আদিবাসীদের আলাদা স্বীকৃতির প্রয়োজন হয় না: রাশেদ খান মেনন

নিজস্ব প্রতিনিধি:

আমি বাঙালি এটা কেউ বলে দেবে, কেউ আলাদা করে স্বীকৃতি দেবে, এটা আমি কেন মানবো? আমি বাঙালি এটা আমার অধিকার। তেমনি আদিবাসীদেরও আলাদা স্বীকৃতির প্রয়োজন হয় না। তারা তাদের নিজস্ব সংস্কৃতির মাধ্যমেই পরিচিত।

বুধবার দুপুরে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আদিবাসী ফোরাম আয়োজিত ‘আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস-২০১৭’ এবং ‘আদিবাসী অধিকার বিষয়ক জাতিসংঘ ঘোষণাপত্রের এক দশক পালন’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, পাহাড়ে অশান্তির জন্য শান্তি চুক্তি করা হয়। কিন্তু এখনও শান্তি নিশ্চিত হয়নি। পাহাড়ে ভূমি সমস্যার সমাধানে দীর্ঘ প্রচেষ্টার পরে জাতীয় সংসদে অনেক লড়াই-সংগ্রাম করে ভূমি কমিশন করা হয়। ভূমি কমিশন এখনও কার্যকর হয়নি।

বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং এর সঞ্চালনায়, অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও বিজ্ঞান লেখক অধ্যাপক ড. জাফর ইকবাল।

বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় সন্তু লারমা বলেছেন, সরকার ভিন্ন জাতিসত্তার মানুষদের নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। এসব জাতির মানুষ যদি সমান অধিকার নিয়ে বেঁচে থাকতে চায়, তাহলে তাদের সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে।

সমাবেশে কলামিস্ট ও লেখক সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, আজ থেকে ১০বছর আগে এ দিনকে আদিবাসী দিবস হিসেবে জাতিসংঘ ঘোষণা করে। যখন জাতিসংঘ স্বীকৃতি দিয়েছিল তখন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, নিউজিল্যান্ডসহ অন্যান্য বেশ কয়েকটি দেশ এ দিবসের বিরোধিতা করেছিল। অথচ আজ তারাই এ দিবসটি উদযাপন করছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ রাষ্ট্রীয়ভাবে দিনটি উদযাপন করে না।’

সংসদ সদস্য ও আদিবাসীবিষয়ক সংসদীয় ককাসের আহ্বায়ক ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, একটি জাতিকে যখন ক্ষুদ্র বলা হয় তখন সে জাতি বৈশম্যের স্বীকার হয়। তিনি বলেন, জাতীয় ভাবে আদিবাসী দিবস পালন হতে হতে একদিন রাষ্ট্রীয় ভাবে পালন হবেই।

‘জাতীয় আদিবাসী পরিষদের’ সভাপতি শ্রী রবীন্দ্রনাথ সরেন বলেন, আমরাও তো এদেশের জনগণ কিন্তু স্বীকৃতি নেই। আমরা শুধু কৃষি কাজে নয়, মুক্তিযুদ্ধ, কৃষক আন্দোলন থেকে শুরু করে এদেশের উন্নয়নের সব কাজে আদিবাসীদের অবদান রয়েছে।

সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, নাট্য ব্যক্তিত্ব মামুনুর রশীদ, খুশী কবির, ব্যারিস্টার সারা হোসেন, চাকমা রাজা দেবাশীষ রায় প্রমুখ।

সমাবেশে ‘বাংলাদেশ আদিবাসী’ ফোরাম ১০ দফা দাবি তুলে ধরেছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য দাবিগুলো হলো- ২০০৭ সালে জাতিসংঘের স্বীকৃতি দেওয়া ঘোষণাপত্র অবিলম্বে বাস্তবায়ন, এসডিজি ২০৩০ বাস্তবায়নে ‘আদিবাসী’ জনগণের পূর্ণ অংশীদারিত্ব নিশ্চিত, আদিবাসীদের ঐহিত্যগত ও প্রথাগত ভূমি অধিকারের স্বীকৃতি দিতে হবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন