আলীকদমে কাবিখা’র ১ কোটি টাকার প্রকল্পের কাজ আটকে আছে

fec-image

অনিয়ম

আলীকদম প্রতিনিধি:

বান্দরবানের আলীকদম উপজেলায় গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর/কাবিখা) ২য় পর্যায়ের প্রায় এককোটি টাকার উন্নয়ন কাজ এখনো শুরু হয়নি। উপজেলা হিসাব রক্ষণ অফিসার প্রকল্পের বিলে স্বাক্ষর না করায় কাজ শুরু করা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।

শুরু থেকেই এসব প্রকল্প গ্রহণ, প্রকল্পের কমিটি গঠন নিয়েও রয়েছে স্বচ্ছতার অভাব। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরে ২য় পর্যায়ে আলীকদম উপজেলায় টিআর ও কাবিখা খাতে ৯৭ লাখ ৪৬ হাজার ৩৯৯ টাকার বরাদ্দ পায়। ইতোমধ্যে এসব বরাদ্দের বিপরীতে ৮৩টি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম জানান, ‘আগামী ৪ জুন আলীকদমের চারটি ইউনিয়নের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তাই প্রকল্পগুলো স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি দিয়ে বাস্তবায়ন করা হবে। ইতোমধ্যে ৮৩টি প্রকল্পের অগ্রিম বিল ছাড় করার জন্য উপজেলা হিসাব রক্ষণ অফিসারের কাছে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে তিনি বিলে স্বাক্ষর করছেন না। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নের সময়সীমা রয়েছে জুন মাস পর্যন্ত। প্রকল্প বিলে স্বাক্ষরে বিলম্ব হওয়ায় ঠিক সময়ে প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন নিয়ে সমস্যা দেখা দেতে পারে’।

প্রকল্প বিলে স্বাক্ষর প্রদানে গড়িমসির কথা অস্বীকার করে উপজেলা হিসাব রক্ষণ অফিসার মো. শাহীন নওশাদ বলেন, ‘প্রকল্প কমিটি দিয়ে বিল উপস্থাপন না করায় আমি ৪৪ ও ২৯ লাখ টাকার দু’টি অগ্রিম বিল ফেরত পাঠিয়েছি। পিওআই অফিস অগ্রিম বিল দাবি করছে। কিন্তু ত্রাণ অধিদপ্তরের বরাদ্দপত্র অনুযায়ী অগ্রিম বিল দেওয়ার সুযোগ নেই। তাছাড়া প্রকল্প কমিটির সভাপতির নামে বিল উপস্থাপন হওয়ার কথা। এ নিয়ম ভঙ্গ করায় আমি অবজেকশন দিয়েছি। পিআইও অফিস আমার কাছে প্রকল্প কমিটির তালিকাও উপস্থাপন করেনি’।

এদিকে, উপজেলা পরিষদের ২০ শতাংশ বরাদ্দসহ অন্যান্য প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য যেসব প্রকল্প কমিটি নিয়েও অভিযোগ রয়েছে। সেসব প্রকল্পের কমিটি গঠনে করা হয়েছে আত্মীয়করণ। প্রকল্পগুলো গ্রহণের শুরু থেকেই চলছে উপজেলা পরিষদ বনাম প্রশসনের মধ্যে মনস্তাত্ত্বিক দূরত্ব। যে যার মতো করে প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়নে কমিটি গঠন করেছে। মানা হয়নি নীতিমালা।

শুরু থেকেই স্বচ্ছতার অভাব থাকায় এখন প্রকল্প বিলে অগ্রিম স্বাক্ষর না দিয়ে ‘অবজেকশান’ দেওয়ার সুযোগ পেয়েছেন হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা। ফলে চলতি অর্থবছরের মধ্যে প্রায় এককোটি টাকার ৮৩টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে কিনা তা নিয়ে দেখা দিয়েছে সন্দেহ। জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বলেন, হিসাব রক্ষণ অফিসারের চাওয়া-পাওয়া বেশী।

গতবারের বরাদ্দ বিল স্বাক্ষর করতে অগ্রিম টাকা দাবি করেছেন। পরে অডিট আসলে অডিটরদের দিয়ে আমাদের ৪০ থেকে ৪২ লাখ টাকার একটি আপত্তি দিয়েছেন। তিনি প্রশ্ন রাখেন, বিলে সমস্যা থাকলে উপজেলা হিসাব রক্ষণ অফিসের অডিটর ও কর্মকর্তা কিভাবে স্বাক্ষর করলেন। যে বিলে পরে অন্য অডিটর আপত্তি দিলেন। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, হিসাব রক্ষণ অফিসার প্রকল্প বিলে স্বাক্ষর দিতে বিলম্ব করলে প্রকল্পের কাজ হবে না। সরকারি বরাদ্দ ফেরত যাবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন