আঞ্চলিক ও জেলা পরিষদ সহযোগিতা করলে দ্রুত ভূমি কমিশন কার্যকর করতে পারব: শেখ হাসিনা

hhh

স্টাফ রিপোর্টার :

‘ভূমি কমিশনকে আরো একটু সহযোগিতা করা প্রয়োজন’ বলে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‌‌’আঞ্চলিক পরিষদ এবং জেলা পরিষদসহ সকলে সহযোগিতা করলে এ কমিশন কার্যকর করতে পারব। ‘ বুধবার বিকেলে জাতীয় সংসদে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য উষাতন তালুকদারের (রাঙ্গামাটি) সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন।

তিনি বলেন, `পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষের একটি নিজস্ব স্বতন্ত্রবোধ আছে। এই স্বতন্ত্র বোধের কথা চিন্তা করে পার্বত্য শান্তি চুক্তির যে ধারাগুলো এখনো বাস্তবায়িত হয় নাই সেগুলোও আমরা বাস্তবায়ন করব।’

পার্বত্য শান্তি চুক্তি করার বিভিন্ন প্রেক্ষাপট তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, `এ চুক্তি করার সময় আমরা কোন বিদেশী শক্তির কাউকে সম্পৃক্ত করি নাই। কারণ আমরা এই সমস্যাটা একটি রাজনৈতিক সমস্যা হিসেবে দেখেছি।’

একই সংসদ সদস্যের সম্পূরক প্রশ্নের আগে লিখিত প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, `আজ ১০ ফেব্রুয়ারি, পার্বত্য চট্টগ্রামের জন্য একটি ঐতিহাসিক দিন। ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হবার পর ১৯৯৮ সালের এই দিনে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির শর্তানুসারে শান্তিবাহিনীর সদস্যরা খাগড়াছড়িতে আওয়ামী লীগ সরকারের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করে। যার ফলে দীর্ঘ রক্তক্ষয়ী সংঘাতের অবসান ঘটে।’

‘পার্বত্য চট্টগ্রাম ছিল এক অশান্ত জনপদ’ উল্লেখ করে সংসদ নেতা বলেন, `১৯৭৫ থেকে ১৯৯৬ পর্যন্ত সরকারগুলো তাদের ভ্রান্তনীতির কারণে এবং আন্তরিকতার অভাবে কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারেনি।’

এ সময় প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের জনসংহতি সমিতির সঙ্গে করা শান্তিচুক্তির সব ধারা পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা হবে।

তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের অস্থায়ী ক্যাম্প থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নির্দিষ্ট গ্যারিসনসমূহে ফেরানোর পরিকল্পনা রয়েছে। শান্তিচুক্তির খণ্ড-ঘ, ধারা-১৭ (ক) এর আলোকে মোতায়েনরত সেনাবাহিনীর সকল অস্থায়ী ক্যাম্প প্রত্যাহারের মাধ্যমে নির্দিষ্ট ছয়টি গ্যারিসনে যথা-দীঘিনালা, খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি, বান্দরবান, রুমা ও আলীকদমে প্রত্যাবর্তনের বিধান রয়েছে। এ লক্ষ্যে ইতোমধ্যে গ্যারিসনসমূহের প্রয়োজনীয় অবকাঠামোগত উন্নয়ন চলমান রয়েছে। এর মধ্যে রুমা গ্যারিসনের ৯৯৭ একর ভূমি অধিগ্রহণের বিষয়টি এখনো প্রক্রিয়াধীন বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

সম্পূরক প্রশ্নে পার্বত্য চুক্তির ৮০ শতাংশ ইতিমধ্যে বাস্তবায়ন করায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবান জানিয়েছেন প্রশ্নকর্তা স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য উষাতন তালুকদার। তিনি বলেন আমি ব্যক্তিগতভাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি যে, ইতিমধ্যে তিনি পার্বত্য চুক্তির ৮০% বাস্তবায়ন করেছেন; এছাড়া বাকিগুলো কবে নাগাদ বাস্তবায়ন করা হবে এই লক্ষ্যে কোনো রোডম্যাপ দেওয়া যাবে কিনা ? এই প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, আমার প্রদত্ত উত্তরে আমি আপনার প্রশ্নের জবাব দিয়ে দিয়েছি, আপনি পড়ে নিলে বিস্তারিত পাবেন।

শামসুল হক চৌধুরীর আরেক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে এয়ারপোর্ট করতে হলে পাহাড় কেটে করতে হবে, সেটা পার্বত্য চট্টগ্রামের জন্য ভালো হবে না।

তিনি বলেন, ‘আমরা রাস্তা দিচ্ছি। কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে পার্বত্য চট্টগ্রাম বেশি দূরে নয়, প্রশস্ত রাস্তা আছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য রাস্তা দিয়ে চলাই সুন্দর হবে। এয়ারপোর্টের দরকার নেই।’

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন