গাড়ি চালক মোহাম্মদ সুজন।

নিশাত আক্তার বলেন, তার স্বামীর মৃত্যুর জন্য দায়ী গাড়ির মালিক মোহাম্মদ নবী ঘটনার সময় গাড়িতেই ছিল। শাহেদ যে গাড়ি থেকে নির্মাণ সামগ্রী নামাচ্ছিল সেই গাড়িটি নির্মাণাধীন সড়কের উপর ছিল। মোহাম্মদ নবীদের মালিকানাধীন গাড়িটিকে সাইড দিতে দেরি হওয়ায় নূরের কথামত ড্রাইভার সুজন সজোরে নির্মাণ সামগ্রী বোঝাই গাড়িকে ধাক্কা দেয়। এতে গাড়ি থেকে ছটকে পড়ে যায় শ্রমিক শাহেদুল। এরপর তার মৃত্যু হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী আব্দুর রহিম বলেন, নির্মাণ কাজ করার সময় সড়কটি বন্ধ রাখা হয়। এ সময় ওই রাস্তা দিয়ে যাওয়া একটি ল্যান্ড ক্রুজার নির্মাণ সামগ্রী বোঝাই পিকআপ ভ্যানকে সাইট দিতে বলে। একপর্যায়ে ল্যান্ড ক্রুজারটির ড্রাইভার গাড়ির মালিক মোহাম্মদ নবীর নির্দেশে ডান-বাম না দেখে টান দিলে নির্মাণ শ্রমিক শাহেদুল ধাক্কা খেয়ে পড়ে যায়। এ সময় ল্যান্ড ক্রুজারটি পাশের ভুট্টা ক্ষেতে পড়ে যায়। ঘটনাস্থলেই নিহত হন শাহেদ।

এ ঘটনার পর পর পুলিশ ল্যাণ্ড ক্রুজার ড্রাইভারকে আটক করেছে। বৃহস্পতিবার রাতে ড্রাইভার সুজনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। নিহতের স্ত্রী নিশাত আক্তার অভিযোগ করেন, আমি গাড়ির মালিকসহ ৩ জনকে আসামি করতে চাইলেও পুলিশ মামলা নিয়েছে শুধুমাত্র ড্রাইভার কে আসামি করে।

গাড়ির মালিক মোহাম্মদ নূর বলেন, গাড়ি ব্রেকফেল করে এ দুর্ঘটনা হয়েছে। গাড়িতে তখন আমি কিংবা আমার ভাই মোহাম্মদ নবী ছিল না। আমি ছিলাম তখন ত্রিপুরা পাড়ায়। মোহাম্মদ নবী ছিল ঘটনাস্থল থেকে দূরে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অফিসার ইনচার্জ রফিক উল্লাহ বলেন, আইন ও নিয়ম অনুযায়ী এসব ঘটনায় ড্রাইভারের বিরুদ্ধে মামলা হয়। মালিক আসামি হয় না। নিহতের স্ত্রী ইচ্ছে করলে কোর্টে মামলা করতে পারে।

এদিকে, শুক্রবার দুপুর দুইটার সময় নিহত শ্রমিক শাহেদকে পোস্টমর্টেম শেষে দাফন করা হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: অভিযোগ, আলীকদমে, নিহতের
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন