আন্দোলন ছাড়া পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন সম্ভব হবে না: সন্তু লারমা

santu

নিজস্ব প্রতিবেদক:
পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান ও জনসংহতি সমিতির সভাপতি সন্তু লারমা অসহযোগ আন্দোলনে প্রস্তুত থাকার আহবান জানিয়ে বলেন, আন্দোলন ছাড়া পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন হবে না। এজন্য আন্দোলনকে আরও জোরদার ও শক্তিশালী করতে হবে। জুম্ম জনগণ সবাইকে চুক্তি বাস্তবায়নের আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।

শনিবার সকালে বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চল কমিটির উদ্যোগে এবং অ্যাকশন এইড বাংলাদেশ-এর সহযোগিতায় রাঙামাটির রাজবাড়ির সাবারাং রেস্টুরেন্টে ‘জাতীয় বাজেট ও সরকারি সেবাসমূহে আদিবাসীদের জন্য ন্যায্য বরাদ্দ চাই’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সন্তু লারমা এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, সরকার নিজেই চুক্তি স্বাক্ষর করে তার বিরোধিতা করছে। আওয়ামী লীগ, বিএনপি এবং স্বার্থান্বেষী মহল চুক্তির বিরুদ্ধে তৎপর। সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে চুক্তি বাস্তবায়নে বাধ্য করতে হবে। এজন্য আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই।

সন্তু লারমা সরকারের উদ্দেশে বলেন, শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নে অবিলম্বে রোড ম্যাপ ঘোষণা করুন অথবা জনসংহতি সমিতি বেধে দেয়া সময়ের মধ্যে রোডম্যাপ ভিত্তিক পার্বত্য চুক্তি পূর্ণবাস্তবায়নের ঘোষণা দেন। অন্যাথায় পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্ম জনগণ সরকারের কোনো কাজে সহযোগিতা করবে না এবং সরকারের বিরুদ্ধে অসহযোগ আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবে জুম্ম জনগণ। এ অসহযোগ আন্দোলনের ঘোষণা আমার নয়। এটি জনসংহতি সমিতির সিদ্ধান্ত।

যদি অসহযোগ আন্দোলনে যেতে হয় তাহলে তার ধরণ বা পদ্ধতি কী হবে তা উল্লেখ করে সন্তু লারমা বলেন, অসহযোগ আন্দোলন নানা ধরনের হতে পারে। আন্দোলন শান্তিপূর্ণও হতে পারে। হতে পারে ন্যায্য বা অন্যায্য। আর তার ভিন্নও হতে পারে। তবে সেটা হবে গণতান্ত্রিক এবং তীব্রতর। যা নির্ভর করছে বাস্তবতার ওপর। কাজেই সময় হলে বোঝা যাবে আন্দোলন কী ধরনের হবে এবং কীভাবে সফল করতে হবে। সেই অনুযায়ী আন্দোলনের আগে কর্মসূচি ঘোষণা করবে জনসংহতি সমিতি।

সন্তু লারমা অভিযোগ করে বলেন, বাংলাদেশ সরকারের জাতীয় বাজেট কখনও গণতান্ত্রিক ও গণমুখী হয় না। জাতীয় বাজেট সব সময় আমলা নির্ভর। এদেশের জাতীয় বাজেট আমলাতান্ত্রিক। এদেশের বাজেট আদিবাসী বান্ধব নয়। পার্বত্যাঞ্চলের উন্নয়নের নামে বাজেটে যে বরাদ্দ দেয়া হয় সেগুলোতে রয়েছে শুভঙ্করের ফাঁকি। প্রতি বছর ৭৫ হাজার মেট্রিক টন খাদ্যশস্য পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের উন্নয়নের নামে বরাদ্দ দেয়া হলেও ওই বরাদ্দের ২৮ হাজার মেট্রিক টন দেয়া হয় কেবল বহিরাগত বাঙালিদের পুনর্বাসন কর্মসূচিতে।

বিজ্ঞান্তর তালুকদার এর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মানিক লাল দেওয়ান, রাঙামাটি সদর উপজেলা চেয়ারম্যান অরুণ কান্তি চাকমা, জনসংহতি সমিতির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শক্তিপদ ত্রিপুরাসহ অন্যরা।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন