আদিবাসী স্বীকৃতি দিতে সমস্যা কোথায়?

মেহেদী হাসান পলাশ 

মেহেদী হাসান পলাশ

আজ ৯ আগস্ট বিশ্ব আদিবাসী দিবস। অন্যসব বছরের মতো এ বছরেও বাংলাদেশের বিভিন্ন নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী সাড়ম্বরে দিনটি উৎযাপনের আয়োজন করেছে। এ বছর জাতিসংঘ দিনটির প্রতিপাদ্য ঠিক করেছে, Post : 2015 Agenda: Ensuring indigenous peoples’ health and well-being”. বিশ্ব আদিবাসী দিবসকে সামনে রেখে আবার নতুন করে আলোচিত হচ্ছে বাংলাদেশে আদিবাসী বিতর্কটি।

বাংলাদেশে আদিবাসী কারা- এই বিতর্কটি খুব প্রাচীন নয়, বড়ো জোর দেড় দশকের। ইস্যুটি পুরনো না হলেও তা ইতোমধ্যে বাংলাদেশের ইতিহাস, অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্বকে নাড়া দিয়েছে। জাতীয় সংহতির প্রশ্নে তাই এ বিতর্কের আশু সমাধান জরুরি। ইতোপূর্বে দৈনিক ইনকিলাবে একই বিষয়ে বর্তমান লেখকের তিনটি উপ-সম্পাদকীয় প্রকাশিত হয়েছে। প্রবন্ধগুলো হচ্ছে, বাংলাদেশে আদিবাসী বিতর্ক, প্রকাশ, ২ আগস্ট ২০১৩; আদিবাসী বিষয়ে আন্তর্জাতিক আইনের ভুল ব্যাখ্যা ও অপপ্রয়োগ, প্রকাশ ৩০ আগস্ট ২০১৩ এবং বিশ্ব আদিবাসী দিবস ও বাংলাদেশের আদিবাসিন্দা, প্রকাশ, ১৫ আগস্ট ২০১৪। পঠনের পরম্পর্য রক্ষায় পাঠকগণ ইচ্ছে করলে উপরের হাইপার লিংক থেকে লেখাগুলো পড়ে নিতে পারবেন। বর্তমান লেখায় বাংলাদেশের সমতলে বসবাসকারী বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সলুক সন্ধান ও তাদের আদিবাসী স্বীকৃতি দিতে প্রতিবন্ধকতা কোথায় তা নিয়ে আলোকপাত করা হয়েছে।

আদিবাসী শব্দের ইংলিশ প্রতিশব্দ Indigenous people. . অনেকে আদিবাসী শব্দের প্রতিশব্দ হিসেবে Aborigine ব্যবহার করেন। কিন্তু Aborigine বলতে সার্বজনীনভাবে আদিবাসী বোঝায় না। Aborigine বলতে সুনির্দিষ্টভাবে অস্ট্রেলিয়ার আদিবাসীদের বোঝায়। একইভাবে Red Indian বলতে মার্কিন আদিবাসীদের বোঝায়, অস্ট্রেলীয় Aborigine বা আদিবাসীদের বোঝায় না। প্রখ্যাত নৃতত্ত্ববিদ মর্গানের সংজ্ঞানুযায়ী আদিবাসী হচ্ছে, ‘কোনো স্থানে স্মরণাতীতকাল থেকে বসবাসকারী আদিমতম জনগোষ্ঠী যাদের উৎপত্তি, ছড়িয়ে পড়া এবং বসতি স্থাপন সম্পর্কে বিশেষ কোনো ইতিহাস জানা নেই।’ মর্গান বলেন, The Aboriginals are the groups of human race who have been residing in a place from time immemorial … they are the true Sons of the soil…’ (Morgan, An Introduction to Anthropology, 1972).

গবেষকদের মতে, বাংলাদেশে মোট ৪৫টি (কারো কারো মতে ৭৫) ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী বা সম্প্রদায়ের অস্তিত্ব রয়েছে। সাধারণভাবে এরা উপজাতি ও তফশিলী সম্প্রদায় হিসেবে পরিচিত। তবে বিশেষ উদ্দেশ্যে কিছু মতলবাজগোষ্ঠী এ সম্প্রদায়গুলো আদিবাসী হিসেবে চিহ্নিত করে তাদের আদিবাসী ভাবধারায় উদ্বুদ্ধ করা শুরু করেছে।  জাতি ও উপজাতি সংজ্ঞা এসব জনগোষ্ঠীর অনেকগুলোর জন্যই প্রযোজ্য নয়। তাই তাদের তফশিলী সম্প্রদায় বলা হয়। ভারতবর্ষেও সহস্রাধিক সম্প্রদায় ‘তফশিলী’ হিসেবেই রাষ্ট্রকাঠামোতে স্বীকৃত রয়েছে। বাংলাদেশের সমতলে বসবাসকারী ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মধ্যে সাঁওতাল, গারো, হাজং, কোচ, মনিপুরী, খাসিয়া, রাখাইন প্রধান। এখানে এসব জনগোষ্ঠীর আদি নিবাস ও বাংলাদেশে আগমন নিয়ে পর্যালোচনা করা হবে।(পূর্বের ‘বাংলাদেশে আদিবাসী বিতর্ক’ শিরোনামের লেখায় পার্বত্য চট্টগ্রামে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর বাসিন্দাদের আদি নিবাস ও বাংলাদেশে আগমন নিয়ে পর্যালোচনা করা হয়েছে। ইচ্ছে করলে পাঠকগণ উপরের হাইপার লিংকে ক্লিক করে সেসব তথ্য দেখে নিতে পারেন।)

ইতিহাসের এই বিশ্লেষণে সকল তথ্যের জন্য মাত্র তিনটি পুস্তককে রেফরেন্স ও তথ্যাগার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। এর একটি হলো বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি কর্তৃক প্রণীত `বাংলাপিডিয়া’, একই প্রতিষ্ঠানের `বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক সমীক্ষামালা’ এবং বাংলাদেশ আদিবাসী অধিকার আন্দোলন কর্তৃক প্রণীত `বাংলাদেশের আদিবাসী : এথনোগ্রাফীয় গবেষণা’। এই পুস্তক তিনটি নির্বাচনের প্রধান কারণ বাংলাদেশে আদিবাসী অধিকার ও স্বীকৃতির বিষয়ে অধিক সোচ্চার ব্যক্তিগণ এই বই তিনটির রচনা ও সম্পাদনার সাথে তারা জড়িত।

সাঁওতাল

ভারতবর্ষের প্রাচীন জনগোষ্ঠীর মধ্যে সাঁওতাল অন্যতম হলেও বাংলাদেশের তাদের আগমন মাত্র ব্রিটিশ আমলে। অনেক ঐতিহাসিকের মতে, ব্রিটিশ সরকার রেল লাইন নির্মাণ কাজের জন্য ভারতের সাঁওতাল পরগণা থেকে সাঁওতালদের বাংলাদেশে নিয়ে আসে। এশিয়াটিক সোসাইটি কর্তৃক প্রণীত বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক সমীক্ষামালায় বাংলাদেশে সাঁওতালদের আগমন সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘দীর্ঘদিন ধরে সাঁওতালরা ভারতবর্ষের বিভিন্ন স্থানে ইতস্তত বিক্ষিপ্ত হয়ে বসবাস করছিলেন। ১৮৩৬ সালে ব্রিটিশ সরকার তাদেরকে নির্বিঘ্নে বসবাসের জন্য একটি স্থায়ী এলাকা নির্ধারণ করে দেয়। এ এলাকা সাঁওতাল পরগণা নামে খ্যাত হয়। সাঁওতাল বিদ্রোহ ব্যর্থ হওয়ার পর তাদের অনেকে সাঁওতাল পরগণায় থাকা নিরাপদ মনে না করে বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়েন। ড. পিয়ের বোসাইনেট উল্লেখ করেন যে, পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) সাঁওতালদের অধিকাংশই সাঁওতাল পরগণা থেকে এখানে আগমন করেছেন।

গারো

নৃতাত্ত্বিক ও ইতিহাসবিদদের মতে, গারোরা মঙ্গোলয়েড মহাজাতির টিবেটো-বার্মান দলের টিবেটো-চাইনিজ পরিবারের সদস্য। গারোদের ঐতিহ্যবাহী গানের মধ্যে তাদের এদেশে আগমনের সময়কাল সম্পর্কে বলা হয়েছে \’Do reng noktopgita, kilding jakbogita\’ অর্থাৎ ‘সে সময় চিলগুলো ছিল একটি ছোট্ট কুটিরের মতো, আর মাকড়সার জালের সুতা ছিল এক হাতের মতো বড়।’ গারোদের পূর্ব পুরুষদের ধারণা মতে, তাদের পূর্ব-পুরুষদের আদি বাসস্থান ছিল তিব্বত যা \’Torua\’ নামে পরিচিত ছিল। তিনটি পথ দিয়ে তিন দলে বিভক্ত হয়ে গারোদের পূর্ব-পুরুষরা এ উপমহাদেশে আসে। এর একটি দল দক্ষিণ দিকে সুরমা ও বরাক নদী হয়ে কাছাড় ও সিলেটে প্রবেশ করে। এই দলই পরবর্তীতে ‘বঙ্গে’ অর্থাৎ বর্তমান বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়ে।

হাজং

নৃবিজ্ঞানী মি. জে কে বোসের মতে, হাজং গরোদেরই একটি দল। বিভিন্ন লেখকের মতে, হাজংরা আসামের কামরূপ জেলার হাজো অঞ্চল থেকে ক্রমান্বয়ে এদেশে এসে বসতি স্থাপন করেছে। প্রবীণ হাজংদের মতে, তাদের আদিনিবাস বিহারের অদূরে অবন্তিনগর (মালব) নামক স্থানে এবং নিজেদেরকে তারা সূর্যবংশীয় ক্ষত্রিয় বলে দাবি করে। হাজংরা সুদূর চীনের হোয়াংহো নদীর অববাহিকা থেকে তিব্বত, তিব্বত থেকে অবন্তিনগর (মালব), অবন্তিনগর থেকে প্রাগজ্যোতিষপুর (গৌহাটি) হাজোনগর এবং হাজোনগর থেকে গাড়ো পাহাড়ের কড়ইবাড়ি, বারহাজারী থেকে বাংলাদেশে বৃহত্তর ময়মনসিংহের বিভিন্ন অঞ্চলে বিস্তৃতি লাভ করে।

কোচ

কোচেরা নিজেদের কুচবিহারের নৃপতি নরনারায়ণ এবং চিলারায়ের বংশধর হিসেবে পরিচয় দেয়। তাদের মতে, তাদের আদিনিবাস ছিল রাসান মৃকপ্রাক টারি (যে পাহাড়ে সূর্য প্রথম উদয় হয়) অথবা উদয়গিরি নামক স্থানে। সে আদিনিবাস ত্যাগ করে তারা প্রথমে কামরূপ অঞ্চলে বসতি গড়ে। কামরূপের পরে তারা হাজো অঞ্চলে বসতি স্থাপন করে। সেখান থেকে নানা পথ ঘুরে মেঘালয়ের পশ্চিম সমভূমি এলাকায় রাজ্য গড়ে তোলে যা কুচবিহার নামে পরিচিতি লাভ করে। এ কুচবিহার থেকেই বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কারণে কোচেরা নানাদিকে দলে দলে বিভক্ত হয়ে ছড়িয়ে পড়ে এবং বর্তমানের বাংলাদেশেও সেরকম কয়েকটি দল প্রবেশ করে, যাদের উত্তর পুরুষরাই বর্তমানে একাধিক গোষ্ঠীর নামকরণপূর্বক এদেশের বিভিন্ন এলাকায় বসবাস করছে।

রাখাইন

নৃতাত্ত্বিক বিচারে এরা মঙ্গোলীয় জনগোষ্ঠীর লোক। রাখাইনদের আদিনিবাস ছিল আরাকান (বর্তমান মায়ানমারের অন্তর্ভুক্ত)। রাখাইনরা তাদের নিজ দেশকে ‘রক্ষইঙ্গি’ এবং নিজেদের ‘রাখাইন’ নামে পরিচয় দিত। রাখাইনদের অংশবিশেষ পনেরো শতক থেকে কক্সবাজারের রামু ও সংলগ্ন এলাকায় বসতি শুরু করলেও আঠারো শতকে আরকানের রাজনৈতিক দুর্যোগ তাদের অনেককেই স্বদেশ ভূমি ত্যাগ করতে বাধ্য করে। ফলে তারা ক্রমান্বয়ে চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় এবং বরগুনা ও পটুয়াখালীতে এসে বসবাস করতে থাকেন।

মণিপুরী

মণিপুরীরা উৎপত্তির ঊষালগ্নে ভারতের বৃহত্তর আসাম রাজ্যের পাদদেশে অবস্থিত বরাক নদীর অববাহিকায় পাতকায় উপত্যকাই অবস্থিত পার্বত্য রাজ্য, নৈসর্গিক সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ একদা স্বাধীন মণিপুর রাজ্যের অধিবাসী। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মণিপুরে প্রবেশ করে মণিপুরীদের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে পড়ে। ইংরেজগণ মণিপুরীদের পরাস্ত করে মণিপুরের রাজা বীরবিক্রম টিকেন্দ্রজিৎ সিংহকে পরাস্ত ও বন্দি করে। পরবর্তীকালে ১৯৪৯ সালে মণিপুরকে ব্রিটিশ গভর্নমেন্টের করদরাজ্য বিবেচনায় ভারতের অঙ্গরাজ্যে পরিণত করে। প্রাণরক্ষার তাগিদে বহু দিশেহারা মণিপুরী [১৭৫৮, ১৭৬৫, ১৮৯১ খ্রি.] নানা দলে বিভক্ত হয়ে অন্ন-বস্ত্র-বাসস্থানের সন্ধানে মণিপুর রাজ্য ছেড়ে বিভিন্ন দিকে ছড়িয়ে পড়েন। তখন অনেক মণিপুরী লোক বাংলাদেশ ভূখণ্ডে এসে বসতি স্থাপন করে।

খাসিয়া

খাসিয়া বা খাসিমঙ্গোলীয় বংশোদ্ভূত উপজাতি। এদেশীয় খাসিয়ারা প্রায় ৫শ’ বছর পূর্বে আসাম থেকে এখানে এসে বসতি গড়েছে। তারা আসামে এসেছিল সম্ভবত তিব্বত থেকে। তাদের প্রধান আবাসস্থল উত্তরপূর্ব ভারত।

উপর্যুক্ত আলোচনায় দেখা যায়, ঐতিহাসিক বিচারে বাংলাদেশে বসবাসকারী সকল উপজাতীয় জনগোষ্ঠীই বহিরাগত। এটা আদিবাসী অধিকার আন্দোলনের নেতাকর্মী ও গবেষকগণ স্বীকার করে নিয়েছেন। অন্যদিকে বাংলাদেশে বিভিন্ন অঞ্চলে প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণায় যেসব প্রত্নবস্তু, অবস্থান ও প্রমাণ পাওয়া গেছে তা খৃষ্টপূর্ব ১৬০০-৫০০ সালের পুরাতন। সেকারণে উপজাতিদের আদিবাসী আখ্যাদানকারী গবেষকগণ এখন ইন্টারন্যাশনাল লেবার অর্গানাইজেশন (আইএলও) কনভেনশন-১৬৯’র আদিবাসী বিষয়ক সংজ্ঞার অপব্যাখ্যা করে বাংলাদেশের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও তফশিলী সম্প্রদায়কে আদিবাসী দাবি করছেন ও দাবি করতে উদ্বুদ্ধ করছেন। তবে এ কথা ভুললে চলবে না বাংলাদেশের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও তফশিলী সম্প্রদায়ের অধিকাংশই এই ‘আদিবাসী’ দাবির সাথে সম্পৃক্ত নয়। দেশি-বিদেশি চিহ্নিত একটি মহলের ইন্ধন ও পৃষ্ঠপোষকতায় আঞ্চলিক ও সম্প্রদায়গত কিছু সংগঠন এবং এনজিওর সাথে জড়িত ব্যক্তিরা এই দাবির সাথে জড়িত। পার্বত্য চট্টগ্রামের আঞ্চলিক সংগঠন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রাটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) আদিবাসী কনসেপ্ট সমর্থন করে না। তারা সংখ্যালঘু জাতি হিসেবে নিজেদের পরিচয় দিতে পছন্দ করে।

সাধারণ পাঠক থেকে শুরু করে বাংলাদেশের অনেক বিদগ্ধজনের মুখে শোনা যায়, উপজাতি বললে তারা যদি অপমানিত বোধ করে, হেয় বোধ করে এবং আদিবাসী বললে যদি খুশী হয় তাহলে তা বলতে দোষ কোথায়? ইতিহাসে যাই-ই থাক, শতকরা ৯৮ ভাগ একক বাঙালি জনগোষ্ঠীর দেশে আমরা আমাদের দেশের মুষ্টিমেয় উপজাতীয় জনগোষ্ঠীর প্রতি এইটুকু উদারতা কি দেখাতে পারি না? এই প্রশ্ন যেকোনো সহানুভূতিসম্পন্ন মানুষের হৃদয় বিগলিত করতে বাধ্য।

প্রশ্নটি অবশ্যই বিবেচনার দাবি রাখে। কিন্তু গোল বাঁধিয়েছে জাতিসংঘের আদিবাসী বিষয়ক ঘোষণাপত্র। ২০০৭ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের ৬১তম অধিবেশনে আদিবাসী বিষয়ক একটি ঘোষণাপত্র উপস্থাপন করা হয়। এ ঘোষণাপত্র উপস্থাপন করলে ১৪৩টি দেশ প্রস্তাবের পক্ষে, ৪টি দেশ বিপক্ষে, ১১টি দেশ ভোট দানে বিরত এবং ৩৪টি দেশ অনুপস্থিত থাকে। ভোট দানে বিরত থাকা দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। বিরুদ্ধে ভোট দেওয়া দেশগুলো হচ্ছে- অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, নিউজিল্যান্ড ও যুক্তরাষ্ট্র। এই ঘোষণাপত্রে সর্বমোট ৪৬টি অনুচ্ছেদ রয়েছে। এসব অনুচ্ছেদের বেশ কয়েকটি ধারা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব, অখণ্ডতা, অস্তিত্ব, কর্তৃত্ব, সংবিধান ও আত্মপরিচয়ের সাথে সরাসরি সাংঘর্ষিক।

একথা নিশ্চিত করে বলা যায়, যেসব ব্যক্তিবর্গ খুব সরলভাবে বা অসেচতন-উদারতায় উপজাতিদের আদিবাসী বলতে ইচ্ছুক/আগ্রহী তাদের অনেকেই হয়তো এই ঘোষণাপত্র পড়ে দেখেননি অথবা তার মর্মার্থ অনুধাবনে ব্যর্থ হয়েছেন (অবশ্য তারা  মতলববাজদের কথা আলাদা)। নিম্নে জাতিসংঘের আদিবাসী বিষয়ক ঘোষণাপত্রের কিছু অনুচ্ছেদ নিয়ে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো:

অনুচ্ছেদ-৩ : আদিবাসী জনগোষ্ঠীর আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার রয়েছে। সেই অধিকার বলে তারা অবাধে তাদের রাজনৈতিক মর্যাদা নির্ধারণ করে এবং অবাধে তাদের অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক কর্মপ্রয়াস অব্যাহত রাখে।

অনুচ্ছেদ-৪ : আদিবাসী জনগোষ্ঠীর আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার উপভোগের বেলায়, তাদের অভ্যন্তরীণ ও স্থানীয় বিষয়ে তথা স্বশাসিত কার্যাবলীর অর্থায়নের পন্থা ও উৎস নির্ধারণের ক্ষেত্রে তাদের স্বায়ত্তশাসন বা স্বশাসিত সরকারের অধিকার রয়েছে।

অনুচ্ছেদ-৫ : আদিবাসী জনগণ যদি পছন্দ করে তাহলে রাষ্ট্রীয় রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণের পূর্ণ অধিকার রেখে তাদের স্বতন্ত্র রাজনৈতিক, আইনগত, অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান অক্ষুণ্ন রাখা ও শক্তিশালীকরণের অধিকার লাভ করবে।অনুচ্ছেদ-৬ : আদিবাসী ব্যক্তির জাতীয়তা লাভের অধিকার রয়েছে।

অনুচ্ছেদ-১৯ : রাষ্ট্র  আদিবাসীদের প্রভাবিত করতে পারে এমন আইন প্রণয়ন কিংবা প্রশাসনিক সংক্রান্ত পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়নের পূর্বে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর স্বাধীন ও পূর্বাবহিত সম্মতি নেয়ার জন্য তাদের প্রতিনিধিত্বশীল প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট আদিবাসী জনগোষ্ঠীর সাথে আন্তরিকত্ব সদিচ্ছার সাথে আলোচনা ও সহযোগিতা করবে।

উপরের অনুচ্ছেদগুলো পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে, বাংলাদেশের উপজাতীয় জনগোষ্ঠী আদিবাসী হিসেবে স্বীকৃতি পেলে বাংলাদেশের ভেতর কমপক্ষে ৪৫টি স্বায়ত্তশাসিত বা স্বশাসিত অঞ্চল ও সরকার ব্যবস্থার সৃষ্টি হবে। এসব অঞ্চলে সরকার পরিচালনায় তারা নিজস্ব রাজনৈতিক কাঠামো, জাতীয়তা, অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা, আইনপ্রণয়ন ও আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার পাবে। এবং এসব অঞ্চলের ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকারের অধিকার ও কর্তৃত্ব ক্ষুণ্ন হবে। লক্ষণীয়, প্রকাশ্যে বলা না হলেও এই আত্মনিয়ন্ত্রণ ও স্বতন্ত্র জাতীয়তার মধ্যে লুকানো রয়েছে স্বাধীনতার বীজ।

এই ঘোষণাপত্রে আদিবাসীদের ভূমির উপর যে অধিকারের কথা বলা হয়েছে তা আরো ভয়ানক। যেমন :

অনুচ্ছেদ-১০ : আদিবাসী জনগোষ্ঠীকে তাদের ভূমি কিংবা ভূখণ্ড থেকে জবরদস্তিমূলকভাবে উৎখাত করা যাবে না। আদিবাসী জনগোষ্ঠীকে তাদের স্বাধীন ও পূর্ববহিত সম্মতি ছাড়া কোনভাবে অন্য এলাকায় স্থানান্তর করা যাবে না এবং ন্যায্য ও যথাযথ ক্ষতিপূরণের বিনিময়ে সমঝোতা সাপেক্ষে স্থানান্তর করা হলেও, যদি কোন সুযোগ থাকে, পুনরায় তাদেরকে সাবেক এলাকায় ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা থাকতে হবে।

অনুচ্ছেদ-২৬ : ১. আদিবাসী জনগোষ্ঠীর তাদের ঐতিহ্যগতভাবে মালিকানাধীন, দখলীয় কিংবা অন্যথায় ব্যবহার্য কিংবা অধিগ্রহণকৃত জমি, ভূখণ্ড ও সম্পদের অধিকার রয়েছে।

২৬: ৩. রাষ্ট্র এসব জমি, ভূখণ্ড ও সম্পদের আইনগত স্বীকৃতি ও রক্ষার বিধান প্রদান করবে। সংশ্লিষ্ট আদিবাসী জনগোষ্ঠীর প্রথা, ঐতিহ্য এবং ভূমি মালিকানা ব্যবস্থাপনা মেনে সেই স্বীকৃতি প্রদান করবে।

অনুচ্ছেদ-২৭ :  রাষ্ট্র সংশ্লিষ্ট আদিবাসী জনগোষ্ঠীর সাথে যৌথভাবে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর আইন, ঐতিহ্য, প্রথা ও ভূমি মালিকানাধীন ব্যবস্থাপনার যথাযথ স্বীকৃতি প্রদান করবে।

অনুচ্ছেদ-২৮ : ১. আদিবাসী জনগোষ্ঠীর ভূমি, ভূখণ্ড ও সম্পদ যা তাদের ঐতিহ্যগতভাবে মালিকানাধীন কিংবা অন্যথায় দখলকৃত বা ব্যবহারকৃত এবং তাদের স্বাধীন ও পূর্বাবহিত সম্মতি ছাড়া বেদখল, ছিনতাই, দখল বা ক্ষতিসাধন করা হয়েছে এসব যাতে ফিরে পায় কিংবা তা সম্ভব না হলে, একটা ন্যায্য, যথাযথ ও উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ পায় তার প্রতিকার পাওয়ার আদিবাসী জনগোষ্ঠীর অধিকার রয়েছে।

২৮: ২. সংশ্লিষ্ট জনগোষ্ঠী স্বেচ্ছায় অন্য কোন কিছু রাজি না হলে ক্ষতিপূরণ হিসেবে গুণগত, পরিমাণগত ও আইনি মর্যাদার দিক দিয়ে সমান ভূমি, ভূখণ্ড ও সম্পদ অথবা সমান আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিতে হবে বা অন্য কোন যথাযথ প্রতিকার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

অনুচ্ছেদ-৩০ : ১. আদিবাসী জনগোষ্ঠীর স্বেচ্ছায় সম্মতি জ্ঞাপন বা অনুরোধ ছাড়া ভূমি কিংবা ভূখ-ে সামরিক কার্যক্রম হাতে নেয়া যাবে না।

অনুচ্ছেদ-৩২ : ২. রাষ্ট্র আদিবাসী জনগোষ্ঠীর ভূমি, ভূখণ্ড ও সম্পদের উপর প্রভাব বিস্তার করে এমন কোন প্রকল্প অনুমোদনের পূর্বে, বিশেষ করে তাদের খনিজ, জল কিংবা অন্য কোন সম্পদের উন্নয়ন, ব্যবহার বা আহরণের পূর্বে স্বাধীন ও পূর্বাবহিত সম্মতি গ্রহণের জন্য তাদের নিজস্ব প্রতিনিধিত্বশীল প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট আদিবাসী জনগোষ্ঠীর সাথে আলোচনা ও সহযোগিতা করবে।

উপরোক্ত অনুচ্ছেদগুলো পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে, বাংলাদেশের উপজাতীয় জনগোষ্ঠী আদিবাসী স্বীকৃতি পেলে পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারা দেশে নিজস্ব আইনে নিজস্ব ভূমি ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে পারবে। পার্বত্য চট্টগ্রামের মুষ্টিমেয় চিহ্নিত উপজাতিরা দাবি করছে ঐতিহ্য ও প্রথাগত অধিকার বলে পার্বত্য চট্টগ্রামের সকল ভূমির মালিক তারা। একই অধিকার বলে সমতলের উপজাতীয় অধ্যুষিত এলাকার সকল ভূমির মালিকানা সেখানকার উপজাতীয়রা দাবি করবে। সেখানে যেসব ভূমি সরকারি ও ব্যক্তিগত মালিকানা (আদিবাসী নয়) রয়েছে তা ফেরত দিতে হবে বা তার উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। এমনকি উপজাতীয়রা রাজি না হলে সমতল থেকে সমপরিমাণ সমগুরুত্বের ভূমি ফেরত দিতে হবে। পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে যেহেতু ঐ গোষ্ঠী সকল সামরিক স্থাপনা সরিয়ে নেয়ার দাবি জানাচ্ছে, সেকারণে সেখান থেকে সকল সামরিক স্থাপনা সরিয়ে নিতে হবে। পার্বত্য চট্টগ্রাম ও অন্যান্য উপজাতি অধ্যুষিত এলাকায় যেসব বাঙালি বসতি স্থাপন করেছে তাদের ফিরিয়ে আনতে হবে। ইউএনডিপিসহ কিছু বৈদেশিক সংস্থা ইতোমেধ্যে প্রকাশ্যে এ দাবি তুলেছে।

ঘোষণাপত্রের ৩৬ অনুচ্ছেদটি আরো ভয়ানক।

অনুচ্ছেদ-৩৬ : ১. আদিবাসী জনগোষ্ঠীর, বিশেষত্ব যারা আন্তর্জাতিক সীমানা দ্বারা বিভক্ত হয়েছে তারা অন্য প্রান্তের নিজস্ব জনগোষ্ঠী তথা অন্যান্য জনগোষ্ঠীর সঙ্গে আধ্যাত্মিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সামাজিক সংক্রান্ত কার্যক্রমসহ যোগাযোগ, সম্পর্ক ও সহযোগিতা বজায় রাখার ও উন্নয়নের অধিকার রয়েছে।

আমরা জানি বাংলাদেশে বসবাসকারী সকল উপজাতি জনগোষ্ঠীর মূল আবাস ভারত ও মিয়ানমার। সেখানে এখনো তাদের মূল জনগোষ্ঠী রয়ে গেছে। এখন বাংলাদেশে তাদের খণ্ডিত অংশ যদি আদিবাসী হিসেবে স্বীকৃতি পায় তাহলে ভারতের সমগ্র সেভেন স্টিস্টার্স রাজ্য, পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, উড়িষ্যা এবং মিয়ানমারের বিপুল এলাকা আদিবাসী ল্যান্ড স্বীকৃতি পাওয়ার পথ উন্মুক্ত হবে। একই সাথে সীমান্তের উভয়পাড়ের অভিন্ন জনগোষ্ঠী যদি অভিন্ন রাজনৈতিক, সরকার কাঠামো কিংবা স্বাধীনতার দাবি তোলে তা আঞ্চলিক সমস্যায় রূপ নেবে। এ বিষয়টি বাংলাদেশ সরকার প্রতিবেশী ভারত সরকারের দৃষ্টিগোচর করতে পারে।  আদিবাসী জনগোষ্ঠী উল্লিখিত অধিকারসমূহ নিশ্চিত করতে জাতিসংঘ বিশেষভাবে ভূমিকা রাখতে পারবে যা ৪২ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে। পূর্ব তিমুর, দক্ষিণ সুদান স্বাধীন করণে জাতিসংঘের ভূমিকা বিশ্বের দেশপ্রেমিক জনগণকে আতঙ্কিত করেছে। অধুনা পশ্চিম পাপুয়া নিউগিনিতেও জাতিসংঘের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে।

যদিও ৪৬ অনুচ্ছেদে রাষ্ট্রের অখণ্ডতা রক্ষার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু আমাদের মনে রাখা প্রয়োজন আদিবাসীর দাবি এমন একটা জনগোষ্ঠী থেকে উচ্চারিত হচ্ছে যারা ৪২ বছর ধরে স্বাধীনতার জন্য লড়াই করছে। কৌশলগত কারণে তারা স্বায়ত্তশাসনের কথা যতোটা উচ্চকিত করে স্বাধীনতার কথা ততোটা নয়। ফলে দেশের অধিকাংশ মানুষই রাষ্ট্রবিরোধী এই ষড়যন্ত্র সম্পর্কে সম্যক ওয়াকিবহাল নয়। বাংলাদেশের রাষ্ট্র ব্যবস্থাও রহস্যময় আবরণে সযত্নে ঢেকে রেখেছে দেশবিরোধী এই দুষ্টুক্ষত। কিন্তু যারা সচেতন, বিশেষ করে যারা সামাজিক গণমাধ্যম ব্যবহার করেন তাদের প্রতি আহ্বান একবারের জন্য হলেও পার্বত্য চট্টগ্রামের বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসীদের পরিচালিত প্রোফাইল, গ্রুপ ও পেইজগুলো ভিজিট করে দেখুন কী ভয়ানক রাষ্ট্রীয় অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্ব বিরোধী প্রচারণা চালানো হচ্ছে সেখানে। স্বাধীন জুম্মল্যাণ্ড গঠনের জন্য নিজস্ব জাতীয় পতাকা, জাতীয় সঙ্গীত, মানচিত্র দিয়ে কিভাবে বাংলাদেশ বিরোধী প্রচারণা চালানো হচ্ছে তা সচেতনতার জন্য দেশবাসীর জানা উচিত।

পাঠকের জ্ঞাতার্থে সিএইচটি জুম্মল্যান্ড নামে তাদের পরিচালিত একটি পেইজের ঠিকানা এখানে দেয়া হলো :(https://www.facebook.com/pages/CHT-jummaland/327524104096965?fref=ts)। শুধু ফেসবুক বা সামাজিক গণমাধ্যম নয়, পাহাড়ী বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসীরা নিউজ পোর্টাল খুলেও পার্বত্য চট্টগ্রামকে বিচ্ছিন্ন করে স্বাধীন জুম্মল্যান্ড গঠনের প্রচার চালাচ্ছে। তাদের পরিচালিত অসংখ্য সাইটের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, chtnews.com. এই সাইটে করুণালঙ্কার ভান্তে নামে জেএসএসের এক শীর্ষ নেতার ধারাবাহিক সাক্ষাৎকার প্রচার হচ্ছে বেশ কয়েকদিন ধরে। বৌদ্ধ ভিক্ষুর বেশধারী এই ব্যক্তি নিজেকে স্বাধীন জুম্মল্যাণ্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পরিচয় দিয়ে বিশ্বব্যাপী স্বাধীন জুম্মল্যান্ড প্রতিষ্ঠায় তার কর্মতৎপরতার কথা বিস্তারিতভাবে বলেছেন। অডিও-ভিডিও’র এই স্বাক্ষাৎকারে ভান্তে আরো জানিয়েছেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম স্বাধীন করার মতো পর্যাপ্ত অস্ত্র তাদের হাতে রয়েছে। এখন তিনি শুধু ৫ লক্ষ গোলাবারুদ সংগ্রহের চেষ্টা করছেন। এই পরিমাণ গোলাবারুদ সংগ্রহ করতে পারলে তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে পরাজিত করে পার্বত্য চট্টগ্রামকে আলাদা করে স্বাধীন জুম্মল্যাণ্ড প্রতিষ্ঠা করতে পারবেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সামরিক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এই ভিক্ষু সম্প্রতি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের স্বাধীনতা অর্জনের উদাহরণ তুলে ধরে পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ী তরুণ প্রজন্মকে তার সাথে একাত্ম হতে অহ্বান জানিয়েছেন। এদিকে পার্বত্য চট্টগ্রামকে আলাদা খ্রিস্টান রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত আন্তর্জাতিক শক্তিকে তিনি পৃষ্ঠপোষক হিসেবে পাবেন বলেও জানিয়েছেন। কাজেই বাংলাদেশের উপজাতিদের আদিবাসী স্বীকৃতি কোনো ছেলের হাতের মোয়া নয়। এর সাথে জড়িত রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব, অখণ্ডতা, অস্তিত্ব, কর্তৃত্ব, ইতিহাস ও মর্যাদার প্রশ্ন।

Email:[email protected]

৯ আগস্ট ২০১৫ তারিখে দৈনিক ইনকিলাবে প্রকাশিত।

লেখকের পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক আরো কিছু লেখা

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

2 Replies to “আদিবাসী স্বীকৃতি দিতে সমস্যা কোথায়?”

  1. সমৃদ্ধ হলাম. এখন আদিবাসীদের উপর রাষ্ট্র R জাতিপুঞের কর্ম সিদ্ধান্ত – কি? সেটাই দেখার বিষয়.,

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন