Notice: Trying to get property 'post_excerpt' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 53

Notice: Trying to get property 'guid' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 55

অসচেতনতায় বাড়ছে জন্ডিসে মৃত্যু’র ঝুঁকি

download

নিজস্ব প্রতিবেদক:

মোহাম্মদ জসিম (২৬), পেশায় রিক্সা চালক। ৩ মাস আগে  তার শরীর খুব দূর্বল হয়ে পড়ে। খাবারে অনিহা। প্রশ্রাব, চোখ ও গায়ের রং হলুদ বর্ণের হয়ে যায়। লোকজনের মাধ্যমে জানতে পারে তার জন্ডিস হয়েছে। পরে পাড়ার ফার্মেসী থেকে গতানুগতিক কিছু ওষুধ খেয়েছে। এছাড়া অসুখকে পাত্তা না দিয়ে বরাবরেই রিক্সা চালান। কিছুদিন পরে খুবই দূর্বল হয়ে পড়েন আরও। তাকে অনেকে হাসপাতালে যেতে বলেন। কিন্তু তার পরিবার জন্ডিসের জন্য চিকিৎসাকে বিশ্বাস করেনা। তাদের আস্থা কবিরাজ আর হারবালে। তারা শহরের পানির ছড়া এলাকার এক হারবাল চিকিৎসকের কাছ থেকে বোতন ভর্তি কালো রং এর ওষুধ নেয়। আর কবিরাজের কাছ থেকে নেন তাবিজ। যা মাথায় পরানো হয়। কবিরাজের চিকিৎসা চালাতে থাকে। এদিকে অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় এর মধ্যে আরো বিভিন্ন জায়গা থেকে স্বপ্নে পাওয়া ওষুধও নেওয়া হয়েছে। খাওয়ানো হয়েছে কলা আর গুড় পড়া। এদিকে দিন দিন জসিমের অবস্থা হয়ে পড়ে খুবই মারাত্মক। পরে বাধ্য হয়ে এক সপ্তাহ আগে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

কক্সবাজার সদর হাসপাতালের চিকিৎসক জানান, বড় দেরি হয়ে গেছে। লিবার জন্ডিসের প্রভাবে তার শরীরের অবস্থা খুবই খারাপ। তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতারে প্রেরণ করা হয়। আর চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৩ দিন আগে ৬ নভেম্বর সকালে তিনি মারা যান। মোহাম্মদ জসিম শহরের নাজিরার টেক এলাকার মৃত সোলতান আহম্মদের ছেলে।

খবর নিয়ে জায়া যায়, শুধু জসিম নয়। এ ধরনের আরো অনেকে অজ্ঞতা ও অসচেতনতার কারনে জন্ডিসে আক্রান্ত হয়ে শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। এমনকি মারাও যাচ্ছে। তারা চিকিৎসকের কাছে না গিয়ে যাচ্ছে কবিরাজের কাছে। করছে ঝাঁড়-ফুঁক। অনেকে নির্ভর হচ্ছে স্বপ্নে পাওয়া ওষধের উপরও। খাচ্ছে কলা পড়া, গুড় পড়া আরো কত কি! এমনও দেখা যায়, জন্ডিস নিরাময়ে অনেকে তাবিজের উপর নির্ভরশীল হচ্ছে।

চিকিৎসাবিদরা বলছেন, ঝাঁড়-ফুঁক, কবিরাজ, হারবাল, চিকিৎসকের পরার্মশ ছাড়া ওষুধ সেবন, তাবিজ, স্বপ্নে পাওয়া ওষুধ এসব কখনও জন্ডিস সারাতে পারেনা। জন্ডিস নিরাময়ের জন্য প্রয়োজন যথাযথ চিকিৎসা ও বিশ্রাম। জন্ডিস পানি বাহিত রোগ, হতে পারে নানা কারনে।

জন্ডিস হলে প্রশ্রাবের রং, চোখ ও ত্বক হলদে হয়ে থাকে। তখন চিকিৎসকের শরাপন্ন হয়ে জন্ডিসের কারন, মাত্রা ও জটিলতা ইত্যাদি জেনে নেওয়া দরকার। জীবানু সংক্রমনের কারনে জন্ডিস হয়ে থাকলে রোগীর পাশাপাশি আপনজনদের সুরক্ষার ব্যাপারটি খেয়াল রাখতে হবে।

কক্সবাজার সদর হাসপাতালের চিকিৎসক নোবেল কুমার বড়ুয়া জানান, জন্ডিস রোগের সবচেয়ে বড় ওষুধ হল বিশ্রাম। অতিরিক্ত তেল-চর্বিসমৃদ্ধ খাবার না খাওয়া ভাল। এতে যকৃতের বিশ্রাম হবে। চিকিৎসকের পরার্মশ ছাড়া কোন ওষুধ না খাওয়া ভাল। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। এ সময় রক্তদান করা উচিত নয়। জন্ডিস আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত নেইল কাটার, ব্লেড, রেজার বা শেভিং কিট অন্য কেউ ব্যবহার করবে না। জন্ডিস আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরের কোন অংশ কেটে গেলে তা কোন অবস্থায় খোলা অবস্থায় রাখা যাবেনা। পরিষ্কার করে ও ব্যান্ডেজ দিয়ে রাখতে হবে। জন্ডিস আক্রান্তের স্বামী-স্ত্রীর হেপাটাইটিস-বি বা হেপাটাইটিস-সি ভাইরাস আক্রান্ত হলে সাবধান থাকতে হবে বৈবাহিক জীবনেও। এছাড়া মাদক সেবন থেকে নিজেকে দুরে রাখতে হবে বলেও জানালেন তিনি।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন