আলীকদমের ছোটভরি, বড়ভরি ও জাদি পাহাড়ে বৃক্ষ নিধনের অভিযোগ
আলীকদম (বান্দরবান) প্রতিনিধি:
বান্দরবানের আলীকদম উপজেলার চৈক্ষ্যং ইউনিয়নের ছোটভরি, বড়ভরি ও জাদি পাহাড় এলাকায় নির্বিচারে প্রাকৃতিক বনাঞ্চল ও ব্যক্তি মালিকানাধীন বাগান থেকে গাছ কাটার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
‘যৌথ নামীয় ও প্রাকৃতিক বনাঞ্চলে হাজার হাজার বৃক্ষ নিধনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ’ করার দাবী জানিয়ে রবিবার উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বরাবর অভিযোগ দিয়েছেন স্থানীয়রা।
চৈক্ষ্যং ইউনিয়নের ‘রেনফওয়া মুরুং কার্বারী ও সুরেশ তঞ্চঙ্গ্যা কার্বারী পাড়া‘র ৩৪ জন বাসিন্দার স্বাক্ষরিত অভিযোগপত্রে নির্বিচারে বৃক্ষ নিধন করার অভিযোগ আনা হয়।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, ২৮৭নম্বর তৈন মৌজার ভরিরমুখ আবুল কাসেম পাড়ার মাহাবুব আলম, রুহুল আমিন ও নুরুল আমিন অর্ধশতাধিক শ্রমিক নিয়োগ করে প্রাকৃতিক ও ব্যক্তি মালিকানাধীন বন থেকে নির্বিচারে গাছ কেটে নিচ্ছে।
অভিযোগকারী রেনকওয়া মুরুং কার্বারী, সুরেশ তঞ্চঙ্গ্যা কার্বারী ও কাইঞ্চা মোহন তঞ্চঙ্গ্যা রবিবার বিকেলে এ প্রতিবেদককে জানান, ‘ইউএনডিপির অর্থায়নে আমাদের পাড়ার ৩৭টি পরিবার প্রায় ২শ’ একর খাস পাহাড়ি জমিতে বনায়ন করি। বান্দরবান বোমাং রাজার অনুমতি সাপেক্ষে আমরা সেখানে প্রাকৃতিক গাছ রক্ষার পাশাপাশি বনায়ন করেছি। কিন্তু স্থানীয় মাহাবুব, রুহুল ও নুরুল আমিন প্রভাবশালী বিধায় শ্রমিক লাগিয়ে আমাদের বাগান থেকে গাছ কেটে নিচ্ছে‘।
অভিযোগ অস্বীকার রবিবার সন্ধ্যায় রুহুল আমিন ও মাহাবুব আলম মুঠোফোনে জানান, ‘আমরা স্থানীয় মুরুংদের কাছ থেকে দখল কিনে এবং হেডম্যান রিপোর্ট নিয়ে বড় ভরি ও জাদি পাহাড় এলাকায় কিছু গাছ কাটছি। তবে অভিযোগকারীদের জায়গা ছোটভরিতে। ছোট ভরি থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দুরে আমরা গাছ কাটছি।
মাহাবুব বলেন, ‘আমি মাসখানে আগে মৌজা হেডম্যান থেকে একটি রিপোর্ট নিয়ে সেখানে গাছ কাটছি। আমি একা নই, সাথে ফজল কাদের, রুহুল আমিন ও নুরুল আমিন মিলে তামাকের জ্বালানীর জন্য লাকড়ি সংগ্রহ করছি‘।
অভিযোগকারীদের দাবী, অভিযুক্তরা খাগড়াছড়ি থেকে শ্রমিক নিয়া এসেছে। এসব শ্রমিকরা গত ১০/১৫দিন অনবরত নির্বিচারে বৃক্ষ নিধন করছে। বাধা দিতে গেলে সেখানে শ্রমিকদের সাথে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংকা করছেন তারা।
গাছ কাটার অভিযোগ সত্য বলে জানিয়েছেন স্থানীয় ২নং ওয়ার্ড মেম্বার ও জেএসএস নেতা ফোচা অং মার্মা। তিনি বলেন, ‘অভিযুক্তরা অবৈধভাবে গাছ কাটার পাশাপাশি লাকাড়ি পরিবহনের জন্য নির্বিচারে পাহাড় কেটে রাস্তাও তৈরী করছে’।
জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোঃ আল-আমিন জানান, ‘গাছ কাটার বিষয়ে অভিযোগটি পেয়েছি। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অভিযোগপত্র আলীকদম থানায় পাঠানো হয়েছে’।