Notice: Trying to get property 'post_excerpt' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 53

Notice: Trying to get property 'guid' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 55

আজ থেকে ৯ লাখ রোহিঙ্গাদের মাঝে কলেরা টিকা শুরু, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বাড়ছে এইডস রোগীর সংখ্যা

উখিয়া প্রতিনিধি:

মিয়ানমারের সেনাবাহিনী নিষ্ঠুর নির্যাতন ও রাখাইন প্রদেশে জাতিগত হত্যাযজ্ঞের শিকার হয়ে প্রাণের ভয়ে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া বাস্তচ্যুত রোহিঙ্গাদের মধ্যে ডায়রিয়া এবং কলেরা রোগ দেখা দিয়েছে। এছাড়াও এইচআইভি এইডস ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছে কক্সবাজারের স্বাস্থ্য বিভাগ। উখিয়ার কুতুপালং সহ ৭টি অস্থায়ী ক্যাম্পে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের মাঝে পরিপূর্ণভাবে খাবার পানি ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা গড়ে না ওঠা এবং এইডস নিয়ে অসচেতনতার কারণে এসব রোগ মহামারী রূপ নেয়ার কারণ বলে মনে করছেন সিভিল সার্জন।

এখন পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের মধ্যে ১৯ জন এইডস রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। তৎ মধ্যে মরিয়ম নামক এক রোহিঙ্গা মহিলা এইডস আক্রান্ত রোগী মারা গেছে। ইতি মধ্যে ১০ হাজারের বেশি ডায়রিয়া এবং কলেরা রোগীর চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

কক্সবাজার জেলা সিভিল সার্জন ডাক্তার আব্দুস ছালাম জানান, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও ইউনেসেফের যৌথ সহযোগিতায় মঙ্গলবার থেকে ৯ লাখ রোহিঙ্গাদের মাঝে কলেরা ভ্যাকসিন খাওয়ানো কর্মসূচি শুরু হচ্ছে। কলেরা রোগ নিমূলে ১ বছরের শিশু থেকে সকল বয়সী রোহিঙ্গাদের মাঝে ২ ফোটা করে এ ভ্যাকসিন দেওয়া হবে।

গত ২৫ শে আগস্ট থেকে বাংলাদেশমুখী যে রোহিঙ্গা ঢল শুরু হয়েছিলো, এখনো তা অব্যাহত রয়েছে। মিয়ানমার সীমান্ত পেরিয়ে সাড়ে পাঁচ লাখের বেশি রোহিঙ্গার অবস্থান এখন কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়া উপজেলায়। মানবিক কারণে বাংলাদেশ সরকার এসব রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়ার পাশাপাশি সব ধরনের সহযোগিতা দিচ্ছে।

কিন্তু রোহিঙ্গাদের মধ্যে এইচআইভি এইডস রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকায় শঙ্কিত কক্সবাজারের স্বাস্থ্য বিভাগ। গত কয়েক দিনে এখানে মোট ১৯ জন এইডস রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে মারা গেছে একজন।

কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ডা. মো. আবদুস সালাম বলেন, মিয়ানমার থেকে পালিয়ে রোহিঙ্গাদের মধ্যে রোববার পর্যন্ত ১৯ জনের শরীরের এইডস আক্রান্ত ভাইরাস পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে একজনের মুত্যু হলেও ১৮ জনের চিকিৎসা চলছে।

এ রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ার আশংকা প্রকাশ করে তিনি বলেন, বিভিন্ন এনজিও’র সমন্বয়ে রোহিঙ্গাদের রক্ত পরীক্ষার পর এর প্রকৃত সংখ্যা জানা যাবে। এর বাইরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এইডস রোগে আক্রান্ত ২ জন চিকিৎসাধিন রয়েছে।

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে, এইডস ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে মিয়ানমারের অবস্থান অনেক ওপরে। দেশটিতে দুই লাখ ৩০ হাজারের বেশি এইডস রোগী রয়েছে। এইডস আক্রান্তদের দ্রুত চিহ্নিত করা না গেলে বাংলাদেশে এই রোগ ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে শঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান বলেন, সেক্স, রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়া, মুখের লালা কারণে একে অপরের মধ্যে এইডস রোগটি ছড়িয়ে পড়বে। সেজন্য আমাদেরকে সজাগ থাকতে হবে। যারা আক্রান্ত তাদেরকে চিহ্নিত করে চিকিৎসা সেবা দিতে হবে।

এদিকে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরগুলোতে পরিপূর্ণভাবে পানীয় জল এবং স্যানিটেশন ব্যবস্থা গড়ে না ওঠায় বাড়ছে ডায়রিয়া ও কলেরা রোগীর সংখ্যা।

কক্সবাজার সিভিল সার্জন ডা. আবদুস সালাম বলেন, রোহিঙ্গাদের মলগুলো বৃষ্টির পানিতে ছড়িয়ে পড়ায় তারা ডায়রিয়া, কলেরাসহ নানা রকম পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।

উখিয়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাঈনুদ্দিন বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সাত হাজার টয়লেট নির্মাণ করা হয়েছে। যদি কেউ ডায়রিয়া আক্রান্ত হলে চিন্তার কোন কারণ নেই। কারণ আমাদের পর্যাপ্ত চিকিৎসা ক্যাম্প রয়েছে।

কক্সবাজার সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ডায়রিয়া, কলেরা এবং এইডস রোগীর বাইরে গত ৪০ দিনে এখানে ২৪ হাজার রোগীর জ্বর ও নিউমোনিয়া, ৬ হাজার চর্মরোগী, ১৪ জন ম্যালেরিয়া রোগীর চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন