অর্থের অভাবে চিকিৎসা বন্ধ নির্বাচনী সংঘর্ষে পুলিশি হামলার শিকার নিরীহ রণধীরের

রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি:

যদি একটু হাঁটা চলা করে দোকান যাইতে পারতাম, ২টাকা আয় হলেও আমার পরিবারের জন্য সাহায্য করতে পারতাম। কিন্তু  এখন আমার যে অবস্থা তাতে আমার কোনো আয় না থাকায় পরিবারের খরচ এবং সন্তানদের পড়ালেখার খরচ চালাতেও পারছি না।

শনিবার(১৯ জানুয়ারি) সকালে রাঙ্গামাটি শহরের তবলছড়িস্থ আত্মীয় বাড়িতে রণধীর দে কান্নাস্বরে প্রতিবেদককে এসব কথা বলেন।

জাতীয় নির্বাচনে পুলিশের মারে আহত নিরীহ রণধীর বলেন, আত্মীয় স্বজনরা আমাকে অনেক সাহায্য করছে। এখনো আমার ভাইরা, ভাই কংকন দে’র বাড়িতে বসবাস করছি। তিনি যতটুকু সম্ভব ততটুকু আমার পরিবার ও আমার ঔষধপত্রে খরচ বহন করছেন।

রণধীর দে পেশায় একজন ব্যবসায়ী। তাঁর রাঙ্গামাটি শহরের রিজার্ভ বাজারস্থ শুঁটকিপট্টি এলাকায় একটি দোকানে ইলেক্ট্রনিক কাজ করে। দুই মেয়েসহ পরিবারে চার সদস্য। তারা রিজার্ভ বাজারস্থ গীতাশ্রম এলাকায় প্রকাশ তালুকদাদের বাসায় ভাড়া থাকে।

রণধীর দে  জানান, এই পর্যন্ত আমার চিকিৎসার জন্য প্রায় ১ লাখ টাকা খরচ করেছে  পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনরা। এখনো খরচ বহন করছে তারা। তবে উন্নত চিকিৎসার জন্য অনেক টাকার প্রয়োজন। তিনি আরও বলেন, আমাকে চট্টগ্রামের পিপলস্ হাসপাতালের ডাক্তার চন্দন দাশ ২১ দিন পর চিকিৎসার জন্য যেতে বলছেন কিন্তু টাকার অভাবে সেখানে যাওয়া সম্ভব হয়নি।

কোনো দল থেকে আর্থিক সহযোগিতা পেয়েছেন কি না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন,  সেদিন দীপংকর তালুকদারে পক্ষ থেকে ঔষধ খরচের জন্য ৫ হাজার টাকা দেয়া হয়। পরে আর কেউ খোঁজ নেননি ।

গত ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন চলাকালীন সময়ে রাঙ্গামাটি শহরের রিজার্ভ বাজার এলাকায় দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সে সময় পুলিশ এ সংঘর্ষে উভয়কে তাড়াতে গিয়ে লাঠিপেঠা করলে সবাই দৌড়ে পালিয়ে যায়। এসময় নিরীহ ব্যবসায়ী রণধীর ভোট দিয়ে বাসায় ফেরার সময় পুলিশ হাতের নাগালে পেয়ে তাকে বেদম মারধর করলে তাঁর ডান পায়ের হাঁটুতে প্রচণ্ড আঘাত হয়। পরে পুলিশ নিজেই তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায় বলে রণধীর দে জানান।

এসময় হাসপাতালের চিকিৎসক জানান, তাঁর হাটুতে ফ্যাকচার হয়েছে। পরে তাকে চট্টগ্রামের পিপলস্ হাসপাতালের ডাক্তার চন্দন দাশ এর অধিনে চিকিৎসা করাতে হচ্ছে। বর্তমানে অর্থ সংকটে পড়ে চিকিৎসা ব্যহত হচ্ছে। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, দলীয় সমর্থকরা সেদিন মারামারি করেছে অথচ পুলিশ পিটিয়েছে আমাকেই।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: রাঙ্গামাটি, সংঘর্ষ
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন